258902

নতুন সড়ক আইন প্রয়োগের শুরুতেই বাস বন্ধ, দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ যাত্রী

ডেস্ক রিপোর্ট : সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে নতুন সড়ক আইন পাস করেছে সরকার। চলতি মাসের প্রথমদিন থেকে সড়ক আইন কার্যকরের কথা থাকলেও জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে দুই সপ্তাহ পিছিয়ে দেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। গতকাল নতুন সড়ক আইন বাস্তবায়নে মাঠে নেমেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।

আইন কার্যকরের প্রথম দিনে রাজধানীর বেশকটি পয়েন্টে বিআরটিএর ৮টি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হয়। এতে দিনের শুরুতেই রাজধানীসহ সারা দেশেই গণপরিবহনের সংখ্যা কম দেখা যায় বলে অনেকেরই অভিযোগ। অনেকেই বলছে পরিবহনে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে জনগণকে ভোগান্তিতে ফেলছে পরিবহনসংশ্লিষ্টরা।

গতকাল অফিস টাইমে রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে বাসের জন্য সাধারণ জনগণকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। দু-একটা বাস স্ট্যান্ডে এলে ঠেলাঠেলি করে অনেকেই উঠতে পারেননি, এতে ভোগান্তিতে পড়ে নগরবাসী।

এছাড়াও দেশের বিভিন্ন জেলায় নতুন আইনের বিরোধিতা করে পরিবহন ধর্মঘট পালন করছেন শ্রমিকরা। আকস্মিক এ কর্মসূচির কারণে ভোগান্তিতে পড়েছেন দূরপাল্লার যাত্রীরা। অনেকেই বাসস্ট্যান্ডে এসে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করে বাস না পেয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন।

অন্যদিকে কোনো চাপেই আইন কার্যকরে সরকার পিছু হটবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তবে বাস্তবায়নে বাড়াবাড়ি না করারও নির্দেশ দিয়েছেন মন্ত্রী।

গতকাল সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ওবায়দুল কাদের বলেন, নতুন সড়ক পরিবহন আইন প্রথমে সহনীয় পর্যায়ে কার্যকর করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আইন প্রয়োগে অযথা বাড়াবাড়ি যাতে না হয় সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

নতুন আইনে জরিমানা আদায় করা মুখ্য উদ্দেশ্য নয় উল্লেখ করে সেতুমন্ত্রী বলেন, সরকার চায় সবাই আইন মেনে চলুক। সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনাই এ আইনের প্রধান উদ্দেশ্য। আইন বাস্তবায়নে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা শুরু হয়েছে। এসময় পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের নতুন আইন মেনে চলার অনুরোধ জানান সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

গতকাল অফিস টাইম থেকে বিকাল পর্যন্ত রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় সরেজমিন দেখা যায়, আগের তুলনায় গণপরিবহনের সংখ্যা কম। যে কারণে ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রী সাধারণও। ব্যক্তিগত গাড়ি কিংবা সিএনজির সংখ্যাও অন্যসব দিনের তুলনায় কম দেখা গেছে।

আজিমপুরের বাসিন্দা শাহাদত হোসেন নিউমার্কেট এলাকায় বাস না পেয়ে বাধ্য হয়ে সিএনজিতে ওঠেন। তিনি বলেন, মহাখালী যাবো। অনেক সময় দাঁড়িয়ে থেকে যানবাহন পাচ্ছিলাম না। দু-একটা দেখা গেলেও গেট লক করে দ্রুত চলে যাচ্ছে। বাসগুলো আজ সিটের অতিরিক্ত যাত্রীও নিচ্ছে না। বাধ্য হয়ে সিএনজিতে যেতে হচ্ছে। এভাবে শাহাদতের মতো অনেক যাত্রীকে আজ ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে।

এদিকে নতুন সড়ক পরিবহন আইন আনুষ্ঠানিকভাবে প্রয়োগ শুরুর প্রথমদিনে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) গতকাল সোমবার বেলা ১১টা থেকে রাজধানীর ৬টি স্থানে ৮টি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে। এসময় মোট ৮৮টি মামলা দায়ের করা হয় এবং এক লাখ ২১ হাজার ৯০০ টাকা জরিমানা আদায় করে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) এর এ.কে.এম মাসুদুর রহমান আমার সংবাদকে বলেন, এটা একটা সাময়িক ব্যাপার। নতুন আইনে যে ধারা আছে তার আমরা হার্ড লাইনে যাচ্ছি না।

