260172

মোবাইল ফোনের আসক্তি শুধু মানসিক নয়, শারীরিক মিলনের স্বাভাবিক ছন্দেও ব্যাঘাত ঘটায়!

ডেস্ক রিপোর্ট : আজকাল তরুণ থেকে বৃদ্ধ সবার হাতেই স্মার্টফোন দেখা যায়। প্রয়োজনের তাগিদে এর চাহিদাও বাড়ছে দ্বিগুণ। তবে এর ব্যবহারে সুবিধার পাশাপাশি বাড়ছে অসুবিধাও।

জানেন কি, মোবাইল ফোনের আসক্তি শুধু মানসিক নয়, শারীরিক মিলনের স্বাভাবিক ছন্দেও ব্যাঘাত ঘটাতে পারে। কারণে-অকারণে স্মার্টফোনে মুখ গুঁজে পড়ে থেকে প্রতিনিয়ত নিজেদের মানসিক অবস্থার অবনতি ঘটাচ্ছেন।

এক গবেষণা বলছে, শুধু মানসিক স্বাস্থ্য নয়, যৌন জীবনও ক্ষতির কবলে পড়ছে এই প্রযুক্তি পণ্যের কারণে।

মরক্কোর কাসাব্লাঙ্কাতে অবস্থিত শেখ খলিফা বিন জায়েদ ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি হসপিটালের যৌন স্বাস্থ্য বিভাগের করা এই গবেষণায় জানা যায়, অংশগ্রহণকারীদের ৬০ শতাংশই জানিয়েছেন তাদের যৌন জীবনে সমস্যা দেখা দেয়ার কারণ স্মার্টফোন।

মরক্কো ওয়ার্ল্ড নিউজ’য়ে এই গবেষণা প্রকাশিত হয়। গবেষণায় অংশ নেন মোট ৬০০ জন, যাদের সবাই স্মার্টফোন ব্যবহার করেন এবং ৯২ শতাংশ অংশগ্রহণকারী রাতে ঘুমানোর সময় তা ব্যবহার করেন। মাত্র ১৮ শতাংশ মানুষ রাতে ঘুমানোর সময় স্মার্টফোর বন্ধ কিংবা ‘অ্যারোপ্লেইন মোড’য়ে রাখেন।

গবেষণার ভিত্তিতে গবেষকরা বলেন, “২০ থেকে ৪৫ বছর বয়সি মানুষ স্মার্টফোনের কারণে ক্ষতির শিকার হন। আর তার মধ্যে ৬০ শতাংশ জানান, স্মার্টফোন তাদের যৌন জীবনে বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে।

অংশগ্রহণকারীদের অর্ধেকই জানিয়েছেন তারা তাদের যৌন জীবন নিয়ে সন্তুষ্ট নন। কারণ এই কাজের সময়ে বড় একটা অংশ স্মার্টফোনের ব্যবহার দখল করে রাখছে।

যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক প্রযুক্তি পণ্য নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ‘শিওরসেল’, যারা মোবাইল নেটওয়ার্ক জোরদার করে এমন যন্ত্র প্রস্তুত করে। এই প্রতিষ্ঠানের করা এক জরিপের ফলাফল থেকে জানা যায়, একবিংশ শতাব্দীতে পরিণত বয়সে পা দিয়েছেন এমন ১৭ শতাংশ মানুষ সঙ্গমের সময় স্মার্টফোন ব্যবহার করেন।

তিন চতুর্থাংশ ‘মিলেনিয়াল’ অর্থাৎ যারা একবিংশ শতাব্দীতে প্রাপ্তবয়স্ক হয়েছেন তারা ঘুমানোর সময় মাথার পাশে স্মার্টফোন রাখেন। যারা মাথার পাশে স্মার্টফোন নিয়ে ঘুমান তারা এই যন্ত্রগুলো থেকে দূরে থাকলে ভয় ও অস্বস্তি অনুভব করেন, যার মাত্রা সাধারণ মানুষের তুলনায় দ্বিগুণ। আর এই মানুষগুলোই দাবি করেন তারা তাদের জীবন নিয়ে সন্তুষ্ট নন।

ডারহাম ইউনিভার্সিটি এবং কনডম প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান ‘ডিউরেক্স’য়ের মিলিত প্রয়াসে করা আরেক গবেষণায় দেখা যায়, সঙ্গীর তুলনায় স্মার্টফোনের প্রতিই বেশিরভাগ মানুষের আকর্ষণ বেশি। এই গবেষণার এক তৃতীয়াংশ মানুষ জানিয়েছে সঙ্গমের মাঝে তারা ফোন ধরার জন্য বিরতি দেন।

গবেষণায় অংশগ্রহণকারীদের সাক্ষাৎকার নেন এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘সেন্টার ফর সেক্স, জেন্ডার অ্যান্ড সেক্সুয়ালিটিজ’ বিভাগের সহ-পরিচালক এবং সোসিওলজির জ্যেষ্ঠ অধ্যাপক মার্ক ম্যাক-করম্যাক।

তিনি বলেন, “শোবার ঘরে গ্যাজেট নিয়ে ঢোকা সম্পর্কে সম্ভাব্য গুরুতর ক্ষতি করছে।”

দম্পতিদের মধ্যে যারা নিজেদের যৌন জীবন আকর্ষণীয় করতে স্মার্টফোনের সাহায্য নিচ্ছেন, তারা জেনে অবাক হবেন যে যন্ত্রটি বন্ধ রাখাই হবে সবচাইতে কার্যকর উপায়। ডেইলি বাংলাদেশ

পাঠকের মতামত

Comments are closed.