229691

সামাজিক মাধ্যমে ছাত্রীর নগ্ন ভিডিও, ২ যুবক গ্রেফতার

অনলাইন সংস্করণঃ- পঞ্চগড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক ছাত্রীর ধর্ষণ চেষ্টার নগ্ন ভিডিও প্রকাশ করেছে ফজলুল হক সাগর (৩৫) নামের চতুর্থ শ্রেণির এক সরকারি কর্মচারী। এ ঘটনায় পর্ণোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে ওই ছাত্রীর মায়ের দায়ের করা মামলায় সাগরসহ দু’জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তবে আসামি প্রভাবশালী হওয়ার তাদের ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে নির্যাতিত ছাত্রী ও তার মা।

ফজলুল হক সাগর পঞ্চগড় গণপূর্ত বিভাগের ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারী (নৈশপ্রহরী)। জেলা শহরের ডোকরোপাড়া মহল্লার বাসিন্দা সাগরের বাবা সরকারি অফিসের গাড়ি চালক। সাগরের সাউন্ড সার্ভিসের ব্যবসাও রয়েছে। তিনি জেলা শিল্পকলা একাডেমির কার্যকরি কমিটির সদস্য।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, জাফরুল ইসলাম অন্তর (১৬) নামে আরেক শিক্ষার্থীর সহযোগিতায় সাগর ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ চেষ্টা করে। অন্তর মেয়েটির বন্ধু। পরে ধর্ষণ চেষ্টার নগ্নভিডিও ধারণ করে সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশের হুমকি দিয়ে ৬ মাস ধরে তাকে নির্যাতন করে আসছিল সাগর। এ বছর এসএসসি পাস করা ওই ছাত্রী এক পর্যায়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। এরপর সাগর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিওটি ছড়িয়ে দেয়। এ ঘটনায় পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে পঞ্চগড় থানায় ১৭ মে মামলা করেন মেয়েটির মা। মামলার পরপরই সাগর ও অন্তরকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তবে মামলার পর থেকেই সাগরের লোকজন মামলাটি তুলে নিতে ওই ছাত্রীর মাকে চাপ দিতে থাকে। ভয়ে নির্যাতিত ছাত্রী ও তার মা পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।

এদিকে মঙ্গলবার জেলা শিল্পকলা একাডেমির কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় সাগরকে সদস্য পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

স্থানীয় নারী নেতা ও জেলা পরিষদের সদস্য আকতারুন নাহার সাকী বলেন, এমন ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কেউ দিতে না পারে এটা ভাবাই যায় না। এদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।

গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী রাজিবুল ইসলাম বলেন, সাগর আমাদের অফিসে নৈশপ্রহরীর চাকরি করে। তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী বরাবর সুপারিশ করা হয়েছে।

নির্যাতিত ছাত্রীর বড় ভাই বলেন, আমরা মামলা করেছি সুষ্ঠু বিচার পাওয়ার আশায়। ওরা আমার বোনের সঙ্গে যা করেছে, তা যেন আর কারো সঙ্গে করা না হয়। কিন্তু অনেকে বলছেন, ওরা জামিনে বের হয়ে আসবে। ওদের অনেক টাকাপয়সা আছে। মামলা করার পর অনেকেই আসছেন বিষয়টি মিমাংসা করার জন্য। আমরা তাদের চিনি না। তাদের জন্য হয়তো মা বাড়িতে থাকছেন না।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) সুদর্শন কুমার রায় বলেন, বাদীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইন এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা হয়েছে। মামলাটি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। এরই মধ্যে আসামিদের গ্রেফতার ও রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছে। আসামিরা হুমকি দিচ্ছে- বাদী পক্ষ থেকে এ ধরনের কোন অভিযোগ আসেনি। বাদী বাড়িতে থাকতে পারছে না বা তাদের ওপর কোনো ধরনের চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে- এমন অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

সূত্র কালেরকণ্ঠঃ

পাঠকের মতামত

Comments are closed.