257709

আজব এক জাতি! মুখে নেই ভাষা, শিসই ভরসা

কথায় বলে, পথিকই পথের সৃষ্টি করে। প্রয়োজনের তাগিদেই এসেছে এই পৃথিবীর সমস্ত উদ্ভাবন। মনে করুন আপনি একটি বিশাল দ্বীপে রয়েছেন। সেখানে নেই কোনো যানবাহন, নেই কোনো মোবাইল নেটওয়ার্ক বা ইন্টারনেট। তাহলে দূরের যোগাযোগ আপনি কীভাবে করবেন? স্পেনের ক্যানারি দ্বীপপুঞ্জের লা গোমেরোতে স্থানীয় আদিবাসীরা তাই অতি প্রাচীন আমলেই তৈরী করে নিয়েছে এক বিচিত্র ভাষা। এই ভাষায় যোগাযোগ করতে হয় শিস দিয়ে! হ্যাঁ, শিস দিয়েই যোগাযোগ করতে হয়। প্রশ্ন আসতে পারে শিসের বাড়তি সুবিধা কী?

শিস তৈরী হয় বাতাসের কম্পন থেকে। আপনি যদি সঠিক কম্পাঙ্কে পৌঁছাতে পারেন তাহলে শিসের আওয়াজ তিন কিলোমিটার দূর থেকেও শোনা সম্ভব। বিশাল দ্বীপে গলা ফাটিয়ে চিৎকার করার চেয়ে শিসের মাধ্যমে কথা বলা অনেক সুবিধাজনক। এই ভাষার নাম সিলবো, যারা এই ভাষায় কথা বলেন তাদের বলা হয় সিলবাদর।

১৯৭০-৮০ এর দিকে খুব অল্পসংখ্যক সিলবাদর অবশিষ্ট ছিলেন। এরপর ১৯৯৯ সাল থেকে এখানকার বিদ্যালয়গুলোতে ভাষাটি অবশ্যপাঠ্য করা হলো। ফলাফল পাওয়া গেলো হাতেনাতে, বর্তমানে প্রায় ২২ হাজার লোক এই ভাষায় যোগাযোগ করে থাকেন। সেখানে গেলে দেখবেন- বিদ্যালয়ে, রেস্তোরার সমানে মানুষ সিলবোতে কথা বলছে, ওদিকে পর্যটকেরা মুগ্ধচোখে দেখছে আর শিখছে। লা গোমেরোর পর্যটনমন্ত্রী ফার্নান্দো মেন্ডেজ বলেন, যেভাবে যুক্তরাজ্য তার পর্যটনের সঙ্গে ইংরেজি শিক্ষার সমন্বয় ঘটিয়েছে, যেভাবে ভারত তাদের যোগব্যায়ামকে পর্যটনক্ষেত্রে কাজে লাগাচ্ছে, আমরাও সিলবোকে নিয়ে সেরকম কিছুই করবো।

পাঠকের মতামত

Comments are closed.