তিনি বলেন, আমরা সহনশীল থেকে এটাকে একটা সিস্টেমের মধ্যে আনতে যাচ্ছি। আগের আইনে যে ধারা ছিলো তার থেকেও কম কম জরিমানা করেছি। গাড়ি চালকরা আতঙ্কিত হয়েছে ২৫ হাজার টাকা জরিমানার কথা শুনে, আমারতো সেটা আদায় করিনি। এক হাজার টাকা করে জরিমানা আদায় করা হয়েছে।

তিনি বলেন, যদি গাড়ির কাগজ-পত্র ঠিক থাকে, ড্রাইভারের লাইসেন্স ঠিক থাকে তাহলে ভয়টা কীসের। আমরা তো কাউকে অ্যারেস্ট করিনি। অহেতুক তারা ভয় পাচ্ছে।

তিনি বলেন, ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নেই, এটা কিছুদিনের মধ্যে ঠিক হয়ে যাবে। এনফোর্সমেন্ট শাখার এ পরিচালক আরও বলেন, জেলাপর্যায়ে পরিবহন কমিটি আছে। সেখানে ডিসি বিষয়গুলো দেখবেন। যদি সেখানে কোনো সমস্যা হয় তারপর বিআরটিএ কর্তৃপক্ষ বিষয়টা দেখবে।

বিআরটিএ সূত্রে জানাগেছে, প্রথমদিন নতুন আইনের প্রয়োগের পাশাপাশি জনসচেতনতাকে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। তবে গাড়ির ফিটনেস না থাকা, ট্যাক্স টোকেন না থাকা, হালকা ড্রাইভিং লাইসেন্স নিয়ে ভারী পরিবহন চালানোয় মামলা ও জরিমানা করা হয়েছে।

বিভিন্ন জেলায় বাস বন্ধ : বিভিন্ন অপরাধে শাস্তির মাত্রা বাড়িয়ে নতুন সড়ক পরিবহন আইন কার্যকর করার বিরোধিতায় দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ৮ জেলায় বাস চলাচল বন্ধ রেখেছে পরিবহন শ্রমিকরা। গতকাল সোমবার সকাল থেকে পূর্বঘোষণা ছাড়া এই ধর্মঘটে যাত্রীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েন। আমাদের প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর—

খুলনা : খুলনার পরিবহন শ্রমিকনেতারা বলছেন, নতুন সড়ক পরিবহন আইন কয়েকটি ধারায় সংশোধনের পর এটি কার্যকর করা হোক। সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে বারবার অনুরোধ সত্ত্বেও আইনটি সংশোধন ছাড়াই বাস্তবায়নের ঘোষণা দেয়া হয়। এতে শ্রমিকদের মধ্যে ক্ষোভ ও উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। এ কারণে খুলনায় সব রুটের বাস চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে ২১ ও ২২ নভেম্বর শ্রমিক ফেডারেশন বর্ধিত সভা ডেকেছে। ওই সভার আলোচ্যসূচির ১ নম্বরে আছে সড়ক পরিবহন আইন সম্পর্কে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ।

খুলনা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. নুরুল ইসলাম বলেন, নতুন সড়ক পরিবহন আইন কার্যকরের প্রতিবাদে শ্রমিকরা বাস চালাচ্ছেন না। তারা অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি শুরু করেছেন।

তিনি আরও বলেন, নতুন পরিবহন আইনে কোনো কারণে দুর্ঘটনায় কেউ মারা গেলে চালকদের মৃত্যুদণ্ড এবং আহত হলে ৫ লাখ টাকা দিতে হবে। এত টাকা দেয়ার সামর্থ্য শ্রমিকদের নেই। বাস চালিয়ে তারা জেলখানায় যেতে চান না। খুলনা জেলা বাস-মিনিবাস-কোচ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, শ্রমিকরা ফাঁসি ও যাবজ্জীবন দণ্ডের ভয়ে গাড়ি চালানো বন্ধ করে দিচ্ছেন। তাদের সঙ্গে আলোচনা না করেই তারা এসব করছেন।

কুষ্টিয়া : কুষ্টিয়ায় বাস শ্রমিকদের সংগঠন শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা বলছেন, কঠিন আইনে বাস চালাবেন না চালকরা। সকালে যাত্রীরা মজমপুর, চৌড়হাস এলাকায় বাস টার্মিনালে গিয়ে বাস না পেয়ে ইজিবাইক, সিএনজিচালিত অটোরিকশাসহ তিন চাকার বিভিন্ন যানবাহনে গন্তব্যে রওনা দেন। যদিও এসব যান মহাসড়কে চলা অবৈধ। সকাল ১০টায় মজমপুর এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, বেশকিছু যাত্রী দাঁড়িয়ে আছেন।

