202834

মাটিতে ফেলে বিজেপি নেতাকে চর-থাপ্পড় (ভিডিও)

নিউজ ডেস্ক।। বাংলাদেশ থেকে ভারতে চলে আসা হিন্দুদের নাগরিকত্ব দেওয়ার ইস্যুতে রাস্তায় ফেলে পেটানো হয়েছে আসামের লখেশ্বর মোরান নামের এক বিজেপি নেতাকে। গত বুধবার তিনসুকিয়া জেলার এই বিজেপি সভাপতি নাগরিকত্ব বিল কেন প্রয়োজনীয়-সেটা বোঝাতে এক সভায় হাজির হলে এমন ঘটনা ঘটে। ইতিমধ্যে সেই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে গেছে। বিবিসি বাংলার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নাগরিকত্ব বিলের বিরোধিতায় গোটা উত্তরপূর্বাঞ্চলেই বিক্ষোভ-হরতাল-প্রতিবাদ চলছে। বুধবার লখেশ্বর মোরান নাগরিকত্ব বিল কেন প্রয়োজনীয়-সেটা বোঝাতে এক সভায় হাজির হয়েছিলেন, তখনই বিলের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকেন প্রায় তিন হাজার মানুষ। এ সময় কালো পতাকাও দেখানো হয়।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ওই ভিডিওতে দেখা যায়, একদল বিক্ষোভকারী ওই বিজেপি নেতাকে ধাওয়া করছে। পরে তাকে ধরে কিল-চর এবং কেউ তার চুল টেনে ধরছে। এমনকি অনেকে তাকে ধাক্কাতে থাকেন। একপর্যায়ে তিনি মাটিতে পরে যান। কিন্তু প্রথমবার উঠে সরে যাওয়ার চেষ্টা করতে গিয়ে আবার পড়ে যান। পরে রক্তাক্ত অবস্থায় পুলিশ তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করান।

তিনসুকিয়ার পুলিশ সুপার (এসপি) শিলাদিত্য চেতিয়া বলেন, ‘ভিডিও ফুটেজ দেখে আমরা কয়েকজনকে চিহ্নিত করতে পেরেছি। তিনজন ইতিমধ্যেই গ্রেপ্তার হয়েছে। আরও পাঁচ থেকে ছয়জন ছিল ওই হামলায়। তাদের খোঁজে বাড়িতে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। আশা করছি সবাইকে গ্রেপ্তার করা যাবে খুব তাড়াতাড়ি।’ দুদিন আগে আসামের বিজেপির প্রধান মুখপাত্র রাজদীপ রায় বলেন, ‘এই বিল নিয়ে আমাদের অবস্থান বিজেপির জন্মলগ্ন থেকেই খুব স্পষ্ট। অনুপ্রবেশকারী আর শরণার্থীদের মধ্যে ফারাক করা উচিত-এটাই আমরা মনে করি।’

রাজদীপ আরও বলেন, ‘যারা বিরোধিতা করছে তারা অচিরেই বুঝতে পারবে বিষয়টা। আর যে কয়েকটি বিষয়ে নিয়ে আপত্তি রয়েছে, আলাপ- আলোচনার মাধ্যমেই সেগুলো মেটানো যাবে।’ আসামের বাংলা দৈনিক যুগশঙ্খ কাগজের সম্পাদক অরিজিত আদিত্য বলেন, ‘এতদিন নাগরিকত্ব বিল নিয়ে বিরোধিতাটা ‘গণতান্ত্রিকভাবে’ হচ্ছিল, এখন সংঘাতটা বাড়ছে। ধৈর্যের বাঁধ সম্ভবত ভাঙছে আসামের জাতীয়তাবাদী সংগঠনগুলোর। এখন কোথাকার জল কোথায় গড়ায় সেটাই দেখার বিষয়।’

এ বিষয়ে আসামের বাঙালী ছাত্র যুব ফেডারেশনের উপসভাপতি মৃন্ময় দাস বলেন, ‘একটা জায়গায় আমাদের অবস্থান স্পষ্ট, যে হিন্দু বাঙালিদের নাগরিকত্ব দিতেই হবে। এর জন্য যতদূর যাওয়া দরকার যেতে আপত্তি নেই।’ সম্পাদক অরিজিত আদিত্য অবশ্য মনে করেন, হিন্দু বাঙালিরা নাগরিকত্ব ইস্যুতে একটা ফাঁদে পা দিয়ে ফেলেছে। তিনি বলেন, ‘না বুঝেই বিলের সমর্থনে দাঁড়িয়েছে হিন্দু বাঙালিরা। তার ফলে এখন সকলেই মনে করছে যে, বাংলাভাষী হিন্দু মানেই বাংলাদেশ থেকে আসা অনুপ্রবেশকারী-সেজন্যই তারা নাগরিকত্ব বিলকে সমর্থন করছে। গোটা উত্তরপূর্বে হিন্দু বাঙালিরা এখন গণশত্রু হয়ে দাঁড়িয়েছে।’

পাঠকের মতামত

Comments are closed.