256436

নোয়াখালীবাসীর আতিথেয়তায় মুগ্ধ অভিভাবক-শিক্ষার্থীরা

নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে স্নাতকের (সম্মান) দুইদিন ব্যাপী ভর্তি পরীক্ষা শুরু হয়েছে শুক্রবার (১ নভেম্বর)।

২০১৯-২০২০ স্নাতক প্রথম বর্ষে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা সকাল সাড়ে ১০টা থেকে শুরু হয়। নোবিপ্রবি, মাইজদী শহর ও বেগমগঞ্জের চৌমুহনীসহ মোট ৩০টি কেন্দ্রে ও ৩০টি বিষয়ে এ ভর্তি পরীক্ষা শুরু হয়। পরীক্ষায় এবার ৩০টি বিষয়ের ১ হাজার ২৮৫টি আসনের বিপরীতে ৬৮ হাজার ৬৬০ শিক্ষার্থী এবার ভর্তি পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করছে।

প্রতি আসনের বিপরীতে ৫৩ জন করে অংশগ্রহণ করছে। শিক্ষার্থীসহ সব মিলে প্রায় দেড়লাখ লোকের সুবিধার্থে জেলার বিভিন্ন স্থানে খোলা হয়েছে তথ্য সহায়তা কেন্দ্র ও প্রাথমিক চিকিৎসা ক্যাম্প। এসব কেন্দ্রে সার্বক্ষণিক স্বেচ্ছাসেবক দল নিয়োজিত রয়েছে। একই সঙ্গে যানজট, যাতায়াত ও নিরাপত্তা বিষয়ে ও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব সহযোগিতাসহ মনিটরিং সেল গঠন করা হয়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, চৌমুহনীর চৌরাস্তা থেকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস পর্যন্ত চিরচেনা নোয়াখালী ভিন্ন এক রূপ ধারণ করেছে। এ যেন অতিথি বরণ করার সমস্ত আয়োজন। কোনো ভিআইপি আসলে রাস্তা-ঘাটের যে পরিস্থিতি দেখা যায় সে রকমই একটি পরিবেশ। পুলিশ থেকে শুরু করে বিভিন্ন যানবাহনের চালকও সজাগ।

রাস্তার দুই পাশে বেশ কয়েকটি তথ্য বুথ। সেখানে স্বেচ্ছাসেবক যুবকরা রয়েছেন। বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন স্কয়ার একেবারে যানজটমুক্ত। গাড়িগুলো দূরে দাঁড়িয় যাত্রী ওঠা-নামা করছে। একজন লাইনম্যান প্রতিটি সিএনজি অটোরিকশার সামনে এসে বলছেন কোনো বাড়তি ভাড়া নেয়া যাবে না।

মাইজদী নতুন বাস স্ট্যান্ড থেকে রাস্তার দুই পাশে বেশ কয়েকটি বাস দেখা গেল। বাসগুলোর সামনে স্থানীয় এমপি একরামুল করিম চৌধুরী ছবি সংম্বলিত পোস্টার লাগানো। তিনি ব্যক্তিগত তহবিল থেকে এ ভর্তি পরীক্ষায় যাতে শিক্ষার্থীরা ফ্রিতে এবং নির্বিঘ্নে কেন্দ্রে যেতে পারেন তার জন্য ৬০টি বাস দিয়েছেন। বাসগুলো থেকে কন্ট্রাকটর আওয়াজ দিচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের যাওয়ার জন্য যারা যারা যেতে চান উঠে পড়ুন। আজ ভাড়া লাগবে না। তথ্য বুথ থেকেও কিছুক্ষণ পরপর মাইকিং করা হচ্ছে।

মানবিক নোয়াখালী ও আতিথেয়তায় নোয়াখালীর এ অন্যান্য দৃষ্টান্ত দেখে দেশের দূর-দুরান্ত থেকে আসা অভিভাবকরা খুব খুশি। তারা চান আগামীতে এ রকম আয়োজন করা হোক, পাশাপাশি এটি অন্য জেলার জন্য অনুকরণীয় হয়ে থাকবে।

এদিকে পরীক্ষা দিতে আসা শিক্ষার্থীরাও তাদের জন্য স্থানীয় ভাবে খাওয়া থেকে শুরু করে থাকা ও পরীক্ষার হল পর্যন্ত যাওয়ার আসার জন্য ফ্রিতে যাতায়ত ব্যবস্থা করে দেয়ার তারাও খুশি। যেটি এর আগে নোয়াখালী ছাড়া আর কেউ করতে পারেনি। তারাও ধন্যবাদ দিতে অপারতা প্রকাশ করেনি নোয়াখালী তথা আয়োজনকারী প্রশাসন, স্থানীয় সংসদ সদস্য ও জনপ্রতিনিধিদের।

আর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. দিদারুর আলম জানান, এটি এ অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করলো নোয়াখালীবাসী। তিনি জানান, পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে হচ্ছে। নিরপেক্ষ ও সুন্দরভাবে তারা পরীক্ষা শেষ করবেন। অভিভাবক ও পরীক্ষার্থীদের উদ্বিগ্ন হওয়ার কোনো কারণ নেই।

পাঠকের মতামত

Comments are closed.