গোলাম মোস্তফা নামের এক যাত্রী বলেন, খুব ভোরে তার চিকিৎসার জন্য স্ত্রী ও শিশুসন্তান নিয়ে কষ্ট করে কুষ্টিয়ায় এসেছিলেন। এখন জেলার দৌলতপুর উপজেলার ফিলিপনগর গ্রামে ফিরবেন। কিন্তু যানবাহন পাচ্ছেন না। এক বছরের শিশুসন্তান নিয়ে বসে আছেন।

কুষ্টিয়া : কুষ্টিয়া জেলা বাস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মাহাবুবুল হক বলেন, রাতে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ঘোষণা দেন, আজ (সোমবার) নতুন সড়ক আইন প্রয়োগ হবে। এ জন্য আতঙ্ক নিয়ে সড়কে বাস চালাবেন না। কঠিন আইনে বাস চালাবেন না চালকরা। তিনি আরও বলেন, বিষয়টি খুলনা কেন্দ্রীয় কমিটির সিদ্ধান্তে শ্রমিকরা কর্মবিরতিতে আছেন। ঢাকার সঙ্গেও যোগাযোগ রাখা হচ্ছে।

ঝিনাইদহ : ঝিনাইদহ থেকে যশোরগামী রবিউল ইসলাম নামের এক যাত্রী বলেন, সকালে ভিসার আবেদন করার জন্য যশোর যেতে হবে। সকাল থেকে প্রায় দুই ঘণ্টা বসে থেকে বাস পাচ্ছেন না। রাশেদ আলী নামের আরেক যাত্রী বলেন, সরকার আইন করেছে। আর বাস মালিক ও শ্রমিকরা সাধারণ যাত্রীদের জিম্মি করে বসে আছেন। সরকারের এ বিষয়ে প্রদক্ষেপ নেয়া উচিত। গতকাল সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সাতক্ষীরা বাস টার্মিনালে গিয়ে দেখা গেছে, টার্মিনাল থেকে খুলনা, যশোর, কালীগঞ্জ, শ্যামনগর ও চাপড়া রুটে কোনো বাস চলাচল করছে না। টার্মিনালে কিছু যাত্রী বাস ছাড়ার অপেক্ষায় বসে আছেন।

সাতক্ষীরা : সাতক্ষীরা বাস টার্মিনাল মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের কয়েকজন নেতা জানান, সড়ক দুর্ঘটনায় কেউ মারা গেলে নতুন আইনে চালকদের মৃত্যুদণ্ড ও আহত হলে পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা করা হবে। শ্রমিকদের এত টাকা দেয়ার সামর্থ্য নেই। এ কারণেই আইন সংশোধনের পর এটি বাস্তবায়নের জন্য তারা জোর দাবি জানান। তা না হলে তারা বাস চালাবেন না। সাতক্ষীরা বাস টার্মিনাল মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মো. জাহিদুর রহমান দাবি করেন, সাতক্ষীরা জেলায় অভ্যন্তরীণ রুটে বাস চলাচল করছে। শুধু যশোর ও খুলনা সড়কে বাস চলাচল করছে না।

চুয়াডাঙ্গা : চুয়াডাঙ্গায় আজ সকাল ১০টার দিকে অভ্যন্তরীণ ও দুপুর ২টার পর থেকে দূরপাল্লার যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। চুয়াডাঙ্গা জেলা বাস-ট্রাক সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি দাবি করেন, শ্রমিক ইউনিয়ন কোনো ধর্মঘট ডাকেনি। পরিবহন শ্রমিকদের কর্মবিরতির কারণে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। শ্রমিকনেতারা জানান, গত রোববার ঝিনাইদহে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের শ্রমিক সংগঠনগুলোর যৌথসভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছিল স্থানীয়ভাবে ২১ নভেম্বর পর্যন্ত যানবাহন চালাবে। ২২ তারিখে ঢাকায় বৈঠক শেষে আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। কিন্তু তার আগেই বন্ধ হয়ে গেল।

