262967

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে পাচার হচ্ছে মাস্ক, হ্যান্ড গ্লাভস, হ্যান্ড স্যানিটাইজার

ডেস্ক রিপোর্ট: বর্তমানে সারা বিশ্বে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে চীনে উদ্ভূত নতুন রহস্যময় প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস। গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর চীনের উহানে প্রথম এ ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। বর্তমানে বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এ রোগ ছড়িয়ে পড়েছে। এখন পর্যন্ত এ রোগের প্রতিষেধক আবিষ্কার হয়নি। রোগটি প্রতিরোধে ফেস মাস্ক, হ্যান্ড গ্লাভস ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করা হয়। এ রোগকে পুঁজি করে একটি শ্রেণি ফায়দা লোটার চেষ্টা করছে। সূত্র : শেয়ার বিজ

একদিকে কৃত্রিম সংকট দেখানো হচ্ছে, অন্যদিকে বেশি মুনাফার আশায় পাচার করা হচ্ছে। বাংলাদেশ থেকে বিমানবন্দর ও স্থলবন্দর দিয়ে লাগেজ পার্টির মাধ্যমে এসব পণ্য বিদেশে পাচার হচ্ছে বলে জানিয়েছে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর। পাচার রোধে ব্যবস্থা নিতে সম্প্রতি কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরকে চিঠি দিয়েছেন ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক। এরপর থেকে নজরদারি বাড়িয়েছে কাস্টমস গোয়েন্দা। এরই মধ্যে দু’দফায় ফেস মাস্ক জব্দ করা হয়েছে। তবে এসব পণ্যের পাচার রোধে সব কাস্টম হাউসকে ব্যবস্থা গ্রহণ ও করণীয় বিষয়ে নির্দেশনা দিতে এনবিআর চেয়ারম্যানকে অনুরোধ জানিয়ে চিঠি দিয়েছে কাস্টমস গোয়েন্দা। এরই পরিপ্রেক্ষিতে এনবিআর থেকে সব কাস্টম হাউসকে চিঠি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

সূত্র জানায়, ২৮ জানুয়ারি ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মাহবুবুর রহমান কাস্টমস গোয়েন্দার মহাপরিচালক ড. সাহিদুল ইসলামকে চিঠি দেন। চিঠিতে ফেস মাস্ক, হ্যান্ড গ্লাভস ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার পাচার রোধে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে বলা হয়, ‘সম্প্রতি চীন, থাইল্যান্ড, হংকংসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ দেখা দিয়েছে। ফলশ্রুতিতে বাংলাদেশ হতে অবৈধভাবে বা চোরাইপথে লাগেজ পার্টির মাধ্যমে ফেস মাস্ক, হ্যান্ড গ্লাভস ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার পাচার হচ্ছে বলে জানা গেছে। পাচার রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করা হলো।’

এরপর ২৯ জানুয়ারি পাচার রোধে ব্যবস্থা নেয় কাস্টমস গোয়েন্দা। ব্যবস্থা নিতে তাদের সব আঞ্চলিক কার্যালয় ও কাস্টমস স্টেশনকে এ বিষয়ে সতর্ক থাকা এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়ে চিঠি দেন কাস্টমস গোয়েন্দার মহাপরিচালক ড. মো. সাহিদুল ইসলাম। যার মধ্যে রয়েছে: কাস্টমস গোয়েন্দার চট্টগ্রাম, সিলেট, খুলনা, রাজশাহী আঞ্চলিক কার্যালয়, সব বিমানবন্দর এয়ারফ্রেইট, আইসিডি, বেনাপোল, পানগাঁও, রংপুর, ময়মনসিংহ, টেকনাফ, সোনামসজিদ, মোংলা, ভোমরা, হিলি, বুড়িমারী ও আখাউড়া স্থলবন্দর।

চিঠি পাঠানোর পর নড়েচড়ে বসেন কাস্টমস গোয়েন্দা কর্মকর্তারা। বাংলাদেশ থেকে বিদেশে গমনেচ্ছু লাগেজ পার্টির ওপর নজরদারি বাড়ানো হয়। সম্প্রতি শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এক যাত্রীর লাগেজ থেকে ১২ হাজার পিস ফেস মাস্ক জব্দ করা হয়। তল্লাশি করে অপর একটি লাগেজ থেকে ২২ হাজার পিস ফেস মাস্ক জব্দ করা হয়। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিয়েছেন কাস্টমস গোয়েন্দা কর্মকর্তারা। এছাড়া লাগেজ পার্টির বিষয়েও তৎপরতা শুরু হয়েছে।

কাস্টমস গোয়েন্দা সূত্র জানায়, প্রতিটি বিমানবন্দর ও স্থলবন্দরে লাগেজ পার্টি সক্রিয়। কাস্টমস গোয়েন্দার জনবল সীমিত। এ কারণে ভালোভাবে নজরদারি করা সম্ভব হয় না। বিমানবন্দর ও স্থলবন্দরে কাস্টমস কর্মকর্তার সংখ্যা বেশি থাকে। সেজন্য এসব পণ্য পাচার রোধে গত ৯ ফেব্রুয়ারি সব কাস্টম হাউসকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ ও করণীয় বিষয়ে নির্দেশনা দিতে কাস্টমস গোয়েন্দার মহাপরিচালক এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিমকে চিঠি দেন।

চিঠি পাওয়ার পর সব কাস্টম হাউসকে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে চিঠি দেওয়ার নির্দেশ দেন এনবিআর চেয়ারম্যান। আগামী দু’একদিনের মধ্যে সব কমিশনারের কাছে এ চিঠি পৌঁছে যাবে।

এ বিষয়ে কাস্টমস গোয়েন্দার এক কর্মকর্তা বলেন, আমরা নজরদারি বৃদ্ধি করেছি। এরই মধ্যে দু’দফায় ৩৪ হাজার ফেস মাস্ক জব্দ করা হয়েছে। আমাদের জনবল সীমিত, সেজন্য সব কাস্টম হাউসকে নির্দেশনা দিতে এনবিআরকে চিঠি দিয়েছি। কাস্টম হাউসের সঙ্গে আমরা যৌথভাবে কাজ করলে পাচারকারী চক্র সুবিধা করতে পারবে না।

 

পাঠকের মতামত

Comments are closed.