256803

সন্তান প্রতিবন্ধী হওয়ায় অস্ট্রলিয়া থেকে বহিষ্কার হচ্ছে বাংলাদেশি পরিবার

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ৫ বছর বয়সী এক শিশুকে পরিবারসহ ফেরত পাঠাচ্ছে অস্ট্রেলিয়া। দেশটিতে জন্মগ্রহণ করা শিশুটি কিছুটা প্রতিবন্ধী হওয়ায় পরিবারসহ তার ভিসার আবেদন ফিরিয়ে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। দ্য গার্ডিয়ান জানায়, আদিয়ান নামে শিশুটি অস্ট্রেলিয়ার স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনায় বোঝা হয়ে দাঁড়াতে পারে বলে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটি।

জানা যায়, ২০১১ সালে স্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে অস্ট্রেলিয়াতে যান আদিয়ানের বাবা ড. মেহেদি হাসান ভূঁইয়া। পরের বছরেই বাংলাদেশে এসে বিয়ে করে তিনি অস্ট্রেলিয়ায় ফিরে যান। ২০১৩ সালে স্ত্রী রেবেকা সুলতানাকেও তিনি দেশটিতে নিয়ে যান। সেখানে গিলং হাসপাতালে আদিয়ানের জন্ম হয়।

আদিয়ানের জন্মের কয়েক মাস পরেই ভূঁইয়া পরিবার দেখেন, সে সহজে মাথা তুলতে পারছে না। সম্ভবত জন্মের কিছু সময় আগে বা পরে স্ট্রোকের কারণে সে হালকা সেরিব্রাল প্যালসিতে আক্রান্ত হয়।

বাংলাদেশি ডিগ্রিসহ দক্ষিণ কোরিয়া থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নেন মেহেদি হাসান ভূঁইয়া। এরপর ২০১৬ সালে অস্ট্রেলিয়ার ডিকিন ইউনিভার্সিটি থেকে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পিএইচডি অর্জন করেন। তিনি ভিক্টোরিয়া অঙ্গরাজ্য সরকার কর্তৃক দক্ষ অভিবাসী হিসেবে স্থায়ী ভিসা পান। যার মাধ্যমে পরিবারসহ তিনি অস্ট্রেলিয়া আজীবন থাকার নিশ্চয়তা পান।

কিন্তু আদিয়ানের শারীরিক অক্ষমতার কারণে স্বাস্থ্যসেবা প্রক্রিয়ায় পুরো পরিবার দেশটিতে বসবাসের যোগ্যতা হারায়। অস্ট্রেলিয়ার কঠোর অভিবাসী নীতির ‘ওয়ান ফেলস অল ফেল’ কারণে একজনের কারণে পরিবার সব সদস্যকে দেশটি থেকে বহিষ্কার করা হচ্ছে। এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ভূঁইয়া পরিবার আপিল করলে সেটিও খারিজ করে দেয় আপিল ট্রাইব্যুনাল।

আদিয়ানের বাবা জানান, ফিজিক্যাল থেরাপির মাধ্যমে সে দিন দিন উন্নতি করছে। সে এখন অনেক ভালো আছে। পড়াশোনাতেও কোনো ধরনের সমস্যা হচ্ছে। সে নিয়মিত স্কুলে যাচ্ছে, সবকিছু শিখছে, বাসায় শিশুতোষ ভিডিও দেখছে।

এদিকে অস্ট্রেলিয়ার গার্ডিয়ান প্রতিনিধির অনুসন্ধানে জানা যায়, আদিয়ান বেশ সরব। সে ফুটবল খেলতে ভালোবাসে এবং তার শারীরিক অক্ষমতাকে ভালোভাবে মোকাবিলা করছে। কিন্তু আপিল ট্রাইব্যুনাল বলছে, অস্ট্রেলিয়ায় পরিবারটি অবদান রাখলেও অভিবাসী নীতির কারণে এমন সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে তাদের।

পাঠকের মতামত

Comments are closed.