262229

আওয়ামী লীগের ৬ কার্যালয় ৪৯ লিটার দুধ দিয়ে পবিত্র করা হল!

ডেস্ক রিপোর্ট : যশোরের কেশবপুরে ৪৯ লিটার দুধ দিয়ে ধুয়ে ‘পবিত্র’ করা হল স্থানীয় আওয়ামী লীগের ছয়টি অফিস। বলা হচ্ছে, এই অফিসগুলো সম্প্রতি প্রয়াত যশোর-৬ আসনের সংসদ সদস্য ইসমাত আরা সাদেকের সমর্থিত ছাত্রলীগ নেতাদের দখলে ছিল।

মঙ্গলবার দুপুরে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের নিয়ে পুলিশ যখন এসব কার্যালয়ে অভিযান চালাচ্ছিল, তখন সেখান থেকে দেশীয় বেশকিছু অস্ত্রশস্ত্র ও ফেনসিডিলের বোতল উদ্ধার করা হয়।

উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রাবেয়া ইকবাল বলেন, সদ্য প্রয়াত সাংসদ ইসমাত আরা সাদেকের সাথে থাকা ছাত্রলীগের কিছু সন্ত্রাসী নেতা-কর্মী এলাকায় হাতুড়ি বাহিনী ও গামছা বাহিনী নামে পরিচিতি পেয়েছিল। তারা উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের নীচে কৃষক লীগের অফিসটি দখলে নিয়ে মাছের ঘের দখল, মাদক ব্যবসা ও সেবন এবং চাঁদাবাজি করতো। এ আসনের উপনির্বাচনে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদার দলীয় মনোনয়ন পাওয়ায় হাতুড়ি বাহিনী ও গামছা বাহিনীর সদস্যরা গা-ঢাকা দিয়েছে।

রাবেয়া ইকবাল বলেন, মঙ্গলবার দুপুরে পুলিশের উপস্থিতিতে হাতুড়ি বাহিনীর দখলে থাকা অফিস খুলে ধোয়া-মোছার উদ্যোগ নেওয়া হয়। এসসময় পুলিশ কক্ষটি থেকে দুটি ধারালো রেকি, চারটি তলোয়ার, একটি কিরিচ ও ফেনসিডিলের সাতটি বোতল উদ্ধার করে। এরপর উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগ গরুর দুধ দিয়ে কক্ষটি ধুয়ে ফেলে। এরপর পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কার্যালয়ও দুধ দিয়ে ধুয়ে পবিত্র করেন আওয়ামী লীগের নেতারা।

উপজেলা কৃষকলীগের অফিস ধুতে ৫ লিটার, গৌরিঘোনা ইউনিয়নের ভেরচিবাজার আওয়ামী লীগ কার্যালয় ধুতে ১০ লিটার, পাঁজিয়া ইউনিয়নের গড়ভাঙ্গা আওয়ামী লীগ কার্যালয় ধুতে ৫ লিটার, কেশবপুর সদর ইউনিয়নের বালিয়াডাঙ্গা আওয়ামী লীগ কার্যালয় ধুতে চার লিটার, সুফলাকাটি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ কার্যালয় ধুতে ২০ লিটার ও বিদ্যানন্দকাটি ইউনিয়নের ভান্ডারখোলা আওয়ামী লীগ কার্যালয় ধুতে ৫ লিটার গরুর দুধ ব্যবহার করা হয়।

রাবেয়া ইকবাল বলেন, উপজেলা কৃষকলীগের যে অফিসটি দখলমুক্ত করে দুধ দিয়ে ধোয়া হয়েছে সেটি আজ থেকে উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের কার্যালয় হিসেবে ব্যবহৃত হবে।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এসএম রুহুল আমিন বলেন, ২০১৬ সালে হাতুড়ি বাহিনীর প্রধান আজিজের নেতৃত্বে উপজেলা কৃষকলীগের অফিসটি জোর করে দখল করে নেওয়া হয়। মঙ্গলবার কার্যালয়টি উদ্ধার করার পর সেখানে অস্ত্র দেখে পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ তা উদ্ধার করে নিয়ে যায়। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা বলেন, গত উপজেলার নির্বাচনের সময় স্থানীয় আওয়ামী লীগ কার্যালয় থেকে বঙ্গবন্ধু ও দলীয় সভানেত্রীর ছবি অপসারণ করেছিল কিছু সন্ত্রাসী। নেতা-কর্মীদের মাঝে দীর্ঘদিন সেই ক্ষোভ ছিল। সেই ক্ষোভ থেকেই আবেগের বশবর্তি হয়ে নেতা-কর্মীরা কার্যালয়গুলো দুধ দিয়ে ধুয়ে ফেলেছে।

কেশবপুর থানার ওসি মো. সাঈদ বলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক দাজী গোলাম মোস্তফার কাছ থেকে খবর পেয়ে ওই কার্যালয়ে অভিযান চালানো হয়। এসময় সেখানকার একটি ঘরের সানশেডের ওপর থেকে দুটি রামদাসহ কয়েকটি ধারালো অস্ত্র ও ফেনসিডিলের খালি বোতল উদ্ধার করা হয়। সূত্র : বাংলাদেশ প্রতিদিন

পাঠকের মতামত

Comments are closed.