258481

আড়ত থেকে বস্তায় বস্তায় বের হচ্ছে পচা পেঁয়াজ, ফেলা হচ্ছে ‘ভাগাড়ে’!

পেঁয়াজের দামের লাগাম ধরা যাচ্ছে না কোনো ভাবেই। লাফিয়ে-লাফিয়ে বাড়ছে পেঁয়াজের দাম। প্রতি কেজি পেঁয়াজ এখন ২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। একদিকে পেঁয়াজের দাম আকাশচুম্বী হলেও অন্যদিকে বেশ কিছু পেঁয়াজ পঁচে নষ্টও হচ্ছে। যার স্থান হচ্ছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) ভাগাড়ে।

এসব ঘটনার ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর নগরবাসীর মাঝে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। তারা বলছেন, দাম বাড়াতে অতি মুনাফার লোভে গুদামজাত করা পেঁয়াজ এখন পচে নষ্ট হচ্ছে। মুনাফার লোভে ন্যায্য মূল্যে বিক্রি না করে, সেই পচা পেঁয়াজ এখন ফেলা হচ্ছে ভাগাড়ে-নদীতে। ভোক্তারা বলছেন এক কথায়, অতি লোভে তাঁতি নষ্ট।

খাতুনগঞ্জ পাইকারি বাজারের পাশেই চাক্তাই খাল। গতকাল শুক্রবার রাতে বাজারে গিয়ে দেখা যায়, খালের কিছুটা দূরে রাতের অন্ধকারে বস্তা পচা পেঁয়াজগুলো কে বা কারা ফেলে গেছে। পেঁয়াজগুলো আকারে ছোট। ফেলে যাওয়া পচা পেঁয়াজের বস্তা থেকে নিম্ন আয়ের মানুষরা খাওয়ার উপযোগী পেঁয়াজ বেছে নিচ্ছেন।

কেউ কেউ বলছেন দাম বাড়াতে অতি মুনাফার লোভে গুদামজাত করায় পঁচে নষ্ট হচ্ছে অনেক পেঁয়াজ। তবে ব্যবসায়ীদের দাবি মিয়ানমার থেকে আমদানি করা পেঁয়াজ পঁচা হওয়ায় তারা সেগুলো ফেলে দিচ্ছেন। এজন্য তাদের বিশাল লোকসান হচ্ছে।

ওখানকার ব্যবসায়ী আলতাফ মাহামুদ জানান, পেঁয়াজগুলো মিয়ানমার থেকে আমদানি করা। এসব পেঁয়াজ যখন খাতুনগঞ্জে ঢুকছিল, তখন কিছুটা পচা ছিল। আর আড়তে মজুদ করে রাখার ফলে একেবারে পচে গেছে। তবে তিনি পচা পেঁয়াজের আড়তদারের নাম-ঠিকানা কিছুই বলতে পারেননি।

চাক্তাই এলাকার চাল ব্যবসায়ী আবুল হাসেম বলেন, পেঁয়াজ পচলে ব্যবসায়ীদের কোনো অসুবিধা নেই। কারণ যে পরিমাণ পেঁয়াজ পচবে তার ক্ষতি পোষাতে ভালো পেঁয়াজের দাম বাড়াতে থাকবে তারা। এখন প্রতিদিন পচা পেঁয়াজ আড়ত থেকে বের হচ্ছে। প্রশাসনের উচিত এসব আড়তদারকে খোঁজে বের করা।

আড়তে কারা পেঁয়াজ মজুত করে রেখেছে, এ বিষয়ে প্রশাসনের কাছে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। এমনকি চাক্তাই খাতুনগঞ্জ আড়তদার কল্যাণ ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এহেসান উল্লাহ জাহেদীও পচা পেঁয়াজের বিষয়ে তথ্য দিতে পারেননি।

তিনি বলেন, পেঁয়াজ তো বেশি দিন মজুত করে রাখা যায় না। এর মধ্যে ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের কারণে চাক্তাই খাতুনগঞ্জের অনেক আড়তে পানি ঢুকেছে। তখন হয়তো আড়তে পানি ঢুকে পেঁয়াজগুলো নষ্ট হতে পারে।

এদিকে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্নতা পরিদর্শক সৈয়দ আহমদ সফা মাতব্বর জানান, গত তিন-চারদিন ধরে খাতুনগঞ্জসহ নগরের বিভিন্ন পাইকারি ও খুচরা বাজার থেকে বেশি পরিমাণ পচা পেঁয়াজ সরাতে হয়েছে। পচে নষ্ট হওয়া এসব পেঁয়াজ ফেলা হচ্ছে সিটি কর্পোরেশনের ভাগাড়ে।

পাঠকের মতামত

Comments are closed.