258867

স্বামীর মূমুর্ষ অবস্থা দেখে ২০ দিন না খেয়ে স্ত্রীর সহমৃত্যু

এমন একটা সময় ছিল যখন ভারতবর্ষে হিন্দুধর্মে সহমরণের রেওয়াজ চালু ছিল। স্বামীর মৃত্যুর সাথে সাথে স্ত্রীকেও চিতায় পোড়ানো হত। কিন্তু রাজা রামমোহন রায়ের প্রচেষ্টায় ব্রিটিশ ভারতে আইন করে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল সহমরণ রীতি। তবে এবার স্ব ইচ্ছাতেই সহমরণ বেছে নিলেন ভারতের অন্ধ্যপ্রদেশের ৮২ বছর বয়সী বৃদ্ধা অঞ্জনা দেবী। স্বামী কোদনদরাম শর্মার মূমুর্ষ অবস্থা দেখে স্বামীর সাথে সহমরণের জন্য ২০ দিন না খেয়ে ছিলেন অঞ্জনা। অবশেষে সফল হয়েছেন তিনি। ২০ দিন না খেয়ে থেকে অবশেষে শনিবার (১৬ নভেম্বর) স্বামী সাথেই মারা যান অঞ্জনা দেবি।

৬০ বছরের বিবাহিত জীবনে ৮২ বছর বয়সী অঞ্জনা দেবী, ৮৫ বছর বয়সী স্বামী ডিভি কোদনদরাম শর্মাকে ভালোবাসার বন্ধনে আগলে রেখেছিলেন। স্বামী ছিলেন মন্দিরের পুরোহিত। এমনকি তিনি অর্চনা সেবা সমিতির সভাপতিও ছিলেন। দীর্ঘ প্রায় ছয় মাস যাবত কোদানদারম শর্মা অসুস্থ অবস্থায় বিছানায় পরে ছিলেন। স্বামী অসুস্থ থাকলেও অঞ্জনা দেবীর ছিল না কোন শারীরিক অসুস্থতা। পুত্রবধূ সুভাষিনী মতে, অঞ্জনা তাদের বলতেন যে তাঁর স্বামীর আগে তিনি মারা যাবেন। এমনকি তিনি আরও বলেছেন কনক দুর্গা দেবী স্বপ্নে তাকে বলেছিলেন যে তিনি কার্ত্তিকা মাসামে পুণ্যশ্রী হিসাবে মারা যাবেন।

তিনি আরও বলেন, আমার শশুরের অসুস্থতার সময় মা একটু হতাশ হয়ে পড়েন। তারপর ২০ দিন না খেয়ে থেকে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। তিনদিন হাসপাতালেও ভর্তি ছিলেন তিনি। সেই সময় আমাদেরকে খুব জোর করতেন হাসপাতাল থেকে বাড়ি নিয়ে যাওয়ার জন্য। কারণ তিনি হাসপাতালের বিছানায় মৃত্যু চান না, বাড়ি যেতে চান। বাড়িতে নিয়ে আসা হলে তিনি আবারও খাওয়া বন্ধ করে দেন। আমরা খুব জোরাজুরি করলে হয়ত দু’চামচ ভাত মুখে দিয়েছিলেন। অঞ্জানা দেবীর শেষ ইচ্ছে ছিল স্বামীর সাথে একই বিছানায় মৃত্যু। ঠিক শুক্রবার রাতে মারা যান স্বামী কোদনদরাম শর্মা এবং কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে মারা যান অঞ্জানা। সিনেমার মতই শেষ হলো তাদের দাম্পত্য জীবনের ছয় দশক।

পাঠকের মতামত

Comments are closed.