230882

ইসলাম গ্রহণ করলেন ৯/১১ এর টুইন টাওয়ার হামলায় বেঁচে যাওয়া নাগরিক

ডেস্ক রিপোর্ট : একটি সাধারণ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে অমুসলিম থেকে মুসলিম হওয়া যায়। প্রক্রিয়াটি হলো ‘আল্লাহ তায়ালা ছাড়া আর কোনো মাবূদ নেই ও নবি মুহাম্মদ সা. তাঁর প্রেরিত বার্তা বাহক বা রাসূল’ এই শব্দ সমষ্টির তিন রকমের স্বীকৃতি। যথা, মৌখিকভাবে, অন্তর থেকে ও কাজের মাধ্যমে।

সম্প্রতি দুবাইয়ের ইংলিশ গণমাধ্যম ‘দ্যা ন্যাশনাল’ জানিয়েছে, সংযুক্ত আরব আমিরাতের ‘Centre for Islamic Culture’ ‘ইসলামি কালচারাল সংস্থা’য় এসে ইসলামের কালেমা পাঠ করে মুসলিম হয়েছেন ৯/১১ এর টুইন টাওয়ার হামলায় বেঁচে যাওয়া একজন নারী নাগরিক। তার বাড়ি উত্তর আমেরিকার ‘নিকারাগুয়া’ দেশে। দেশটি ১৯২১ সালে স্পেন থেকে স্বাধীনতা লাভ করে। ইসলাম ধর্ম গ্রহণকারী এ নারী নাগরিকের বয়স ৩৯ বছর। তার পূর্ব নাম ‘কর্ডস্মাথ ডানি’।

ইসলাম ধর্ম গ্রহণের পর তার নাম রাখা হয়েছে ‘আলিয়া মেন্দোজার’। তিনি তার স্বামীকে সাথে নিয়ে ইসলাম গ্রহণ করেন। তার স্বামীর নাম রাখা হয়েছে ‘আব্দুল্লাহ মেন্দোজার’। মেন্দোজার তাদের কোম্পানির নাম। সে নামেই তারা প্রসিদ্ধ।

ইসলাম ধর্ম গ্রহণের পর আলিয়া মেন্দোজার বলেন, ৯/১১ হামলার সময় তিনি একটি বিমানে করে যুক্তরাষ্ট্রের ‘মিয়ামি’তে সফর করার জন্য বের হয়েছিলেন। কিন্তু হামলার পর বিমানটি পুনরায় নিকারাগুয়ায় ফেরত আসে।

তিনি বলেন, ‘আক্রমণের পর যখন সকলে চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করেছিল। আমার মনে আছে তখন আমি এরকম অনুভব করতে থাকি যে, ভগবানে বিশ্বাস করাটা একমাত্র পথ নয়। আমার মনে হতে থাকে ইসলামই একমাত্র সঠিক পথ। সেসময় বিমানের লোকজন ভয়ে ইসলামের কালেমা পাঠ করছিলো।’

তিনি বলেন, ‘মুসলমান হওয়ার পর আমার জীবন পাল্টে গেছে। আমি এখন ইসলামের সকল বিষয় জানার চেষ্টা করছি ।’

পত্রিকাটি জানিয়েছে, দুবাই ইসলামিক কেন্দ্রে প্রতি মাসেই কয়েক ডজন অমুসলিম ইসলাম গ্রহণ করছেন। তারা আধার থেকে পাড়ি জমাচ্ছেন আলোতে। মিথ্যা থেকে সথ্যের পথে। ‘ইসলামি কালচারাল সংস্থা’ এর প্রতিনিধি মোহাম্মদ বিন রাশিদ বলেন, মুসলিম হওয়ার পর তাদের অনেকের চোখ অশ্রুতে ভিজে যায়। আবার অনেকে তাদের অতীত জীবনের পাপের জন্য লজ্জিত হয়ে পড়েন।

ইসলাম গ্রহণের পর আমেরিকান নাগরিক আলিয়া মেন্দোজার বলেন, ‘আমাদের এখানে অনেক সম্মান দেয়া হয়। আমাদের ধর্মান্তরিত হিসেবে ডাকা হয় না। কারণ আমরা রাসুল সা. এর ঐ বাণী বিশ্বাস করি। রাসূল সা. বলেছিলেন, ‘প্রত্যেক ব্যক্তি মুসলিম হিসেবেই জন্ম গ্রহণ করেছিলো। পরে বাবা-মায়ের কারণে কেউ ইহুদী কিংবা খ্রিস্টান হয়েছে।’ (আল-হাদিস)

তিনি আরো বলেন, ‘আমি আমার শিশু কালের পুরোটা কাটিয়েছি সমাজের পুরুষদের দিক নির্দেশনা অনুযায়ী। এমনকি যখন আমি গর্ভবতী হই তখন একজন পুরুষ যাজক আমার মাথায় ব্যাপ্টিজমের জল ঢেলে দেয়।’

তিনি বলেন, ‘আমি এমন একটি ধর্মের অংশ হতে চাই না যা কিছু পুরুষ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। ইসলাম এরকম কোনো ধর্ম নয়।’

প্রথম বারের মত কালেমা পাঠের স্মৃতি চারণ করে তিনি বলেন, ‘আমার মনে আছে সেই সকল ‘হাঁসিমুখ’ সমূহকে যারা আমার দিকে ইতিবাচক দৃষ্টিতে তাকিয়েছিল। কালেমা পাঠের পর আমি নিজেকে তাদের অংশ হিসেবে মনে করতে থাকি।ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করতে আমার মাত্র তিন মিনিট সময় লেগেছিল। আর এ তিন মিনিট চিরদিনের জন্য আমার জীবন পরিবর্তন করে দিয়েছে।’

পাঠকের মতামত

Comments are closed.