199936

প্রেমের জালে ফাঁসিয়ে পাকিস্তানে তথ্য পাচার !

পরণে সবুজ শাড়ি। চুলটা উল্টো করে বাঁধা। আর মুখে মিষ্টি একটা হাসি। এই হাসিতেই ফেঁসে গিয়েছিলেন এক ভারতীয় সেনা। ‘এক’ বললে অবশ্য কিছুই বলা হয় না। আসলে ফেঁসে গিয়েছিলেন ৫০ জন ভারতীয় সেনা। আর এই সেনাদের মারফতই বাহিনীর গোপন তথ্য পাকিস্তানে চালান করে দিচ্ছিল এই পাকিস্তানি গুপ্তচর। সম্প্রতি তথ্য পাচারের সময় এক জওয়ানকে হাতেনাতে গ্রেফতার করেছে রাজস্থান পুলিশ। আর এর পরেই সামনে আসে এই চক্র।

ওই সেনার নাম সোমবীর সিংহ। সোমবীর বর্তমানে জয়সলমীরে রয়েছেন। তাঁকে জেরা করেই ওই মহিলার কথা জানতে পারে সেনা গোয়েন্দারা। সোমবীর জানিয়েছেন, ওই মহিলার নাম অনিকা চোপড়া। ২০১৬ সালে ফেসবুকেই অনিকার সঙ্গে তাঁর পরিচয়। অনিকাই প্রথমে তাঁকে বন্ধুত্বের অনুরোধ পাঠায়। পরে তার থেকে সোমবীর জানতে পারেন, অনিকা মিলিটারি নার্সিং-এর আর্মি ক্যাপ্টেন। একজন আর্মি অফিসার যেচে তাঁর সঙ্গে বন্ধুত্ব করতে চাইছে, আপ্লুত হয়ে পড়েন সোমবীর।

এভাবেই শুরু। তারপর তাঁদের দু’জনের মধ্যে যত কথোপকথন এগিয়েছে, ততই ঘনিষ্ঠ হয়েছে সম্পর্ক। এরই ফাঁকে কথার ফাঁদে ফেলে সোমবীরের থেকে নানা তথ্য জেনে নিচ্ছিল অনিকা। ট্যাঙ্কের ছবিও পাঠাতে বলত। প্রেমে মগ্ন সোমবীরও নির্দ্বিধায় তার কথা মেনে চলত। এমনকী সোমবীর স্ত্রীকে ডিভোর্স দেবে বলেও মনস্থির করে ফেলেছিল। পরে যখন সোমবীর জানতে পারে, তখন আর এই ফাঁদ থেকে বেরিয়ে আসতে পারেননি। তাঁকে ব্ল্যাকমেল করতে শুরু করে অনিকা।

তথ্য যে পাকিস্তানে চালান হচ্ছে, কী ভাবে জানতে পারলেন গোয়েন্দারা ?

সোমবীরের ব্যবহারে সন্দেহ হওয়ায় তাঁর মোবাইল ট্র্যাক করতে শুরু করেন গোয়েন্দারা। ফোনের সূত্র ধরেই তাঁকে হাতেনাতে ধরেন গোয়েন্দারা। তাঁকে গ্রেফতার করে জেরা করতেই সবটা পরিষ্কার হয়।

রাজস্থান এসটিএফ এবং মিলিটারি ইনটেলিজেন্সের যৌথ তদন্তে উঠে এসেছে আরও মারাত্মক তথ্য। পাকিস্তানি ওই মহিলা শুধু সোমবীরকেই নয়, এমন আরও ৫০ জন জওয়ানকে তার প্রেমের জালে ফাঁসিয়ে তথ্য হাতিয়েছেন। অনিতা তাঁদের প্রত্যেকের সঙ্গেই চ্যাট করে। তার জন্য প্রত্যেককে আলাদা আলাদা সময় দিয়ে রেখেছে। ওই ৫০ জন জওয়ানও এখন মিলিটারি ইনটেলিজেন্সের স্ক্যানারে।

প্রেমের জালে ফাঁসিয়ে এই ভাবে তথ্য জেনে নেওয়ার পদ্ধতিকে বলা হয় ‘হানি ট্র্যাপ’। এটা অবশ্য নতুন নয়। এর আগে সেনাপ্রধান বিপিন রাওয়াতের মুখে এই বিষয়ে সতর্কবার্তা শোনা গিয়েছিল। তিনি জানিয়েছিলেন, বলি নায়িকাদের নাম নিয়ে বহু ফেক প্রোফাইল থেকে জওয়ানদের বন্ধুত্বের অনুরোধ পাঠানো হয়। এই সমস্ত নকল প্রোফাইল থেকে সতর্ক থাকা উচিত।

পাঠকের মতামত

Comments are closed.