258875

এনআরসি আতঙ্কে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করছে ভারতীয়রা

ভারতের আসাম রাজ্যে কয়েক মাস আগে যে জাতীয় নাগরিক তালিকা (এনআরসি) প্রকাশ করা হয়েছে তা আসলে সংখ্যালঘু মুসলমানদের রাষ্ট্রহীন করে তোলার একটি হাতিয়ার। এমনটাই অভিযোগ করেছে আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা সম্পর্কিত একটি ফেডারেল মার্কিন কমিশন। চূড়ান্ত নাগরিক তালিকা থেকে ইতিমধ্যে ১৯ লাখ মানুষ বাদ পড়েছে যাদের মধ্যে অনেক বাঙালি হিন্দু ধর্মাবলম্বীও রয়েছেন।

এই আতঙ্ক এখন আসামের মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যে চরমভাবে বিরাজ করছে। ইতিমধ্যেই তাদের অনেকেই ভারত ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে অন্য কোন মুসলিম দেশে আশ্রয় খোঁজার চেষ্টা করছে।

তারই ধারাবাহিকতায় ঝিনাইদহের মহেশপুর সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করছে ভারতীয় বাঙালিরা। মহেশপুর সীমান্তে অনুপ্রবেশের জন্য ভারতের সীমানায় অপেক্ষা করছে শত শত নারী-পুরুষ। এদিকে গত এক সপ্তাহে বাংলাদেশ সীমান্ত থেকে ১৫৯ জন অনুপ্রবেশকারীকে আটক করেছে বিজিবি।

বিজিবি ও থানা সূত্র জানিয়েছে, গত এক সপ্তাহে মহেশপুর উপজেলার জলুলী, পলিয়ানপুর, খোসালপুর সীমান্ত দিয়ে ভারত থেকে অনুপ্রবেশের সময় ৫১ জন শিশু, ৪৭ জন পুরুষ ও ৬১ জন নারীসহ মোট ১৫৯ জনকে আটক করেছে ৫৮ বিজিবির আওতাধীন বিওপি ক্যাম্প। আটককৃতদের ঝিনাইদহ আদালতে পাঠানো হয়েছে।

আটককৃতরা অধিকাংশই মুসলিম সম্প্রাদায়ের মানুষ। এ ব্যাপারে ৫৮ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্ণেল কামরুল আহসানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘ভারতে মাইগ্রেশন হয়ে যাওয়া লোকজনের বসবাসের অসুবিধার কারণে তারা আবার বাংলাদেশে ঢোকার চেষ্টা করছে। গত এক সপ্তাহে শিশু সহ ১৫৯ জনকে আটক করা হয়েছে। এর আগের সপ্তাহে আরো ৪০জন আটক ছিল।’

স্থানীয় এলাকাবাসী জানায়, যা ধরা পড়েছে তার চেয়ে অনেক বেশী লোক বিভিন্ন ভাবে দেশের ভিতরে প্রবেশ করেছে। ভারত থেকে বাংলাদেশের এক নাগরিক সম্প্রতি দেশে ফিরে এসে বলেন, দালালরা শত শত নারী পুরুষ সীমান্তে জড়ো করে রেখেছে। বিজিবির কঠোর অবস্থানের কারনে তারা বাংলাদেশে ঢুকতে পারছে না। ৫৮ বিজিবির অধিনায়ক আরো জানান, তারা সীমান্তে কঠোর নজরদারি বজায় রেখেছে।

মহেশপুর থানার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, আটককৃতরা ভারতের আসাম ও ব্যাঙ্গালুরসহ বিভিন্ন এলাকায় বসবাস করছিল। সম্প্রতি ভারতের নাগরিকপঞ্জির(এনআরসি) কারণে সেখানে তাদের বসবাসে অসুবিধা সৃষ্টি হয়। এর ফলে তারা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করছে।

আটককৃত ভারতীয় বাঙালিদের দাবি, ,তাদের বাড়ি খুলনা, বাগেরহাট, বরিশাল অঞ্চলে ছিল। বিগত এক-তিন দশক আগে ভারতে পাড়ি জমিয়ে সেখানে স্থায়ীভাবে বসবাস করে আসছিল। সেখানে ভারতের একটি বিশেষ বাহিনী বিভিন্ন অযুহাতে তাদের আটক ও নির্যাতন করার কারণে তারা বাংলাদেশে চলে আসতে বাধ্য হচ্ছে।

পাঠকের মতামত

Comments are closed.