259038

ফেব্রুয়ারি মাসেই পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেবে ভারত!

যে দেশে গুরুতর দুঃসংবাদ ছাড়া সংবাদমাধ্যম জনমনে সাড়া ফেলতে পারে না, সেই দেশের সংবাদমাধ্যমে পেঁয়াজ একটা চাঞ্চল্য সৃষ্টিকারী চরিত্র হিসেবে কিছুদিন ধরে দৌরাত্ম্য করছে। এ বিষয়ে সর্বশেষ খবর হলো, বাংলাদেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম ইতিহাসের সর্বোচ্চ রেকর্ড গড়েছে।

মূলত ভারতের থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধের পর থেকেই দেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম গগনচুম্বী। তবে পেঁয়াজ রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা আগামী ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাড়াতে পারে ভারত সরকার!

নিজেদের বাজার নিয়ন্ত্রণে না আসা এবং গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজের ফলনে ক্ষতি হওয়ায় এই সিদ্ধান্ত নিচ্ছে ভারত সরকার। নতুন ফলন আসার প্রেক্ষিতে চলতি নভেম্বর থেকে পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের কথা ছিল কিন্তু সেই ফলন ক্ষতি হওয়ায় সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করতে যাচ্ছে ভারত সরকার।

আনুষ্ঠানিক কোনো সিদ্ধান্ত না আসলেও ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে উদ্ধৃত করে এই আভাস দিয়েছে। আজ ‘দি ইকোনমিক টাইমস অফ ইন্ডিয়া’কে এই সংক্রান্ত প্রতিবেদন ছাপা হয়েছে।

ফলে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা বলছেন, আগামী তিনমাস পরের বাজার নিয়ে এখনই প্রস্তুতি নিতে হবে। আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে আগামী ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ভারত থেকে আমরা পেঁয়াজ আমদানি করবো না।

‘দ্যা ইকোনমিক টাইমস অফ ইন্ডিয়া’র প্রতিবেদন বলছে, পেঁয়াজ উৎপাদনকারী কয়েকটি অঞ্চলে বন্যার কারণে আভ্যন্তরীণ বাজার নিয়ন্ত্রণে গত সেপ্টেম্বরে পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দেয় ভারত সরকার। এরপর আশা করা হয়েছিল গ্রীষ্মকালীন নতুন মৌসুমের পেঁয়াজ বাজারে আসবে, তখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসবে। কিন্তু অসময়ে বৃষ্টির কারণে নতুন পেঁয়াজও আসতে দেরি হয় এবং উৎপাদিত ফসলেরও ব্যাপক ক্ষতি হয়, এতে পেঁয়াজ সরবরাহ কমে আসে। এই অবস্থায় ভারতের বাজারে পেঁয়াজের দাম বিগত ছয় বছরের মধ্যে রেকর্ড গড়ে।

প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, ন্যাশনাল রিসার্চ এন্ড হর্টিকালচার ফাউন্ডেশনের তথ্যমতে আড়তে প্রতিকেজি পেঁয়াজ ৪০ থেকে ৫৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। কনজিউম্যারস এফেয়ার্স বিভাগের এক সরকারি কর্মকর্তাকে উদ্ধৃত করে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই মুহূর্তে বাজার নিয়ন্ত্রণে নেই, নিয়ন্ত্রণে আসারও সম্ভাবনা নেই। আগামী জানুয়ারি নাগাদ পেঁয়াজের সরবরাহ অর্থবহ হবে। এরপর আড়তে দাম কেজি ২০ টাকার নিচে নামলে রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা তোলার সুযোগ আছে; এর আগে নয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারত রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা দেয়ার পর বাংলাদেশ ও শ্রীলংকা ভারতের বদলে মিয়ানমার, চীন, মিশর ও তুরস্ক থেকে পেঁয়াজ আমদানি করে চাহিদা মিটাচ্ছে।

প্রতিবেদনের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে আদা-রসুনের বড় আমদানিকারক ফরহাদ ট্রেডিংয়ের মালিক নুর হোসেন বলেছেন, আগামী জানুয়ারি থেকে দেশে উৎপাদিত পেঁয়াজ পুরোদমে বাজারে আসবে। ফলে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা দেয়া উচিত। তাহলে বাজার নিয়ন্ত্রণে আসবে পুরোপুরি; অন্যথায় নয়।

পাঠকের মতামত

Comments are closed.