262244

করোনায় বেশি ঝুঁকিতে বয়স্ক ও অসুস্থরা, বলছে জরিপ ব্যবস্থা

ডেস্ক রিপোর্ট : চীনে প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের ফলে সৃষ্ট কোভিড-১৯ রোগে মৃত ও আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। গত সোমবার পর্যন্ত দেশটিতে এ রোগে মারা গেছেন ১৮৬৮ জন; আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭২ হাজার ৩৫৫ জনে। এর মধ্যে সোমবার ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছেন ৯৩ জন আর নতুন করে ১৮০৭ জন আক্রান্ত হয়েছেন।

এদিন কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান করোনা ভাইরাসের উৎসভূমি হিসেবে পরিচিতি পাওয়া চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরের প্রধান চিকিৎসাকেন্দ্র উচ্যাং হাসপাতালের পরিচালক লিউ ঝিমিংও। মুহুর্মুহু করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসায় অন্যান্য চিকিৎসক ও নার্সদের সঙ্গে তিনিও দেড় মাসের বেশি সময় ধরে যুদ্ধ করে চলেছিলেন।

কিন্তু এর মধ্যেই ৫১ বছর বয়সী লিউয়ের শরীরেও হানা দেয় এ ভাইরাস। অবশেষে সোমবার মারা যান এ চিকিৎসক। এর মধ্যেই এদিন চীনের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেন্টেশন (সিসিডিসি) ৪৪ হাজারের বেশি কোভিড-১৯ আক্রান্ত ব্যক্তির বিস্তারিত নিয়ে একটি জরিপের ফল প্রকাশ করেছেন। সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার পর এটাই এ রোগ নিয়ে বৃহত্তম জরিপ।

বিবিসি জানিয়েছে, জরিপের তথ্যে বলা হচ্ছে, ৮০ শতাংশ ক্ষেত্রেই করোনা আক্রান্ত রোগী স্বল্প ঝুঁকিতে আছেন। যারা বেশি ঝুঁঁকিতে আছেন, তাদের মধ্যে বয়স্ক ও অন্যান্য রোগে অসুস্থরা রয়েছেন। এ ছাড়া এসব রোগীর চিকিৎসা করা চিকিৎসক, নার্সরাও ঝুঁকিতে আছেন। ডা. লিউ ঝিমিংয়ের মৃত্যু এর উদাহরণ। এ পর্যন্ত যে কজন স্বাস্থ্যকর্মী মারা গেছেন, ডা. লিউ তাদের মধ্যে সবচেয়ে সিনিয়র স্বাস্থ্য কর্মকর্তা।

সিসিডিসির প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, হুবেই প্রদেশে কোভিড-১৯ রোগে মৃত্যুহার ২.৯ শতাংশ, যেখানে গোটা চীনে এ হার ০.৪ শতাংশ। সব মিলিয়ে কোভিড-১৯ রোগে মৃত্যুহার ২.৩ শতাংশ।

এদিকে কোভিড ১৯-এর চিকিৎসা পদ্ধতি নিয়ে এরই মধ্যে বিভিন্ন দেশের বিজ্ঞানীরা গবেষণা শুরু করেছেন। এ ভাইরাস আক্রান্তদের চিকিৎসায় আরেক প্রাণঘাতী ভাইরাস এইচআইভির ওষুধ প্রয়োগের পরিকল্পনা করেছে জাপান। তবে চীনের ন্যাশনাল বায়োটেক গ্রুপের বিজ্ঞানীরা এমন এক চিকিৎসা পদ্ধতি প্রয়োগের কথা জানিয়েছেন, যাতে নাকি ১২ থেকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে করোনার সংক্রমণে সাফল্য পাওয়া সম্ভব।

নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, নতুন এ পদ্ধতিকে এরই মধ্যে স্বীকৃতি দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। এতে করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর সুস্থ হয়ে গেছেন এমন ব্যক্তির রক্তের প্লাজমা সংগ্রহ করে তা প্রবাহিত করা হয় নতুন আক্রান্তের দেহে। যার মাধ্যমে সময়মতো নতুন রোগীর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বাড়িয়ে তোলা সম্ভব।

সাংহাই পাবলিক হেলথ ক্লিনিক্যাল সেন্টারের সহপরিচালক অধ্যাপক লু হংঝৌ বলেছেন, এখন পর্যন্ত তাদের প্রতিষ্ঠানে ১৮৪ জন কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন। এর মধ্যে ১৮ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তবে তারা নতুন এই প্লাজমা থেরাপি ব্যবহারে একটি বিশেষায়িত ক্লিনিক স্থাপন করেছেন।

কোভিড-১৯ আক্রান্তদের মধ্যে যারা সুস্থ হয়েছেন তাদের রক্ত দিতে এখন আহ্বান জানানো হচ্ছে। দাতা রক্ত দিতে রাজি হলেই তাকে প্রথমে পরীক্ষা করা হচ্ছে ওই ব্যক্তি হেপাটাইটিস বি বা সির মতো কোনো রোগে আক্রান্ত কিনা। পরে তার রক্তের প্লাজমা ব্যবহার করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে নতুন আক্রান্তকে। এ চিকিৎসা পদ্ধতিকে অত্যন্ত কার্যকর বলেও দাবি করেছেন তিনি। সূত্র : আমাদের সময়

পাঠকের মতামত

Comments are closed.