261378

গলা ভেঙে গেলে কখনোই যে কাজটি করবেন না!

ডেস্ক রিপোর্ট : শীত মানেই নানা অসুখ-বিসুখের আক্রমণ। তবে শীতে বেশি আক্রান্ত হতে হয় সর্দি, কাশি, গলা ব্যথা, গলা ভাঙা ইত্যাদিতে। আর এর থেকে রক্ষা পেতে কত কি না করেন সবাই।

অনেকে আবার গলা ভাঙা সমস্যার সমাধানে গার্গলও করেন। তবে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী এটি মোটেও ঠিক নয়। এই সমস্যা এবং তার প্রতিকার নিয়ে কিছু পরামর্শ দেন নাক-কান-গলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডঃ টিকে হাজরা। যা ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলায় প্রকাশ পেয়েছে। চলুন জেনে নেয়া যাক সেগুলো-

শীতকালে গলা ভাঙে কেন?

নাক হলো আমাদের শরীরের এসি মেশিনের মতো। শীতকালে বাতাসে জলীয়বাষ্প যখন কমে যায়, নাক শরীরে জলীয়বাষ্প ধরে রাখতে শুরু করে। বর্ষাকালে আবার যখন জলীয়বাষ্প বেশি থাকে, তখন নাক অতিরিক্ত জলীয়বাষ্প থেকে শরীরকে দূরে রাখে। শুষ্ক শীতকালে এই গলাকে ভিজিয়ে দেয়ার কাজটা কম হলেই গলা ভেঙে যায়। তার ওপর শীতকালে বাতাস ভারী হওয়ার কারণে ধুলো ময়লা সবই বেড়ে যায়। ফলে দূষণের পরিমাণ বেশি থাকে। এর ফলে এই সময়ে সাইনাস এবং নাকের সংক্রমণ বেশি হয়। শরীরকে ভিজিয়ে দেয়ার কাজটাও কম হয়। তার ফলে গলাতেও সংক্রমণ হয়। স্বরযন্ত্রীতে লুব্রিকেশন কমে গেলে ওই জায়গাটা ঘষা লেগে খসখসে হয়ে যায়। তার ওপর যাদের ঘরের এসি মেশিনে ঠাণ্ডা লাগার ধাত রয়েছে, রোদে ঘুরলে মাথা ব্যথা হয়, তাদের কিন্তু গলা ভেঙে যাওয়ার ধাত রয়েছে।

গলা ভেঙে গেলে ভুলেও গার্গল করবেন না

গলা ভাঙলেই অনেকে বলে থাকেন গার্গল করতে। কিন্তু এটা ভুল। গার্গলে গলার বিশ্রাম হয় না। সাধারণত গলার বিশ্রাম নেয়া খুব দরকার। আর গলার জন্য গরম পানির ভাপ নিলে অনেকটা উপকার হয়, কারণ শ্বাসনালীতে গরম পানি না গেলেও গরম বাষ্পটা গিয়ে লুবরিকেন্ট-এর কাজ করে। ফলে গলায় আরাম হয়।

গরম পানি খেলেও উপকার হয়। চা-কফিও পান করা যেতে পারে। কিন্তু হাইপার অ্যাসিডিটি আছে, এমন (ল্যারিঙ্গো ফ্যারিঞ্জাল রিফ্লাক্স ডিসিজ) রোগীদের কিন্তু চা-কফি বেশি খেলে গলার আশপাশ অনেক বেশি শুকনা হয়ে যায়। তাদের রাতের খাবার খাওয়ার পর অন্তত দু’ঘন্টা পরে শুতে যাওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়। আর খুব ভারী, মশলাদার খাবার রাতে না খাওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়। যারা পেশাগত ভাবে গান করেন, তাদের একটানা ৫ টা গান গাইতে না করেন এবং গানের আগে পরে ভেপার নিতে বলা হয়।

কত দিন টানা গলা ভাঙা থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে?

আন্তর্জাতিক নিয়ম অনুযায়ী জেনেরাল ফিজিশিয়ানদের বলা থাকে রোগীর ১৫ দিনের বেশি গলা ভাঙা থাকলে ইএনটি সার্জনের কাছে রেফার করা উচিত। যিনি আয়না বা যন্ত্রপাতি দিয়ে স্বরযন্ত্র বা ভোকাল কর্ডটা পরীক্ষা করতে পারবেন। অনেক সময় আমরা যেটাকে ছোট পলিপ বা দানা ভাবছি, সেটা ল্যারিঙ্গাল ক্যানসার হতে পারে। বায়োপ্সিতে যদি ক্যানসার ধরা পড়লে তা রেডিয়েশনে ১০০ শতাংশ সেরে যায়। কারণ প্রাথমিক স্তরে তা সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়েনি।

সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা

পাঠকের মতামত

Comments are closed.