257923

ভোলায় ঘূর্ণিঝড় বুলবুলে ৫৯ হাজার হেক্টর জমির ফসলের ক্ষতি

ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের কারনে বৃষ্টি ও জড়ো বাতাসে ভোলার প্রায় সাড়ে ৫৭ হাজার হেক্টর জমির আমন ধানসহ ৫৯ হাজার হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে শাকসবজি ৭৪২, খেশারী ২১৮, পান ৫৪ ও আখ ৭ হেক্টর।

দু’ এক দিনের মধ্যে এ সকল জমিতে জমে থাকা পানি নেমে গেলে ক্ষতির পরিমাণ কিছুটা কমে যাবে বলে জানিয়েছে কৃষি অফিস। এছাড়াও তারা ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদেরকে সার, বিজ ও নগদ অর্থ প্রদান করবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন। তবে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা জমির ফসল হাড়িয়ে এখন বিভিন্ন এনজিও থেকে নেয়া ঋণের দুশ্চিন্তায় ভূগছেন।

কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এবছর ভোলায় রোপা আমনের লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে এক লক্ষ ৭৮ হাজার ৯৭৫ হেক্টর। আবাদ হয়েছে এক লক্ষ ৭৯ হাজার ২৮০ হেক্টর। খেসারীর লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে ১৬ হাজার ৫০০ হেক্টর, আবাদ হয়েছে ৫১৮ হেক্টর, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ২১৮ হেক্টর। ৫১৮ হেক্টর পানের বরজের মধ্যে ৫৪ হেক্টর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আখ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সাত হেক্টর।

কৃষি অফিস আরও জানা যায়, ভোলা সদর উপজেলায় মোট ২৬ হাজার ২১২ হেক্টর জমির ফসলের মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সাত হাজার ৮১৯ হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দৌলতখান উপজেলায় ১৭ হাজার ২৮ হেক্টর জমির মধ্যে পাঁচ হাজার ৮৮ হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

বোরহানউদ্দিন উপজেলায় ১৮ হাজার ৯৬৩ হেক্টর জমির মধ্যে পাঁচ হাজার ৬৭৫ হেক্টর জমির ফসলের ক্ষতি হয়েছে। তজুমদ্দিন উপজেলায় ১২ হাজার ৯১১ হেক্টর জমির মধ্যে জমির মধ্যে তিন হাজার ৮০০ হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

লালমোহন উপজেলায় ২৩ হাজার ৯৯৯ হেক্টর জমির মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সাত ১৮১ হেক্টর জমির ফসল। চরফ্যাশন উপজেলায় ৭১ হাজার ৫৩৫ হেক্টর জমির মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ২১ হাজার ৪৩৮ হেক্টর জমির ফসল। মনপুরা উপজেলায় ১২ হাজার ৪৯২ হেক্টর জমির মধ্যে তিন হাজার ৭৪৯ হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ সাতটি উপেজলার মধ্যে চরফ্যাশন ও বিভিন্ন চরাঞ্চলের ফসল বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন কৃষি বিভাগ।

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদেরকে সার্বিক পরামর্শ ও জমির পানি সরানোর জন্য কৃষি অফিসারগন মাঠ পর্যায়ে কাজ করে যাচ্ছে। কৃষকদের দাবি, তারা বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে ফসল চাষ করলেও তা ঘুর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় দুশ্চিন্তায় রয়েছেন।

ভোলার ও দৌলতখানের কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, এসকল এলাকায় জমিতে রোপা আমন ধান ও সবজি চাষ করছিল। কিন্তু ঘুর্ণিঝড় বুলবুলের প্রভাবে সৃষ্ট জড়ো বাতাস ও বৃষ্টির পানিতে তদের ধান ও সবজি ক্ষেত তলিয়ে গেছে। দ্রুত এ পানি সরানো না গেলে ক্ষেতের ধান ও সবজি পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যাবে।

তারা আরও জানায়, একদিকে ফসলের ক্ষতি অন্য দিকে এনজিওর ঋণের টাকা পরিশোধের চিন্তায় তারা এখন দিশেহারা। সরকারের পক্ষ থেকে সহায়তা ও এনজিওর ঋণ মওকুফ করা না হলেও তারা আর ঘুরে দাঁড়াতে পারবে না।

ভোলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিনয় কৃষ্ণ দেবনাথ জানান, আমরা পাঠ পর্যায়ে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের কাছে গিয়ে ফসলের ক্ষতি কমিয়ে আনতে বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। এবং ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা তৈরী করছি। তাদেরকে সার, বীজ ও নগদ অর্থ প্রদান করা হবে। আমাদের কাছে ইতোমধ্যে রবি শস্যের প্রনোদনা হাতে এসে পৌছেছে। আশা করি খুব দ্রুত আমরা তা ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের মঝ্যে বিতরণ করতে পারবো। আর তা দিয়ে তারা এ ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবে।

পাঠকের মতামত

Comments are closed.