259647

নারী উদ্যোক্তাদের গ্রামীণ অর্থনীতিতে অবদান বাড়ছে

ডেস্ক রিপোর্ট : গ্রামীণ অর্থনীতিতে অবদান বাড়ছে নারী উদ্যোক্তাদের। শহরের পাশাপাশি এখন গ্রামেও বাড়ছে নারী উদ্যোক্তা। গ্রামীণ অবকাঠামো নির্মাণ, গ্রামীণ পরিবহন ও যোগাযোগ এবং ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার হওয়ায় স্বল্প আকারে হলেও বাড়ছে নারী উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগ। এ ক্ষেত্রে গ্রামীণ পরিবারগুলোর আয় ও কর্মসংস্থান বাড়াতে অকৃষি খাতের অবদানও বাড়ার তথ্য পাওয়া গেছে।এ প্রসঙ্গে নারী উদ্যোক্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ উইমেন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (বিডব্লিউসিসিআই) প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি সেলিমা আহমাদ এমপি বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, সরকার গত ১০ বছরে সাফল্যের সঙ্গে গ্রাম ও শহরে ব্যাপক অবকাঠামো উন্নয়ন করেছে। ফলে ব্যবসা-বাণিজ্যের অনেক ঘাটতি পূরণ হয়েছে। এতে অর্থনীতিতে নারী ও নারী উদ্যোক্তাদের অংশগ্রহণ অনেক বেড়েছে।

এই বৃদ্ধির হার শহরের তুলনায় গ্রামে অনেক বেশি। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সাম্প্রতিক সমীক্ষা বলছে, বাংলাদেশের অর্থনীতির মূলধারার কর্মক্ষেত্রগুলোতে নারীর অবদান বেড়েই চলেছে। সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, ১ কোটি ৬৮ লাখ নারী কৃষি, শিল্প ও সেবা অর্থনীতির বৃহত্তর এই তিন খাতে কাজ করছেন। বর্তমানে জিডিপিতে নারীর অবদান ২০ শতাংশের কিছুটা বেশি। কিন্তু বাস্তবে প্রাতিষ্ঠানিক-অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে নারীর অবদান স্বীকার করলে এই হার দাঁড়ায় ৪০ শতাংশের ঊর্ধ্বে।

বর্তমানে কৃষি খাতে নিয়োজিত আছেন ৯০ লাখ ১১ হাজার নারী। গত এক যুগে বাংলাদেশে কৃষির নারীকরণ হয়েছে। রাষ্ট্র পরিচালনার মতোই দেশের কৃষি খাত বা গ্রামীণ অর্থনীতিতে নেতৃত্ব দিচ্ছেন নারীরা। গত ১০ বছরে কৃষিতে নারীর অংশগ্রহণ বেড়েছে ১০৮ শতাংশ। আর পুরুষের অংশগ্রহণ কমেছে দুই শতাংশ। খাদ্যনীতি বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল ফুড পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের জরিপে দেখা গেছে, দেশের ৯০ শতাংশ বাড়িতে মুরগি পালন নিয়ন্ত্রণ করেন নারী। ছাগল ও গরু পালনে নারীদের নিয়ন্ত্রণ ৫৫ শতাংশ। এসএমই ফাউন্ডেশন ও বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান (বিআইডিএস) পরিচালিত ‘ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প খাতে নারী উদ্যোক্তা : বাংলাদেশ প্রেক্ষিত ২০১৭’ শীর্ষক গবেষণায় দেখা গেছে, দেশে ২০০৯ সালে শিক্ষিত ২০ শতাংশ নারী ব্যবসায় সম্পৃক্ত ছিলেন। ২০১৭ সালে তা বেড়ে ২৬ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। দেশের ৮৬ শতাংশ নারী উদ্যোক্তাই বিবাহিত। তাদের ৬৫ শতাংশেরই আবার পারিবারিক ব্যবসা রয়েছে। ৭৫ শতাংশ নারী উদ্যোক্তার বয়স ৩১ থেকে ৫০ বছর। তরুণ নারী উদ্যোক্তার সংখ্যা মাত্র ১৩ শতাংশ (২১ থেকে ৩০ বছর)। শূন্য দশমিক ৫ শতাংশের বয়স ১৫ থেকে ২০ বছর।

ঋণ প্রাপ্তি, সামাজিক ও পারিবারিক প্রতিবন্ধকতায় অবিবাহিত নারীরা এখনো উদ্যোক্তা হিসেবে তৈরি হতে পারছেন না। ব্যবসা করার ক্ষেত্রে ৭৭ শতাংশ নারী এখন আর পরিবার থেকে কোনো বাধা পান না। ৭ শতাংশ নারী এখনো পরিবার থেকে বাধা পান। ওই গবেষণায় ৫ শতাংশ নারীর পরিবার থেকে কোনো অর্থনৈতিক সাহায্য না পাওয়ার তথ্য উঠে এসেছে। এ প্রসঙ্গে উইমেন এন্টরাপ্রেনিউরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ওয়েব) সভাপতি নাসরিন ফাতিমা আউয়াল মিন্টু বলেন, নারী উদ্যোক্তারা শত বাধা পেরিয়ে ব্যবসায় নামছেন। গ্রামের নারীরা এটা আরও বেশি করছেন।

গ্রামের নারীরা শিগগিরই ক্ষুদ্র ঋণও পান না তাদের ব্যবসার জন্য। যেটুকু অর্থায়ন পান, তাও চড়া সুদে নিয়ে ব্যবসা করতে হয় গ্রামীণ নারী উদ্যোক্তাদের। তথ্যমতে, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে টানা তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসা আওয়ামী লীগের ইশতেহারে নির্বাচনী অঙ্গীকার হিসেবে গ্রামকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

পাঠকের মতামত

Comments are closed.