256799

হেরে গিয়ে যা বললেন ভারতীয় অধিনায়ক রোহিত শর্মা

নিজ দেশের মাটিতে বাংলদেশের কাছে হেরে যাবেন তা বোধহয় কখনোই ভাবেন নি ভারতীয় অধিনায়ক রোহিত শর্মা। ভাগ্যের পরিহাসে তাকে ম্যাচ শেষে জানাতে হলো নিজের প্রতিক্রিয়া। তিনি বলেন, টার্গেটটা ডিফেন্ডডেবল ছিল কিন্তু মাঠে আমাদের অনেক ভুল হয়েছে। আমরা পরিকল্পনা ঠিক ভাবে কাজে লাগাতে পারি নি।

এদিকে ভারতের মাটিতে ভারতকেই রীতিমতো গুঁড়িয়ে দিল বাংলাদেশ। এর আগে বেঙ্গালুরুতে ২ রানে হারা সেই টি-টোয়েন্টির দুঃসহ স্মৃতিতে প্রলেপ পড়ল আজ। সৌম্য ও মুশফিকের ব্যাটে চড়ে এবং মাহমুদুল্লাহর ব্যাটের শেষ ছোঁয়ায় ১৪৮ রান পেরিয়ে জয়ের বন্দরে নোঙর ফেলে বাংলাদেশ।

১৬ ওভার শেষে বাংলাদেশের রান লাগত ২৪ বলে ৪৪। ম্যাচের ভাগ্য তখন দুলছে, যেকোন কিছুই হতে পারে। উইকেটে আছেন দুই সেট ব্যাটসম্যান সৌম্য ও মুশফিক। ১৭ তম ওভারের প্রথম বলেই ছক্কা মেরে আশার পালে হাওয়া লাগান মুশফিক, তবে একই ওভারের শেষ বলে সৌম্য ব্যক্তিগত ৩৯ রানে বিদায় নিলে লক্ষ্য দাঁড়ায় ১৮ বলে ৩৫। তবে মুশফিক ঠান্ডা মাথায় নিজের কাজ চালিয়ে যান, ১৮তম ওভারে আসে ১৩। লক্ষ্য দাঁড়ায় ১২ বলে ২২। সেই বেঙ্গালুরুর ম্যাচেও উইকেটে ছিলেন মাহমুদুল্লাহ ও মুশফিক। সেবার পারেন নি, এবার পারবেন? ১৯তম ওভারে প্রথম দুই বলে সিঙ্গেল, তৃতীয় বলে বাউন্ডারি মারলেন মুশফিক। চতুর্থ বলে স্কুপ করে আরেকটি চার। আর ৮ বলে লাগে ১২, মুশফিক এই চার দিয়ে তুলে নিলেন ফিফটি। পরের বলে আবার চার, লক্ষ্য ৭ বলে ৮ রান! দর্শকদের বুক ধুকধুক করছে। সব সংশয় মুছে শেষ বলে আরো একটি বাউন্ডারি মেরে মুশফিক সমীকরণ নামিয়ে আনলেন ৬ বলে ৪ রানে।

শুরু হল শেষ ওভার। করতে এলেন দীপক চাহার। প্রথম বলে মাহমুদুল্লাহর সিঙ্গেল, দ্বিতীয় বলে মুশফিকের ডাবল! আর ৪ বলে ২ রান! চাপের মুখে দীপক তৃতীয় বলে ওয়াইড দিলেন, স্কোর লেভেল হয়ে গেল। পরের বলে ছক্কা মেরে জয় নিশ্চিত করেন মাহমুদুল্লাহ। বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ ৬০ রান করেন মুশফিক। ভারতের পক্ষে একটি করে উইকেট নেন চাহার ও চাহাল।

ইনিংসের শুরুতে রান তাড়া করতে নেমে শুরুতেই ওপেনার লিটন দাশকে প্রথম ওভারেই হারায় বাংলাদেশ। এরপর রানের গতি ধীর হয়ে পড়লেও সৌম্য ও অভিষিক্ত নাঈম ইনিংস মেরামত করেন। তবে ৮ম ওভারে দলীয় ৫৪ রানের মাথায় নাঈম ২৭ রান করে বিদায় নিলে লম্বা জুটি গড়েন সৌম্য ও মুশফিক। এর আগে, বাংলাদেশের বোলারদের সামনে ধুঁকছিল ভারত। ডুবতে থাকা জাহাজকে ৬ষ্ঠ উইকেট জুটিতে সম্মানজনক স্কোরে ভারতীয় দলকে পৌঁছে দেয়ার চেষ্টা করছিলেন পান্থ ও ক্রুনাল পান্ডিয়া। তবে সেই চেষ্টা সফল হয় নি। ২০ ওভার শেষে ১৪৮ রানে আটকে পড়ে ভারত। আল-আমিনের শেষ ওভারে এলোপাথাড়ি ব্যাট চালিয়ে ওয়াশিংটন সুন্দর মাত্র ৫ বলে করেন ১৪ রান। বাংলাদেশের পক্ষে শফিউল ও আমিনুল দুইটি করে উইকেট নেন। ভারতের পক্ষে সর্বোচ্চ ৪১ রান করেন শিখর ধাওয়ান।

শফিউল ও আল-আমিনের ভালো শুরুর পর দুই উইকেট নিয়ে বোলিংয়ে চাপ ধরে রাখেন লেগস্পিনার আমিনুল। এদের যোগ্য সংগত করেন সৌম্য, আফিফ ও মোসাদ্দেক। ১৪ ওভার শেষে ভারত আটকে ছিল তিন উইকেটে ৮৫ রানে। ১৫তম ওভারে আক্রমণে আসেন স্বয়ং অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ এবং তিনি রান আউটের শিকার বানান ক্রমেই বিপজ্জনক হয়ে ওঠা শিখত ধাওয়ানকে। পরের ওভারে আফিফ তুলে নেন অভিষিক্ত শিবম দুবে’কে, চাপ বাড়ে ভারতের। এর আগে, তিন ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচে টসে জিতে প্রথম ওভার করতে এসেছিলেন শফিউল ইসলাম। প্রথম বলেই ফাইন লেগ দিয়ে বল সীমানা ছাড়া করেন রোহিত শর্মা। শফিউলের প্রথম ওভার থেকে বের হয় ১০ রান। কিন্তু শেষ বলে এলবিডব্লিউ হওয়ায় রিভিউ নেন রোহিত, থার্ড আম্পায়ার ফিল্ড আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত বহাল রাখেন।

পাঠকের মতামত

Comments are closed.