৫ দিনে পায়ে হেঁটে ১৫০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিলেন শেখ ত্বোহা
ডেস্ক রিপোর্ট : বর্তমান সময়ে আমাদের দেশের বেশীরভাগ পুরুষ মানুষই যখন পায়ে হেঁটে ৩-৫ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে অনীহা প্রকাশ করেন। সেখানে আমাদের দেশের সাহসী মেয়ে শেখ ত্বোহা বিনতে হাসেম ৫ দিনে পায়ে হেঁটে ১৫০ কিলোমিটার পাড়ি দিলেন। যা অনেকের কাছেই অসম্ভব মনে হলেও, এই অসম্ভবকে সম্ভব করেছেন শেখ ত্বোহা। তার এই পায়ে হেঁটে ১৫০ কি.মি যাত্রা পথে জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে তিনি স্যাঁশে (বিশেষ উত্তরীয়) পরিধান করে ছিলেন। যেখানে স্লোগান হিসাবে লেখা ছিল “ নারী নির্যাতন বন্ধ করি, বাল্য বিবাহ রোধ করি, ইভটিজিং প্রতিরোধ করি”।
শেখ ত্বোহা ৭ই অক্টোবর আনুষ্ঠানিকভাবে পায়ে হেঁটে যাত্রা শুরু করেন নরসিংদী জেলা প্রশাসনের কার্যালয় থেকে। গন্তব্য চায়ের রাজকন্য খ্যাত মৌলভীবাজার জেলা। শেখ ত্বোহা পায়ে হেঁটে ভৈরব, মাধবপুর, শায়েস্তাগঞ্জ, শ্রীমঙ্গল পার হয়ে ১১ই অক্টোবর দুপুরে মৌলভীবাজার শহরে পৌঁছায়। এর মাধ্যমে শেষ হয় তার ১৫০ কিলোমিটার পায়ে হেঁটে পরিভ্রমন করা।
সমতট ওপেন স্কাউট গ্রুপের সদস্য শেখ ত্বোহা। এই স্কাউট গ্রুপের বিগত ৪৩ বছরের ইতিহাসে সেবা স্তরের প্রথম ‘গার্ল ইন রোভার’ হিসাবে পায়ে হেঁটে ১৫০ কি.মি দীর্ঘ পথ অতিত্রুম করেছেন শেখ ত্বোহা। সরকারী বাংলা কলেজের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের অনার্স ৩য় বর্ষের শিক্ষার্থী শেখ ত্বোহা সমতট ওপেন স্কাউট গ্রুপের সদস্যর পাশাপাশি আবহাওয়ার পরিবর্তন জনিত ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে মানুষকে সচেতনকারী সংগঠন World Climate Change Awareness Society (WCCAS) এর প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক হিসাবে দ্বায়িত্ব পালন করছেন।
৫ দিনে ১৫০ কিলোমিটার পাড়ি দেওয়া শেখ ত্বোহাকে পায়ে হেঁটে ১৫০ কিলোমিটার যাওয়ার অভিজ্ঞতা সম্বন্ধে জানতে চাইলে সে জানায়, “এটা আমার জীবনের অন্যতম একটা চ্যালেঞ্জ ছিলো, একজন মেয়ে হয়ে পায়ে হেঁটে ১৫০ কিলোমিটার পাড়ি দেওয়া। এই চ্যালেঞ্জ সম্পন্ন করতে পারায় আমি খুবই আনন্দিত হয়েছি। আমি পায়ে হেঁটে চলার সময় উপলদ্ধি করছিলাম আমি যেন প্রকৃতির ভালাবাসায় মুগ্ধ হয়ে সবুজের মাঝে হারিয়ে গিয়েছি। অনেকদূর হেঁটে চলেছি ভিন্ন পরিবেশে, নীল আকাশের নীচে, দিগন্তের পথে। প্রকৃতির সৌন্দর্যে ভরপুর ভৈরব, মাধবপুর, শায়েস্তাগঞ্জ, শ্রীমঙ্গল, মৌলভীবাজার এ পায়ে হেঁটে যাওয়ার কারণে খুব কাছ থেকে প্রকৃতির সৌন্দর্য ভালো ভাবে অনুধাবন করার সুযোগ হয়েছে আমার।”
হঠাৎ করে কেন পায়ে হেঁটে ১৫০ কিলোমিটার পাড়ি দিতে গেলেন? লক্ষ্য কি ছিলো? এই প্রশ্নের জবাবে শেখ ত্বোহা বলেন, “ উদ্দেশ্য তো আছেই। দেশের মানুষকে নারী নির্যাতন, বাল্য বিবাহ ও ইভটিজিং সম্বন্ধে সচেতন করা। যখন মানুষজন আমার কাছে এসেছে, তখনই তাদেরকে নারী নির্যাতন, বাল্য বিবাহ ও ইভটিজিং এর কুফল ও এর শিকার হলে করণীয় সম্বন্ধে জানিয়েছি। এছাড়া রোভারিংয়ের সর্বোচ্চ অ্যাওয়ার্ড ‘প্রেসিডেন্ট রোভার স্কাউট অ্যাওয়ার্ড” প্রাপ্তীর লক্ষ্যে সেবাস্তরের রোভারদের পায়ে হেঁটে ১৫০ কিলোমিটার করে পায়ে হাঁটার প্রোগাম সম্পন্ন করতে হয়। যা স্কাউটিংয়ে “রাম্বেলিং” নামে পরিচিত।