193620

ফয়জুলের মোবাইলেই কী জমা ‘সব রহস্য’

ডেস্ক রিপোর্ট  : শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবালের ওপর হামলার দু’দিন পার হয়েছে। ইতোমধ্যে আটকের পর হামলাকারী ফয়জুল ইসলামের (২৫) ব্যবহৃত কম্পিউটার জব্দ করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তবে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটির কোনো সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না।গত শনিবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তমঞ্চে অধ্যাপক জাফর ইকবালের ওপর হামলার পরপরই বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা ধরে ফয়জুলকে গণপিটুনি দেন। পরে রাতে র‍্যাব তাকে হেফাজতে নয়। কিন্তু, সে সময় তার সঙ্গে কোনো মোবাইল ফোন পায়নি র‍্যাব। এমনকি পুলিশও জানে না ফয়জুলের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি এখন কোথায়!

আর এখানেই রহস্যের গন্ধ পাচ্ছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী থেকে শুরু করে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। শাবিপ্রবির শিক্ষকদের দাবি, এটা বড় কোনো চক্রান্ত। হয়তো পরিকল্পিতভাবেই ফয়জুল মোবাইল সঙ্গে আনেননি। অথবা তার সহযোগীরা ঘটনার পরপরই সেটি সরিয়ে ফেলেছে।

ঘটনার দু’দিন পরও মোবাইল উদ্ধার না হওয়াকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গাফিলতি হিসেবেই দেখছেন তারা।

শিক্ষকেরা এও বলছেন, তর্কের খাতিরে না হয় ধরেই নেয়া যায় ফয়জুল মোবাইল ফোন ব্যবহার করেন না। কিন্তু, তার বিশ্বাসযোগ্যতা কোথায়? যার বাড়িতে কম্পিউটার রয়েছে, তার কাছে মোবাইল না থাকাটা অস্বাভাবিক।

তারা বলেন, মোবাইল ফোনটি দ্রুত উদ্ধার করে কললিস্ট পরীক্ষা করলে হয়তো হামলার সব রহস্য বের হয়ে আসবে।

এ বিষয়ে র‍্যাব-৯ এর সহকারী পরিচালক ও সিনিয়র এএসপি মাঈন উদ্দিন চৌধুরী পরিবর্তন ডটকমকে বলেন, ‘শনিবার রাতে ফয়জুলকে উদ্ধারের সময় আমরা তার কাছে কোনো মোবাইল পাইনি। শুধুমাত্র একটি সাইকেলের চাবি ও ছোরা পাওয়া গেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘হামলাকারীর ব্যবহৃত মোবাইলটি কোথায়, তা খুঁজে দেখা দরকার। এতে অনেক তথ্য লুকায়িত থাকতে পারে। পুলিশ হয়তো বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে।’

সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের জালালাবাদ থানার ওসি ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম  বলেন, ‘ফয়জুলকে র‍্যাব আমাদের কাছে হস্তান্তর করলেও সে সময় কোনো মোবাইল ফোন দেয়া হয়নি।’

তিনি বলেন, ‘সম্ভাব্য সব অপশন হাতে রেখেই আমরা ফয়জুলের মোবাইল ফোনের সন্ধান করছি। আমরাও ধারণা করছি, কল লিস্ট অনেক রহস্যের জট খুলে দেবে।’

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইইই বিভাগের শিক্ষক জীবেশ কান্তি তালুকদার পরিবর্তন ডটকমকে বলেন, ‘হামলার পরপর আমরা তার কাছে কোনো মোবাইল পাইনি। ধারণা করছি, এত বড় ঘটনা একজনের পক্ষে করা সম্ভব নয়। হয়তো তার আরও সহযোগী ছিল। পরিকল্পনামাফিক কাজ করার কারণে ফয়জুল হয়তো মোবাইল ফোন সঙ্গে আনেননি।’

এছাড়া শাবিপ্রবির শিক্ষার্থীরা জানান, হামলার পর ফয়জুলকে শিক্ষার্থীরা বেধড়ক পিটুনি দেয়। তার সঙ্গে কোনো মোবাইল থাকলে হয়তো পড়ে গিয়ে তা বেহাত হয়ে গেছে। অথবা তার কোনো সহযোগী সেটি শুরুতেই সরিয়ে ফেলেছে।

উল্লেখ্য, গত শনিবার বিকেলে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তমঞ্চে অধ্যাপক ড. জাফর ইকবালের মাথার পেছনে ছুরিকাঘাত করেন ফয়জুল ইসলাম নামের এক যুবক।

পরে উপস্থিত শিক্ষার্থীরা তাকে ধরে গণপিটুনির পর পুলিশের কাছে সোপর্দ করে। পুলিশ এ ঘটনায় দায়ের মামলায় ফয়জুল ইসলামকে গ্রেফতার করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছে।

আর অধ্যাপক জাফর ইকবালকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) ভর্তি করা হয়েছে।

হামলার ঘটনায় ফয়জুল ইসলামকে আসামি করে জালালাবাদ থানায় মামলা হয়েছে। আর ওপর হামলা ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি করেছে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

ইতোমধ্যে অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবালের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা দুই কনস্টেবলকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।

উৎসঃ poriborton

পাঠকের মতামত

Comments are closed.