258483

স্মরণকালের রেকর্ড ভঙ্গ, রংপুর গ্রামাঞ্চলে পিয়াজের কেজি ৩০০

স্মরণকালের সকল রেকর্ড ছাপিয়ে রংপুরে এবার খোলা বাজারে আগুন। পিয়াজ বিক্রি হচ্ছে ২৫০ টাকা কেজি অন্যদিকে গ্রাম অঞ্চলের হাট বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকা দরে। তবে পিয়াজের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধির কারণে ভোক্তাদের মাঝে তীব্র ক্ষোভ ও হতাশার সৃষ্টি হয়েছে। বাজারে পিয়াজের মজুতও প্রচুর তারপরও কেন দফায় দফায় দাম বাড়ছে তার কোন সদুত্তর মিলছে না ব্যবসায়ী আর আড়ত ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে।

বিভাগীয় নগরী রংপুরের সিটি বাজারের পার্শ্বে নিউ জুম্মপাড়ায় সবজির পাইকারী বাজারে ঘুরে এবং আড়তদারদের সাথে কথা বলে জানা গেছে পিয়াজের আমদানি কম, তার উপর চট্রগ্রামের খাতুনগঞ্জ আড়তে পিয়াজের দাম বেশি। তারপরেও চাহিদা অনুযায়ী তারা সরবরাহ করতে না পারায় সংকট দেখা দিয়েছে।

আড়তদার সবজি ব্যবসায়ী হারুন মিয়া জানান, তারা সরাসরি চট্রগ্রাম থেকে পিয়াজ নিয়ে আসেন। মোকামেই পিয়াজের দাম পড়ছে ১৮০ থেকে ২শ টাকা কেজি ফলে সেখান থেকে রংপুরে আনতে গাড়ি ভাড়াসহ অন্যান্য খরচ পড়ে কেজি প্রতি ১০ থেকে ১৫ টাকা ফলে তার পাইকারী বিক্রি করছেন ২২০ টাকা কেজি।

অপর আড়তদার রমজান আলী জানান, পিয়াজের দাম মোকামেই বেশি হওয়ায় তাদের বেশি দামে কিনে আনতে হচ্ছে ফলে দাম বেড়েছে। তিনি আরো জানান, পিয়াজের আমদানি বৃদ্ধি না পেলে হয়তো চলতি সপ্তাহে ৩শ টাকার উপরে পেয়াজের দাম উঠবে বলে জানালেন তিনি। সরজমিনে পিয়াজের আড়তে ঘুরে দেখা গেছে, সবগুলো আড়তেই দেশি পিয়াজ গুদামজাত করে রাখা ছিল। এখন বাজারে বিক্রি করা হচ্ছে ইচ্ছে মতো দামে।

অপরদিকে পাইকারী বাজারের কাছেই সিটি বাজার, সেখানে পেয়াজ বিক্রি হচ্ছে আড়াইশ টাকা কেজি দরে। নগরীর সবচেয়ে বড় সবজি বাজারে ঘুরে দেখা গেছে পেয়াজের দাম আড়াইশ টাকার নিচে বিক্রি করছে না খুচরা ব্যবসায়ীরা। তারা জানান, বেশি দামে পিয়াজ কিনে আনতে হচ্ছে বলে দাম বেশি।

বাজার করতে আসা চাকুরীজিবি সেলায়মান আলম জানান, আড়াইশ টাকা দামে প্রতি কেজি পেয়াজ বিক্রি হচ্ছে এটা ভাবা যায়। এত দামে পেয়াজ কেনা তাদের পক্ষে সম্ভব নয়। ফলে এক কেজির স্থলে এক পোয়া কিনতে বাধ্য হলাম। তিনি অভিযোগ করেন, পত্রিকায় দেখলাম পিয়াজের দাম একশ টাকার নিচে নামার আপাতত কোন সম্ভাবনা নেই। এর পর থেকেই রংপুরের বাজারে পেয়াজের দাম বাড়া শুরু হয়েছে।

নগরীর শালবন এলাকা থেকে কাচা বাজারে আসা চাকুরীজীবী রেশমা আক্তার জানান, পিয়াজের দাম ্অতিরিক্ত দাম বাড়ছে। বাজার নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনের কোন উদ্যেগ নেই। বাজার মনিটরিং করলে হয়তো ৫-১০ টাকা কেজিতে কমে কেনা যেত।

রিক্সা চালক আবদুল বাতেন মিয়া, ক্ষোপের সাথে জানালেন দেশটা কি মগের মুল্লুক পাইছে নাকি ইচ্ছা মতো পেয়াজের দাম বাড়বে অথচ কর্তৃপক্ষের কোন নিয়ন্ত্রণ থাকবে না। রান্নার অন্যতম উপকরণ হচ্ছে পিয়াজ, তার দাম যদি এতো বেশি হয় তাহলে আমাদের মতো নিম্নবিত্তদের পিয়াজ ছাড়াই রান্না করতে হবে।

খুচরা ব্যবসায়ীরা বললেন, পিয়াজের দাম বেশি হবার কারণে কেউ আর কেজি হিসেবে পিয়াজ কিনছেন না। বেশিরভাগ খদ্দের এক পোয়া বা আধা কেজি কিনছেন।

এদিকে পিয়াজের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধির কারণে প্রশাসন কি ব্যবস্থা নিয়েছে জানতে রংপুর জেলা প্রশাসক আসিব আহসানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বিষয়টি উদ্বেগের। আমরা ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাসহ সার্বিক ব্যবস্থা গ্রহন করছি।

পাঠকের মতামত

Comments are closed.