258785

সোশ্যাল মিডিয়া কাঁপাচ্ছে ছোট্ট সালমান শাহ

বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে নব্বইয়ের দশকের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ও সুদর্শন নায়কের নাম সালমান শাহ। মাত্র চার বছরের চলচ্চিত্র জীবনে অভিনয় করেছিলেন ২৭টি ছবিতে। মৃত্যুর আগে ও পরে তার সবগুলো ছবিই সুপারহিট। আজও কাঁদে সালমান ভক্তের প্রাণ। আজও স্মৃতি হাতরে বেড়ান সালমান যুুগের মানুষরা, চলচ্চিত্রের কথা বলতে গিয়ে।

এখনও কোটি কোটি দর্শকের হৃদয়ে বসবাস করেন বাংলা সিনেমার সর্বকালের সেরা স্টাইলিস্ট নায়ক সালমান শাহ। তাকে আজও অনুসরণ অনুকরণ করেন তার ভক্তরা। এবার সোশ্যাল মিডিয়াতে হই চই ফেলে দিয়েছে সালমানের এক শিশুভক্ত।

তাকে দেখে মনে হবে এই যেন শিশুকালের সালমান। তার চোখের চাহনি, চলাফেরা স্টাইল সবই যেন সেই সুপারস্টার মতো। সম্প্রতি এই ছোট্ট হিরোর ফটোগ্রাফি করেছেন আরেকজন সালমান শাহ ভক্ত নাকিব হাসান। তার ক্যামেরার কারুকাজ ও ছোট্ট সালমানের স্টাইল চমকে দিয়েছে সবাইকে।

বিশেষ করে এই ছবিগুলো দেখে আবেগে ভেসেছেন সালমান শাহয়ের ভক্তরা। এই ছোট্ট হিরোর নাম আগ্নিক মেহরাব। তার বয়স মাত্র তিন বছর। তার ছবিগুলো যিনি তুলেছেন তিনি সম্পর্কে আগ্নিকের কাজিন।

রোববার নাকিব হাসান আগ্নিকের বেশ কিছু ছবি পোস্ট করেছেন ফেসবুকে। ছবির ক্যাপশনে তিনি লিখেছেন, ‘ ৩ বছর বয়সী আগ্নিক, একদিন সালমান শাহ-এর ছবি দেখে বলেছিল আমি এই হিরোর মত ছবি তুলবো, সেই থেকেই খালামনি আর আমার প্ল্যান ছিল এই ক্ষুদে ভক্তের মাঝে সালমান শাহকে ফুটিয়ে তোলা।

ছবি তোলার সময় আমি অবাক হয়ে গেছি আগ্নিককে মোবাইলে ছবি দেখালেই ও নিজের মতো করে স্টাইলগুলো দেওয়ার চেষ্টা করেছে। সালমান শাহ্ এর ড্রেস, স্টাইল সব কিছুতেই একটা নিজস্বতা ছিল, যা যে কারো মন কেড়ে নেয়। নতুন প্রজন্মের মাঝে প্রিয় সালমান শাহ্ তুলে ধরতে আমার ছোট্ট প্রয়াস, সালমান শাহ বেঁচে থাকুক হাজার বছর এমন অসংখ্য ভক্তের মাঝে।

এ বিষয়ে নাকিব জাগো নিউজকে বলন, ‘আগ্নিক ছবি তোলার প্রতি বেশ ঝোঁক। কয়েকদিন আগে ওকে বলছিলাম বাংলাদেশের সেরা স্টাইলিস্ট হিরোকে চেনো? এরপর গুগল থেকে ওকে সালমান সাহ এর ছবি দেখায়। এরপর ও বলে আমি সালমান শাহ হবো। এরপরই আসলে কাজটি করা। আমি ওয়েডিং ফটোগ্রাফি করি। ওর ছবিগুলো গতকাল ফেসবুকে পোস্ট করার পর থেকে সবার প্রশংসা পাচ্ছি। মজার ব্যপার হলো হলো আগ্নিক এখন সবার নামের শেষে শাহ জুড়ে দিচ্ছে। যেমন স্পাইডারম্যান ও সুপারম্যান স্পাইডার ম্যান শাহ, সুপারম্যান শাহ হয়ে গেছে। (হাসি)।’

