260671

শ্বাসরোধে মাদ্রাসাছাত্রকে হত্যা, ২ শিক্ষক আটক

ডেস্ক রিপোর্ট : গাজীপুরের কালীগঞ্জে আহনাফ হোসেন আদিল নামের ৩ বছরের এক শিশুকে গলাটিপে শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার সকালে লাশের প্রাথমিক সুরতহাল শেষে ময়নাতদেন্তর জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।

এর আগে বুধবার দিবাগত রাতে নিহত শিশুর মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় জড়িত মাদ্রাসা শিক্ষক ও মসজিদের মোয়াজ্জিনকে আটক করা হয়েছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কালীগঞ্জ থানার ওসি একেএম মিজানুল হক।

নিহত আহনাফ হোসেন আদিল (৩) ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার দশালিয়া গ্রামের মুফতি জুবায়ের আহম্মেদ শাহিনের একমাত্র ছেলে। আদিলের বাবা কালীগঞ্জ উপজেলার জাঙ্গালীয়া ইউনিয়নের মরাশ বাগে জান্নাত আরাবিয়া হাফিজিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানার প্রিন্সিপাল এবং একই মাদ্রাসার মসজিদের ইমাম ও খতিব হিসেবে গত ৫ বছর ধরে কর্মরত আছেন।

আটক মো. জুনায়েদ আহমেদ (৩০) হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলার তেঘরিয়া গ্রামের মৃত নোয়াব আলীর ছেলে ও মো. খাইরুল ইসলাম (২২) একই এলাকার জফু মিয়ার ছেলে। জুনায়েদ মরাশ বাগে জান্নাত আরাবিয়া হাফিজিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানার শিক্ষক ছিলন। অন্যদিকে খাইরুল ছিলেন মাদ্রাসার মসজিদের মোয়াজ্জিন।

নিহতের বাবা বলেন, গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর মোয়াজ্জিন মো. খাইরুল ইসলামের একটি মোবাইল ফোন চুরি যায়। মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল হিসেবে চুরি যাওয়ার মোবাইল উদ্ধারের বিষয়ে তাকে দায়িত্ব দেয়া হয়। এ ব্যাপারে মাদ্রাসার ছাত্রদের জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়। কিন্তু পরে জানা যায় ওই মোবাইল মাদ্রাসারই শিক্ষক মো. জুনায়েদ আহমেদ চুরি করেছে। বিষয়টি নিয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করি এবং থাপ্পর দেই। এ ঘটনার একদিন পর আমার ছেলে বুধবার বিকেলে মাদ্রাসা মাঠে খেলতে যাওয়ার পর তাকে পাওয়া যাচ্ছিলো না। আশপাশে খোঁজাখুজি করে মসজিদের মাইকে নিখোঁজের বিষয়টি জানানো হয়। তারপরও সন্ধান মিলছিল না। এক পর্যায়ে বিষয়টি নিয়ে সন্দেহ হলে মাদ্রাসার বিভিন্ন কক্ষে খোঁজাখুঁজি শুরু করা হয়। কিন্তু শিক্ষক মো. জুনায়েদ আহমেদের কক্ষের চাবি দিতে অপারগতা প্রকাশ করে। পরে স্থানীয়দের সহযোগীতায় জোরপূর্বক চাবি আদায় করে কক্ষে প্রবেশ করা হয়। এ সময় তার কক্ষের ওয়াল কেবিনের একটি ড্রয়ার থেকে আদিলের লাশ উদ্ধার করা হয়। উপস্থিত সকলের সামনে জুনায়েদ এবং খাইরুল খুনের বিষয়টি স্বীকার করেছে। কমিটির সহায়তায় থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার ও ওই ঘটনার সাথে জড়িত থাকার সন্দেহে মাদ্রাসা শিক্ষক জুনায়েদ ও মাদ্রাসার মসজিদের মোয়াজ্জিন খাইরুলকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।

কালীগঞ্জ থানার ওসি একেএম মিজানুল হক জানান, প্রাথমিক সুরতহাল শেষে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ওই ঘটনায় দুইজনকে আসামি করে নিহতের বাবা বাদী হয়ে থানায় অভিযোগ করেছেন। ওই ২জন থানায় আটকও আছে। তবে এ ঘটনায় থানায় মামলা হবে।

পাঠকের মতামত

Comments are closed.