261269

‘শারীরিক প্রতিবন্ধী হয়ে আজ নিজেই তিনি মানুষ গড়ার কারিগর’

ডেস্ক রিপোর্ট : জীবনযুদ্ধে জয়ী প্রতিবন্ধী এক নারী জামালপুরের জেসমিন আক্তার। দুটি পা থেকেও নেই তার। মেধা আর যোগ্যতা কাজে লাগিয়ে এখন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মানুষ গড়ার কারিগর তিনি।

জেসমিন আক্তারের বাড়ি জামালপুরের ইসলামপুরের পচাবহলা গ্রামে। তার বাবা মনজু মিয়া একজন কৃষক। দুই বোন ও এক ভাইয়ের মধ্যে তিনি মেজো সন্তান। জন্মের পাঁচ ছয় মাস পর বাবা মা বুঝতে পারেন যে তিনি শারীরিক প্রতিবন্ধী। পরিবারের সদস্যদের ধারণা, সে হয়তো পোলিও রোগে আক্রান্ত হয়ে শারীরিক প্রতিবন্ধী হয়েছে।

হাঁটার শক্তি নেই জেসমিন আক্তারের দুটি পায়ে। হামাগুঁড়ি দিয়ে তাকে চলাফেরা করতে হয়। অক্লান্ত পরিশ্রমে তিনি লেখাপড়া করে জীবনযুদ্ধে জয়ী হয়েছেন। বর্তমানে তিনি শিক্ষকতা দায়িত্ব পালন করে নিজে এবং পরিবারের সদস্যদের স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন। আর এভাবেই স্কুল-কলেজের গণ্ডি পেরিয়ে নিজেই এখন মানুষ গড়ার কারিগর।

জেসমিন আক্তার বলেন, আমি আট দশ জন স্বাভাবিক মানুষের মতোই পরীক্ষা দিয়ে এই চাকরি পেয়েছি। তিনি পাঁচবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে লেখাপড়া করেছেন। সেখান থেকে প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করে পাঁচবাড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি এবং ইসলামপুর এমএ সামাদ পারভেজ মেমোরিয়াল মহিলা কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন।

সব প্রতিকূলতা জয় করে ২০১৩ সালে প্রতিবন্ধী কোটায় যোগ দেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। বাঁধা হতে পারেনি কোনো প্রতিবন্ধকতাই। সবচেয়ে অবাক করা বিষয় হলো জেসমিন আক্তার যে স্কুলে পড়ালেখা করেছে সেই স্কুলেরই শিক্ষক তিনি। এ বিষয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষক বলেন, শিক্ষাগত যোগ্যতায় সে এখানে যোগ দিয়েছে। এজন্য আমি গর্ববোধ করি।

জেসমিন আক্তারের ছাত্র-ছাত্রীরাও তাকে খুব ভালোবাসে। তার স্নেহসুলভ আচরণে তারা সবাই যেন মুগ্ধ! জেসমিনের কাছে পড়তেও খুব পছন্দ করে তারা। ছাত্রছাত্রীরা বলেন, ম্যাডাম আমাদের বিজ্ঞান ভালো পড়ায় এবং অন্য আর এক ছাত্রী বলেন আমাদের ইংরেজি ভালো পড়ায়।

হুইল চেয়ার থাকলেও সে হামাগুড়ি দিয়ে চলতেই ঢুকতে হয় বিদ্যালয়ে। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জানান, এমন উদ্যমী মানুষের সমস্যা সমাধানে কাজ করবেন তারা। জেসমিন আক্তারের চাওয়া দেশের সবকয়টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানই যেন প্রতিবন্ধীবান্ধব হয়। সূত্র : ডেইলি বাংলাদেশ

পাঠকের মতামত

Comments are closed.