256635

ক্ষোভ থেকেই নিজের ছেলেকে হ’ত্যা করেন মা

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরে ডোবা থেকে উদ্ধার হওয়ার শিশু রাফির হ’ত্যার রহস্য উন্মোচন হয়েছে। নানা কারণে ‍সৃষ্ট ক্ষোভ থেকেই নিজের ছেলেকে হ’ত্যা করেন মা। শুক্রবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তারানুম রাহাতের আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিতে এ কথা জানান অভিযুক্ত মা সেনোয়ারা।

আদালতের স্বীকারোক্তির বরাত দিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার এসপি মুহাম্মদ আনিসুর রহমান জানান, সংসারে স্বচ্ছলতা ফেরাতে সৌদি আরবে পাড়ি জমান সেনোয়ারার স্বামী ফারুক মিয়া। বিদেশ যাওয়ার পর সেনোয়ারা মো. রাফির জন্ম দেন। জন্মের পর থেকে রাফি বিরল রোগে আক্রান্ত ছিল। এরইমধ্যে আড়াই বছরের অসুস্থ রাফিকে নিয়ে মা সেনোয়ারা প্রায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য যাওয়া-আসা করতেন। একদিকে দেনা, অন্যদিকে সন্তানের চিকিৎসা ব্যয় চালাতে অনেকটাই দিশেহারা হয়ে পড়েন তিনি। এভাবেই চলছিল দিন। কিন্তু ২৯ অক্টোবর রাতে দুই সন্তানকে নিয়ে স্বামীর বাড়িতে ঘুমিয়ে পড়েন সেনোয়ারা। এরই মধ্যে অসুস্থ রাফি ওইদিন রাতে দুই দফায় প্রস্রাব করতে ঘুম থেকে উঠে। পরে ভোরে প্রস্রাব করানোর পর রাফির নাক-মুখে চেপে শ্বাসরোধ করে হ’ত্যা করেন ক্ষিপ্ত মা। এরপর পাশের কচুরিপানার ডোবায় ফেলে দেন। পরের দিন সকাল ১০ দিকে শিশুটির মরদেহ ডোবা থেকে উদ্ধার করে পুলিশ।

হ’ত্যার রহস্য উন্মোচন সম্পর্কে তিনি জানান, চাঞ্চল্যকর রাফির ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ মা সেনোয়ারার কথাবার্তায় সন্দেহ খুঁজে পায়। এরপর সেনোয়ারাকে আটক করে পুলিশ। পরে ৩০ অক্টোবর শিশুটির দাদা আশ্রাফ জালালী বাদী হয়ে সেনোয়ারাকে আসামি করে বাঞ্ছারামপুর থানায় একটি হ’ত্যা মামলা দায়ের করেন। এরপর ওই মামলায় সানোয়ারাকে গ্রেফতার দেখায় পুলিশ। তারপর পুলিশের কাছে নিজ ছেলেকে হ’ত্যার কথা স্বীকার করে মা।

পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে সেনোয়ারা জানায়, রাফি কোথাও সামান্য আঘাত পেলেই রক্ত জমাট বেধে কাল দাগ পড়ে যেত। কখনো কেটে গেলে তার ক্ষতস্থান থেকে রক্তপড়া বন্ধ হতো না। রাফির চিকিৎসা করতে গিয়ে কয়েক লাখ টাকা ব্যয় হয়ে যায়। স্বামী বিদেশ যাওয়ার তিন বছর পার হলেও চিকিৎসা ব্যয় আর স্বামীর বিদেশের দেনা মেটাতে না পেরে হ’ত্যাকাণ্ডটি ঘটায় বলে দাবি সানোয়ারার।

জেলার বাঞ্ছারামপুরের ভেলানগর গ্রামের আশ্রাফ জালালীর ছেলে মো. ফারুক মিয়ার সঙ্গে একই উপজেলা রূপসদী মধ্যপাড়ার সাগর মিয়ার কন্যা সেনোয়ারা বেগমের বিয়ে হয়। তাদের ঘরে মো. ফাহিম জন্মগ্রহণ করে। পরে মো. রাফির জন্ম হয়।

পাঠকের মতামত

Comments are closed.