196486

স্ত্রী-সন্তান থাকা সত্ত্বেও নবম শ্রেণির ছাত্রীকে বিয়ে করলেন ইউপি সদস্য

পূর্ব পশ্চিম :  মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার পুর্ব এনায়েতনগর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মো. জাহাঙ্গীর মোল্লা স্ত্রী থাকা সত্ত্বেও তার অনুমতি ছাড়া স্কুলপড়ুয়া এক মেয়েকে বিয়ে করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

বাল্য বিবাহ করায় স্কুল সার্টিফিকেট সহ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আমিনুল ইসলামের নিকট বিচার চেয়ে আবেদন করেছেন প্রথম স্ত্রী হাজেরা বেগম। গত কয়েকদিন ব্যাপারটি জানাজানি না হলেও মঙ্গলবার (৪ ডিসেম্বর) সকাল থেকে মেম্বারের বাল্য বিবাহ নিয়ে এলাকাসহ প্রতিটি চায়ের দোকানে আলোচনা-সমালোচনা চলছে।

ভুক্তভোগি পরিবারের অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ১৯৯৯ সালে চর আলিপুর গ্রামের ইউপি সদস্য মো. জাহাঙ্গীর মোল্লার সাথে মৃত হেলাজ উদ্দিন সরদার মেয়ে মোসা. হাজেরা বেগমের বিয়ে হয়। বিয়ের পরে তাদের ৩ সন্তান জন্ম গ্রহণ করে। বড় ছেলে এবার এসএসসি পরীক্ষার্থী। হাজেরা বেগমের বাবার দান করা জমিতে বসত ঘর নির্মাণ করে তারা বসবাস করে। গত অক্টোবর মাসের শেষ দিকে ভাটোবালী গ্রামের শহিদুল ইসলামের মেয়ে বাশঁগাড়ী ইউনিয়নের ভাটোবালী গ্রামের আবদুর রহমান মোল্লা বিদ্যাপিট এর নবম শ্রেণির ছাত্রী মোসা. আয়শাকে বিয়ে করে জাহাঙ্গীর মোল্লা বাড়ীতে নিয়ে আসে। দ্বিতীয় স্ত্রীকে বাড়ি নিয়ে আসার প্রতিবাদ করলে প্রথম স্ত্রী হাজেরা বেগম ও তার সন্তানদের ঘর থেকে বের করে দেয় বলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আমিনুল ইসলামের নিকট বাল্য বিবাহ ও বড় স্ত্রীর বিনা অনুমতিতে বিবাহ করা ও ঘর থেকে বের দেওয়ার বিচার চেয়ে ২৬ নভেম্বর লিখিত অভিযোগ করেন। প্রথম স্ত্রীর অভিযোগের ভিত্তিতে ২ ডিসেম্বর একটি শুনানি হয়। এরপর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ৭ দিনের মধ্যে বয়সের সত্যতা দেয়ার সময় বেধে দিয়েছেন। এছাড়া প্রথম স্ত্রীর অনুমতি ছাড়া বিয়ে করার কারণে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে ৭দিন শেষ হওয়ার পর।

বিনা অনুমতিতে দ্বিতীয় বিয়ে ও ঘর থেকে বের করে দেওয়ার ব্যাপারে জানতে চাইলে প্রথম স্ত্রী হাজেরা বেগম বলেন, আমার স্বামী বিনা অনুমতিতে বিয়ে করেছে। এবং তাও আবার বাল্য বিয়ে, আমি প্রতিবাদ করলে ছেলে-মেয়েসহ আমাদের ঘর থেকে বের করে দেয়। আমি এখন আমার ছেলে মেয়ে নিয়ে কি করবো জানি না। ইউনিও স্যারের কাছে দরখাস্ত করেছি। আমি এর সুষ্ঠ বিচার চাই।

দ্বিতীয় বিয়ে বাল্য ও প্রথম স্ত্রী-সন্তানদের ঘর থেকে বের করে দেওয়ার ব্যাপারে অভিযুক্ত ইউপি সদস্য মো. জাহাঙ্গীর মোল্লা তার ব্যবহৃত ফোন রিসিভ না করে, অন্য কাউকে দিয়ে রিসিভ করিয়ে বলেন মেম্বার যাকে বিয়ে করেছে তার বয়স ১৯ বছর। তাছাড়া মেম্বারের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করা হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। মেম্বারের সাথে কথা বলতে চাইলে সে জানায় সে কাছে নেই ফোন নিয়ে আমি এখন কালকিনি এসেছি। তাছাড়া এই ব্যাপারে বিস্তারিত জানাতে চাইলে সে বলে বলে আপনার মাথা খারাপ হয়ে গেছে।

এ ব্যাপারে কালকিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আমিনুল ইসলাম জানান, পূর্ব এনায়েতনগরের ইউপি সদস্য মো. জাহাঙ্গীর মোল্লা প্রথম স্ত্রী থাকা সত্ত্বেও আবারও ৯ম শ্রেণির এক ছাত্রীকে বিয়ে করার অভিযোগ পেয়েছি। তবে ইউপি সদস্য জানিয়েছেন তার ওই স্ত্রীর বয়স ১৯ বছর। কিন্তু জেএসসির মূল সনদপত্রে তার বয়স ১৪ বছর। তাই সাতদিনের মধ্যে যদি সনদপত্রের বয়স পরিবর্তন করে আনতে না পারে, তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এছাড়াও প্রথম স্ত্রীর বিনা অনুমতিতে বিয়ে করা কারণে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

উৎসঃ purboposhchim

পাঠকের মতামত

Comments are closed.