যশোর : যশোর জেলা পরিবহন সংস্থা শ্রমিক ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক হারুন অর রশিদ বলেন, ১৪ নভেম্বর যশোরে এক সমাবেশ থেকে ২০১৮ সালের সড়ক আইন সংশোধনের দাবি জানিয়েছিলেন তারা। এরপর রোববার থেকে যশোরের ১৮ রুটের শ্রমিকরা কর্মবিরতি শুরু করেন। পরে সোমবার সকালে অন্যান্য জেলাতেও কর্মবিরতি শুরু হয়। যশোর ক্যান্টনমেন্ট কলেজের ছাত্রী আফসানা আফরিন পাঁপড়ি কলেজে যাওয়ার জন্য সোমবার সকালে বেনাপোল বাসস্ট্যান্ডে এসে বাস পাননি।

আমাদের বেনাপোল প্রতিনিধিকে তিনি বলেন, আমি অসুস্থ, তারপরও জরুরি কাজে কলেজে যেতে হবে। কিন্তু এখন সব বাসই বন্ধ, যেতে পারছি না। যশোর-বেনাপোল ও যশোর-সাতক্ষীরার অভ্যন্তরীণ রুটে কোনো যাত্রীবাহী বাস চলাচল না করলেও ঢাকা-কলকাতা ও বেনাপোল থেকে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও দেশের অন্যান্য স্থানে দূরপাল্লার বাস চলাচল করছে বলে ‘ঈগল পরিবহনের’ বেনাপোল অফিসের ব্যবস্থাপক এমআর রহমান জানান।

এছাড়া প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাস, ইজিবাইক, মাহেন্দ্র, নসিমন-করিমন জাতীয় ছোট যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে বলে আমাদের যশোর প্রতিনিধি জানান। বাস না পেয়ে অনেকে ইজিবাইক ও মহাসড়কে চলাচলে নিষিদ্ধ তিন চাকার যানবাহনে চলাচল করছেন। স্থানীয় সকল রুটে বাস চলাচল বন্ধ থাকলেও ঢাকাসহ দূরপাল্লার বাস ও ট্রাকসহ অন্যান্য পরিবহন চলাচল করতে দেখা গেছে।

রাজশাহী : হঠাৎ করে রাজশাহী থেকে বাস চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। গতকাল সকাল থেকে রাজশাহীর সঙ্গে বিভিন্ন রুটের বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে শ্রমিকরা। এতে চরম দুর্ভোগের মুখে পড়ে মানুষ। মোটর শ্রমিকরা নগরীর শিরোইল ও নওদাপাড়া বাস টার্মিনাল ও ভদ্রা ছাড়াও নগরীর প্রবেশপথ তালাইমারী ও কাশিয়াঙ্গা মোড়ে অবস্থান নিয়ে বাস চলাচলে বাধা ও নতুন সড়ক পরিবহন আইন প্রত্যাহারের দাবিতে বিভিন্ন শ্লোগান দেয়।

এ ব্যাপারে জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম বলেন, এটা ইউনিয়নের পক্ষ থেকে ডাকা কোনো ধর্মঘট নয়। সকাল থেকে শ্রমিকরা নিজেরাই বাস বন্ধ রেখেছে। রাজশাহীর মালিকদের বাস দু-একটি করে নাটোর ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ রুটে ছেড়ে গেছে। তবে বাইরের জেলার মালিকদের বাসগুলো রাজশাহী আসছে না। বাস চলছে না রাজশাহী-নওগাঁ রুটে। এছাড়া রাজশাহী থেকে উপজেলা পর্যায়ে কোনো বাস শহর ছেড়ে যায়নি।

শ্রমিকদের এই আন্দোলনে সমর্থন করছেন কি না— এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আমি এসব সমর্থন করি না। প্রতিবাদ জানানোর আরও ভাষা আছে। এভাবে হঠাৎ বাস বন্ধ করে যাত্রীদের দুর্ভোগে ফেলা আমি সমর্থন করি না।

প্রসঙ্গত, গত বছর ঢাকায় বাসচাপায় দুই ছাত্রছাত্রীর মৃত্যুর পর নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের নজিরবিহীন আন্দোলনের মুখে নতুন সড়ক পরিবহন আইন সংসদে পাস হয়। তবে তা এ বছর ১ নভেম্বর থেকে কার্যকর করার কথা বলা হয়। বেপরোয়া মোটরযানের কবলে পড়ে দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের কারাদণ্ড, সর্বোচ্চ পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে এ আইনে, যা আগের তুলনায় বেশি। এ কারণে আইনটি প্রণয়নের পর থেকেই এর বিরোধিতা করে আসছে পরিবহন মালিক-শ্রমিক সংগঠনগুলো।

পাঠকের মতামত

Comments are closed.