১৯৭১ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর সিলেটের দরিয়াপাড়ায় নানার বাড়িতে জন্মেছিলেন সালমান শাহ। সালমানের পারিবারিক নাম শাহরিয়ার চৌধুরী ইমন। বাবা কমর উদ্দিন চৌধুরী ও মা নীলা চৌধুরী। দুই ভাইয়ের মধ্যে সালমান বড়। ছোট ভাই শাহরান চৌধুরী ইভান। কিশোর বয়সে তিনি ছিলেন কণ্ঠশিল্পী। তার অভিনয় জীবন শুরু হয় বিটিভিতে শিশুশিল্পী হিসেবে।

সোহানুর রহমান সোহান পরিচালিত কেয়ামত থেকে কেয়ামত ছবিতে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে চলচ্চিত্রে জগতে পা রাখেন এই নায়ক। প্রথম ছবিতে মৌসুমীর সঙ্গে সালমানের জুটি দারুণ জনপ্রিয় হয়। এরপর অনেক নির্মাতাই তাদের নিয়ে ছবি করতে আগ্রহী হতে থাকেন। তারা শুরু করেন ‘অন্তরে অন্তরে’ নামে নতুন একটি ছবির শুটিং।

পরবর্তীতে মৌসুমীর সঙ্গে ‘দেনমোহর’ ছবিতে কাজ করলেও জুটি হিসেবে সালমান অমর হয়ে আছেন শাবনূরের সঙ্গে। ‘তুমি আমার’ ছবি দিয়ে শুরু হয় ঢাকাই সিনেমাতে দুর্দান্ত জনপ্রিয় জুটি সালমান-শাবনূরের পথচলা।

ঢাকাই বাণিজ্যিক চলচ্চিত্রে সবচেয়ে সফল জুটি সালমান শাহ-শাবনূর। প্রয়াত নির্মাতা জহিরুল হক ১৯৯৪ সালে নির্মাণ করেন ‘তুমি আমার’। এই সিনেমার মাধ্যমে প্রথম একসঙ্গে অভিনয় করেন সালমান-শাবনূর। এটি সালমানের দ্বিতীয় চলচ্চিত্র হলেও নায়িকা হিসেবে শাবনূর তখন বেশ কয়েকটি সিনেমায় অভিনয় করেছেন। তবে সালমানের সঙ্গে জুটি গড়ার পরেই শাবনূরের ক্যারিয়ারে সুবাতাস বইতে থাকে।

এরপর একে একে ‘সুজন সাথী’, ‘বিক্ষোভ’, ‘স্বপ্নের ঠিকানা’, ‘মহামিলন’, ‘বিচার হবে’, ‘তোমাকে চাই’, ‘স্বপ্নের পৃথিবী’, ‘জীবন সংসার’, ‘চাওয়া থেকে পাওয়া’, ‘প্রেম পিয়াসী’, ‘স্বপ্নের নায়ক’, ‘আনন্দ অশ্রু’, ‘বুকের ভিতর আগুন’ মোট ১৩টি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছিলেন সালমান-শাবনূর জুটি। সবগুলো ছবিই ছিল সুপারহিট।

১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর তিনি রহস্যজনকভাবে মৃত্যুবরণ করেন। আদালত থেকে তার মৃত্যুকে আ’ত্মহ’ত্যা বলা হলেও তার পরিবার ও ভক্তদের দাবি তাকে হ’ত্যা করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে মামলা এখনও বিচারাধীন।

পাঠকের মতামত

Comments are closed.