261330

পরীক্ষা দিতে যাওয়ার পথেই দুর্ঘটনা, পরীক্ষা বাদ দিয়ে আক্রান্ত বৃদ্ধকে কোলে নিয়ে হাসপাতালে আলি

ডেস্ক রিপোর্ট : দৃঢ় প্রতিজ্ঞ চোখে স্বপ্নপূরণের ইচ্ছা। পাস করতে হবে কলেজ সার্ভিস কমিশন। সকাল সকাল পরীক্ষা কেন্দ্রের দিকে রওনা দিয়েছিলেন কাথি শ্রীরামপুরের অলিদ আলি। কিন্তু যাওয়ার পথে এক আহত প্রবীণকে বাঁচাতে গিয়ে আর পরীক্ষা দেয়া হলো না । মাই ইন্ডিয়া নিউজ

উলুবেড়িয়ার আলামিন মিশন স্কুলের প্রাণিবিদ্যার অতিথি শিক্ষক শেখ ওলিদ আলি। পরীক্ষা দেয়ার জন্য কাথি থেকে রওনা দিয়েছিলেন কলকাতাগামী বাসে। পরীক্ষাকেন্দ্রের দিকে যাচ্ছেন এমন সময় দেখেন, রাস্তার ধারে এক প্রবীণ পড়ে রয়েছেন । হাঁটুতে, মুখে অল্পবিস্তর চোট । ছেঁড়া লুঙ্গিতে কয়েক ফোঁটা রক্ত । বাইকে যাওয়ার সময় কারা যেন ধাক্কা মেরে গেছে।

সেট পরীক্ষা দিতে যাওয়ার পথে দুর্ঘটনায় আক্রান্ত বৃদ্ধকে কোলে নিয়ে হাসপাতালে পৌঁছে দিয়ে মানবিক মুখ হয়ে উঠলেন কাথির এই যুবক। শেষ পর্যন্ত তার পরীক্ষা দেয়া হয়নি।

পরীক্ষা কেন্দ্রে যাওয়ার পথে মেচেদার কাছে ওলিদ বাইকের ধাক্কায় রক্তাক্ত অবস্থায় কাতরাতে দেখেন এক বয়স্ক ব্যক্তিকে। পথচারীরা অনেকেই ছিলেন, কিন্তু আইনি জটিলতার ভয়ে কেউ সহযোগিতায় জন্য এগিয়ে আসেনি।

পুলিশকে ফোন করে কোন সাড়া পাওয়া যায়নি। কিন্তু নিজের পরীক্ষা থাকা সত্বেও তৎক্ষণাৎ প্রবীণ আহত মানুষটিকে কোলে করে প্রায় এক কিলোমিটার হেটে ‘পপুলার নার্সিংহোমে’ ভর্তি করান ওলিদ।

সেখান থেকে যখন পরীক্ষা কেন্দ্রে যান, তখন দেরি হয়ে যাওয়ার কারণে তাকে পরীক্ষায় বসতে দেয়নি পাশকুড়া বনমালি কলেজ কর্তৃপক্ষ। ঘটনার কথা বলেও অনুনয়বিনয়য়ের পরেও তাকে পরীক্ষা দিতে দেওয়া হয়নি।

ওলিদ বলেন, পরীক্ষায় বসতে পারেননি বলে বিন্দুমাত্র আফসোস নেই। ভবিষ্যত জীবনের জন্য পরীক্ষা দেওয়াটা খুব জরুরী ছিল, কিন্তু একজন দুর্ঘটনাগ্রস্ত মানুষকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়াটা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়েছে। মানুষের পাশে থাকার যে শিক্ষা পেয়েছি, সেইমতো কাজ করতে পেরে খুব ভাল লাগছে।

দুর্ঘটনায় জখম ওই বৃদ্ধের নাম শেখ নুরুজ্জামাল। তার অবস্থা বর্তমানে স্থিতিশীল। ওলিদ যথাসময়ে তাকে নার্সিংহোমে নিয়ে না গেলে ওই বৃদ্ধকে বাঁচানো কঠিন হতো বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।

নেট দুনিয়ায় ভাইরাল হয়েছে ওলিদের কর্মকাণ্ড। তাতে অবশ্য ভেসে যাচ্ছেন না ওলিদ। মৃদু হেসে বলছেন, ‘একজন মানুষ হয়ে মানুষের কর্তব্য পালন করেছি মাত্র। সূত্র : আমাদের সময়.কম

পাঠকের মতামত

Comments are closed.