260929

ক্যান্সার সনাক্ত করা হবে নিঃশ্বাস পরীক্ষার মাধ্যমে!

ডেস্ক রিপোর্ট : ‘আমার খাদ্যনালীতে ক্যান্সার হয়েছে। যদিও তেমন কোনো লক্ষণ প্রকাশ পায়নি। তাই জানতাম না, আমি ক্যান্সারে আক্রান্ত। তবে অবিশ্বাস্য হলেও সত্যিই যে, আমার নিঃশ্বাস পরীক্ষা করেই চিকিৎসকরা প্রাথমিক পর্যায়ে ক্যান্সার সনাক্ত করেছেন।’
কথাগুলো বলছিলেন ক্যান্সারে আক্রান্ত ৫৪ বছর বয়সী রেবেকা কোলড্রিক। তিনি অত্যন্ত খুশি যে দ্রুত ক্যান্সার সনাক্ত হয়েছে। এতে করে ক্যান্সার তার শরীরে ছড়ানোর ঝুঁকি অনেকটাই কমে যাবে। ক্যান্সারের মত মারণ ব্যাধি রুখতে হলে প্রাথমিক পর্যায়েই এটি সনাক্ত করতে হবে। নইলে আর রক্ষা নেই! চিকিৎসকদের মতে, প্রাথমিক পর্যায়ে ক্যান্সার সনাক্ত করা গেলে চিকিৎসার মাধ্যমে সম্পূর্ণ সুস্থ করে তোলা সম্ভব রোগীকে।

তবে প্রাথমিক পর্যায়ে ক্যান্সারের উপসর্গগুলো চেনা সম্ভব হয় না। ফলে চিকিৎসা শুরু করতে অনেক দেরি হয়ে যায়। তবে সম্প্রতি একদল ব্রিটিশ গবেষক এমন এক পদ্ধতির আবিষ্কার করেছেন, যার মাধ্যমে শুধুমাত্র নিঃশ্বাস পরীক্ষা করেই ক্যান্সার শনাক্ত করা সম্ভব হবে।

ইংল্যান্ডের কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল ক্যান্সার গবেষক আপাতত এর কার্যকারিতা নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাচ্ছেন। এই গবেষণার কাজে তারা দেড় হাজার মানুষের নিঃশ্বাসের নমুনা সংগ্রহ করেছেন যার মধ্যে অনেকেই ক্যান্সারে আক্রান্ত। এই পরীক্ষা পদ্ধতিতে নিঃশ্বাসের পরীক্ষার পাশাপাশি রক্ত ও মূত্রের নমুনাও পরীক্ষা করা হবে।

ব্রিটিশ গবেষকরা জানাচ্ছেন, মানুষের শরীরের বিভিন্ন কোষে কোনো রকম রাসায়নিক পরিবর্তন ঘটলে ‘ভোলাটাইল অরগ্যানিক কমপাউন্ডস’ নামে এক ধরনের অনু নিঃশ্বাসের মাধ্যমে নিঃসৃত হয়। যদি শরীরে ক্যান্সার বাসা বাঁধে, সেক্ষেত্রে কোষের পরিবর্তন হয় এবং তার ফলে অন্য রকমের অনু তৈরি হয়। যা গন্ধের মাধ্যমে মস্তিষ্কে ভিন্ন বার্তা পাঠায়। তাই এই পরীক্ষা পদ্ধতি কাজে লাগিয়ে নিঃশ্বাসের বায়োপসি করে ক্যান্সার সনাক্ত করার উপায় খুঁজছেন ব্রিটিশ গবেষকরা।

তবে নিঃশ্বাস পরীক্ষার মাধ্যমে ক্যান্সার শনাক্ত করার পদ্ধতি চিকিৎসা বিজ্ঞানে নতুন কিছু নয়। বিগত বেশ কয়েক বছর ধরেই ফুসফুসের ক্যান্সার সনাক্ত করার ক্ষেত্রে এই পদ্ধতিই কাজে লাগাচ্ছেন চিকিৎসকরা। এবার যে কোনো ধরনের ক্যান্সার শনাক্ত করার ক্ষেত্রে এই পদ্ধতিটি কাজে লাগাতে পরীক্ষা করে দেখছেন গবেষকরা।
আশা করা যাচ্ছে, পরীক্ষাটি সফল হলে প্রাথমিক পর্যায়েই ক্যান্সার সনাক্ত করা সম্ভব হবে। যার ফলে দ্রুত রোগীর চিকিৎসা শুরু হবে ও ক্যান্সার প্রতিরোধ সম্ভব হবে। এতে ক্যান্সারে মৃত্যুর সংখ্যাও কমে আসবে।

সূত্র: বিবিসি

পাঠকের মতামত

Comments are closed.