259614

ডেনিশ নারীর ৫০ কোটি টাকা মেরে পলাতক বাংলাদেশি স্বামী

ডেস্ক রিপোর্ট : দীর্ঘদিন ডেনমার্কে ছিলেন কুমিল্লার নাঙ্গলকোটের আশারকোটা গ্রামের মফিজ মেম্বারের ছেলে সাইফ। দশ বছর আগে তিনি নাদিয়া নামের এক ডেনিশ নারীকে (২৯) বিয়ে করেন। স্বামীর বিরুদ্ধে ৫০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ ও সন্তানের পিতৃত্বের দাবিতে বাংলাদেশে এসেছেন নাদিয়া।

কুমিল্লায় অবস্থানরত নাদিয়া অভিযোগ করেন, স্বামীর বাড়িতে আসার পর তার পরিবার তাকে নির্যাতন করা হয়। তিনি জানান, দশ বছর আগে সাইফ তাকে বিয়ে করেন। তাদের তিন বছর বয়সী কন্যা সন্তান রয়েছে। এই দশ বছরে সাইফ তার কষ্টার্জিত বেতন ও পরিবারের কাছ থেকে ৫০ কোটি টাকা মেরে বাংলাদেশে চলে এসেছেন।

নাদিয়া আরও জানান, গত ৩ মাস আগে সাইফ দেশে আসবে বলে তার কাছ থেকে প্রায় ৫০ হাজার ইউরো নিয়ে বাংলাদেশে আসেন। এরই মধ্যে তার ফেইসবুক আইডি হ্যাক করেন সাইফ। তার সঙ্গে আইএমও, ভাইবার, হোয়াটসঅ্যাপসসহ সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ করে দেয় সাইফ।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সম্প্রতি কুমিল্লা কোটবাড়ী এলাকার অনার্স পড়ুয়া এক শিক্ষার্থীকে ডেনমার্ক নেবেন বলে কৌশলে বিয়ে করেন সাইফ। বিয়ের দুমাস পার না হতেই সাইফের স্ত্রী তার খোঁজ নিয়ে ডেনমার্ক থেকে বাংলাদেশে চলে আসেন। অবশ্য তিনি দেশে আসার পর আত্মগোপনে চলে যান সাইফ।

তিনি স্বামীর বাড়ি আসার পর তার সঙ্গে সাইফের পিতা মফিজ মেম্বার ও তার লোকজন মারধর ও বাকবিতণ্ডা করেন। গত সোমবার রাতে সেখান থেকে তাকে কুমিল্লা পদুয়ার বাজার বিশ্ব রোডে অবস্থিত হোটেল নুরজাহানে নিয়ে আসে তারা।

স্থানীয় সংবাদিকরা এ ব্যাপারে জানতে সেখানে গেলে হোটেল কর্তৃপক্ষ প্রথমে অস্বীকার করে। পরে সদর দক্ষিণ থানা পুলিশের সহযোগিতায় ৩০৯ নম্বর কক্ষে গিয়ে সত্যতা পাওয়া যায়। এরপর তাকে আবার সেখান থেকে স্থানান্তর করে নগরীর রেইসকোর্স এলাকায় হোটেল রেডরফ ইনে নিয়ে যাওয়া হয়।

রেডরফ ইনে গিয়ে নাদিয়ার সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, সাইফ আজকে সকালে ডেনমার্ক চলে গেছে, আমাকে ফোন করে আমাকেও চলে যেতে বলেছে। আমি আর বাংলাদেশে থেকে লাভ কি?

গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কুমিল্লা জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও নাঙ্গলকোট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামুনুর রশিদ নাদিয়াকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। তারা নাদিয়াকে স্বামীর কাছে ফিরতে সার্বিক সহযোগিতা করবেন বলে আশ্বাস দেন।

নাদিয়া নাঙ্গলকোট থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করে রেখেছেন। পরে পুলিশের একটি বিশেষ টিম তাকে বিমানবন্ধরে পৌঁছে দেয়।বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন এক পুলিশ কর্মকতা।

এ বিষয়ে সাইফের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

পাঠকের মতামত

Comments are closed.