200489

‘আমি কিন্তু ভাবতে পারিনি কোনোদিন বাংলাদেশের পূর্ণ মন্ত্রী হতে পারব’

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশে রুপান্তর করতে চান। এই গণসংবর্ধনা সভা থেকে ঘোষণা দিচ্ছি। আমার উপর যে অর্পিত দায়িত্ব। যে মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব। আমার প্রথম কাজ হবে এই মন্ত্রণালয়কে দুর্নীতিমুক্ত করা।মন্ত্রী শাহাব উদ্দিন বুধবার সন্ধ্যা আটটায় বড়লেখা উপজেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে পৌর শহরের আহমদ ম্যানসনের সম্মুখে অনুষ্ঠিত গণসংবর্ধনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপরোক্ত কথা বলেন।

উপস্থিত জনতার উদ্দেশ্যে মন্ত্রী বলেন- ‘আপনারা খুশি তো। কেমন খুশি অইছন (হয়েছেন)। আমি কিন্তু ভাবতে পারিনি কোনোদিন বাংলাদেশের পূর্ণ মন্ত্রী হতে পারব। আমার চিন্তায় ছিল না। এটা আপনাদের চিন্তার মাঝে ছিল। আপনাদের (বড়লেখা-জুড়ীবাসী) দাবি ছিল। আপনারা পূর্ণ মন্ত্রী চেয়েছিলেন। আপনাদের সেই দাবি পূরণ করেছেন জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেই জন্য বড়লেখা-জুড়ীবাসীর পক্ষ থেকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। আমার দায়িত্ব পাওয়ায় আপনারা যেমন খুশি হয়েছেন। আপনাদের মুখ যেমন উজ্জ্বল হয়েছে। সে মুখ যেন আরও উজ্জ্বল হয়। মলিন না হয়। আমার উপর অর্পিত দায়িত্ব যেন ন্যায়সঙ্গতভাবে পালন করতে পারি।’

মন্ত্রী বলেন, প্রতিবছর বন্যা, খরা, অতিবৃষ্টি, জলোচ্ছ্বাসে আমাদের দেশ আক্রান্ত হচ্ছে। তার একমাত্র কারণ জলবায়ুর বিরূপ প্রভাব। আমরা বন উজাড় করে দিয়েছি। খাল-বিল ভরাট করে দেওয়া হয়েছে। কোথাও এইগুলো অবৈধ দখল করা হয়েছে। যার ফলে পরিবেশের বিপর্যয় ঘটেছে। এই বিপর্যয়ের হাত থেকে দেশের মানুষ ও ফসল রক্ষা করতে হলে এই মন্ত্রণালয়কে সঠিকভাবে কাজ করতে হবে। দেশের পাহাড় রক্ষা করতে হবে। বাংলাদেশের যত পাহাড় আছে। সেগুলোতে যাতে বৃক্ষ নিধন না হয়। গাছ চুরি যাতে বন্ধ হয়। সেই ব্যবস্থা আমরা করব। হাওর-বিল যেগুলো ভরাট হয়ে গেছে। সেইগুলো খনন করবো।

মন্ত্রী বলেন, বর্তমানে দেশে ইট ভাটাগুলো নিয়মকানুন না মেনে চলায় পরিবেশে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হচ্ছে। আমাদের প্রথম কাজ হচ্ছে ইটভাটাগুলোকে নীতিমালার মধ্যে নিয়ে আসা। আগামী ৩০ তারিখ সংসদ অধিবেশন শুরু হবে। আমরা সংসদে বিল নিয়ে আসব। যাতে ইটভাটাগুলো পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর না হয়। সে আইন আমরা বাংলাদেশে চালু করব। তাছাড়া ইকো-ট্যুরিজমের আওতায় পাথারিয়া পাহাড় ও হাকালুকি হাওরকে নিয়ে এসে মানুষের কাছে দৃষ্টিনন্দন হিসেবে তুলে ধরার কাজ করব। এই এলাকাকে পর্যটন অঞ্চল হিসেবে বিশ্বের মানুষের কাছে তুলে ধরব।

সংবর্ধনা সভায় সভাপতিত্ব করেন বড়লেখা উপজেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি প্রণয় কুমার দে। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল ইমাম মো. কামরান চৌধুরী ও উপজেলা যুবলীগের সভাপতি তাজ উদ্দিনের যৌথ সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি ছাড়াও অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার উদ্দিন, উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি আফজাল হোসেন, বাংলাদেশ আনজুমানে আল-ইসলাহ সভাপতি কেএম ছালেহ আহমদ কবির প্রমুখ। মন্ত্রী সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় জনসভাস্থলে এসে পৌঁছালে বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে তাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হয়।

সংবর্ধনাসভায় অন্যদের মাঝে উপজেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি নিমার আলী, মুহাম্মদ সিরাজ উদ্দিন, বিধান চন্দ্র দাস, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম সুন্দর ও উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান বিবেকানন্দ দাস নান্টু, একেএম হেলাল উদ্দিন, সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সোয়েব আহমদ, উপজেলা আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক গোপাল দত্ত, কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক নিয়াজ উদ্দিন, জেলা পরিষদ সদস্য হামিদুর রহমান শিপলু, জেলা যুবলীগ নেতা ছালেহ্ আহমদ জুয়েল, উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক কামাল হোসেন, ছাত্রলীগের সভাপতি তানিমুল ইসলাম তানিম, সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ আহমদ, পৌর সাধারণ সম্পাদক রাহেন পারভেজ রিপন, সরকারি কলেজ সভাপতি ইমরান হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন শাখার নেতা-কর্মীরা উপিস্থিত ছিলেন।

পাঠকের মতামত

Comments are closed.