এই নারীর পুরো শরীরে ১০ হাজারেরও বেশি ছিদ্র, শুধু মুখেই ৪৬২টি
ডেস্ক রিপোর্ট : কথায় বলে, শখের তোলা আশি টাকা! আসলেও আমরা বুঝি তাই। সাধারণ মানুষদের স্বপ্ন আর শখ সবই হয়ে থাকে সাধারণ। আর অসাধারণ মানুষদের শখগুলোও যেন তাদের মতো। ঠিক যেমন- ব্রাজিলের এক নারী, তিনি নিজের শরীরে ১০ হাজার বার ছিদ্র করেছেন। এ কারণে গিনেস বুক অব দ্য ওয়ার্ল্ডে নাম লিখিয়েছেন তিনি।
ব্রাজিলের স্কটল্যান্ডের এডিনবার্গে বসবাসকারী ওই নারীর নাম ইলাইন ডেভিডসন। তাকে ভালোবেসে সবাই কালো রাজকন্যা বলে ডাকে। তিনি শখের বশে ১৯৯৭ সালে নিজের শরীরে ২৮০টি ছিদ্র করে অলঙ্কার পরিধান করেন। যা অন্য কোনো মানুষের পক্ষে বেশ কঠিন।
বর্তমানে তার মুখেই ৪৬২ টি ছিদ্র। যার মধ্যে ২৯২ টি ছিদ্র ছিল ঠোঁটে এবং জিহ্বায়। অবাক হওয়ার বিষয় হলো, সে তার একটি আঙুল অনায়াসেই জিহ্বার মাঝখানের ছিদ্রতে ঢুকাতে পারেন। এছাড়া ইলাইন ডেভিডসন তার যৌনাঙ্গে ও এর আশেপাশে ৫০০টিরও বেশি ছিদ্র করেছেন। সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে তিনি ছিদ্রগুলোতে যেসব অলঙ্কার পরেন সেগুলোর ওজন মোট তিন কেজি। ইলাইন তার মুখে সবুজ, নীল ও হলুদ রঙের রেখা টানেন। এতে করে তার অলঙ্কারগুলো আরো ফুটে ওঠে।
জেনে অবাক হবেন, তিনি এতগুলো ছিদ্র করেও সন্তুষ্ট নন। আর এ কারণেই তিনি তার শরীরের ছিদ্রের পরিমাণ বাড়াতে থাকেন। ২০০৮ সালে মে মাসে তার ছিদ্রের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৫ হাজার ৯২০ টি তে। এরপর তা বেড়ে ২০০৯ সালে ফেব্রুয়ারি মাসে পৌঁছায় ৬ হাজার ৫টি তে।
ইলাইন বলেন, শরীরে জুড়ে ট্যাটু ও ছিদ্র করার বিষয়টি আমার ততটা পছন্দের ছিল না। তবে ভাবলাম এই পায়ার্সিংয়ের (ছিদ্র করা) মাধ্যমে যদি নামকরা একজন হতে পারি! আমি রেকর্ড ভাঙতে চেয়েছিলাম। তবে আমার পরিবার কখনো আমাকে উৎসাহ দেয়নি। কারণ তারা এসব পছন্দ করেন না। তবে আমি ঠিকই আমার কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পেরেছি। বিশ্বের সবাই এখন আমাকে চেনে। যেদিন আমি গিনেস বুক অব দ্য ওয়ার্ল্ডে নাম লিখিয়েছি সেদিন আমার চেয়ে বেশি খুশি কেউই হননি।
এই নারী শুধু শরীরে একাধিক ছিদ্র করেই থেমে নেই। তিনি খালি পায়ে কাঁচের টুকরার ওপরে হাঁটতে পারেন। আর এ কাজেও নাকি তিনি কোনো ব্যথা অনুভব করেন না। ইলাইন বিভিন্ন থিয়েটারে সময় কাটান। তবে তিনি কখনো মদ বা ধূমপান কিছুই করেন না। ইলাইন ডেভিডসনকে সর্তক করে একজন চিকিৎসক বলেছেন, এতো সব ছিদ্রের কারণে তিনি হেপাটাইটিস বা এইডসের মতো ভয়াবহ রোগ আক্রান্ত হতে পারেন।
২০১১ সালে, তিনি ডগলাস ওয়াটসন নামক এক ব্যক্তিকে বিয়ে করেন। বিবাহের একবছর পরই অর্থাৎ ২০১২ সালে তার বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে। তারপর থেকেই তিনি স্কটল্যান্ডেই থাকেন। গত দশ বছর তিনি নিজের দেশে যাননি। এমনকি তিনি ঘরের বাইরেও বেশি বের হন না। বের হলে তিনি মুখে মাস্ক ব্যবহার করেন। কারণ তার সারা মুখে গয়নায় ভরা। চুরি হয়ে যাওয়ার ভয় পান তিনি। ব্রাজিলে তার নিজস্ব একটি পার্লার রয়েছে। সেখানেই কাজ করেন এবং সময় কাটান ইলাইন।
সূত্র: ডেইলিমেইল