ট্রাম্পের একক সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা আর নেই!
ডেস্ক রিপোর্ট : ইরানের বিরুদ্ধে সামরিক ক্ষমতা প্রয়োগের ব্যাপারে ট্রাম্পের একক সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা কমানোর ব্যাপারে একটি প্রস্তাব মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদে পাস হয়েছে। স্থানীয় সময় গত বৃহস্পতিবার ২২৪-১৯৪ ভোটের ব্যবধানে প্রস্তাবটি পাস হয়। ডেমোক্র্যাট নিয়ন্ত্রিত প্রতিনিধি সভায় প্রস্তাবটি পাস হবে সেটি অনুমিতই ছিল। তবে প্রস্তাবটি চূড়ান্ত কার্যকরের জন্য রিপাবলিকান নিয়ন্ত্রিত সিনেটে পাস হতে হবে। খবর বিবিসি।
যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতায় ডোনাল্ড ট্রাম্প আসার পর থেকেই ইরান-মার্কিন সম্পর্কের অবণতি হয়। ৩ জানুয়ারি ইরানের এলিট ফোর্সের প্রধান জেনারেল সোলেইমানিকে হত্যার মধ্য দিয়ে পরিস্থিতি দ্রুত যুদ্ধের দিকে মোড় নেয়। তিন দিন শোক কাটানোর পর ইরান মার্কিন ঘাঁটিতে হামলার মধ্য দিয়ে সেই আশঙ্কা আরও প্রবল হয়। যদিও পরবর্তীতে ইরান বা যুক্তরাষ্ট্র কোনো পক্ষই যুদ্ধ সম্প্রসারণের ইঙ্গিত দেয়নি।
এর পরও প্রতিনিধি পরিষদে ট্রাম্পের যুদ্ধ ক্ষমতা খর্ব করার বিষয়টিকে প্রতিকী তাৎপর্যপূর্ণ মনে করছেন বিশ্লেষকরা। নতুন ওই প্রস্তাবে বলা আছে, প্রতিনিধি পরিষদের অনুমতি ছাড়া প্রেসিডেন্ট একক ক্ষমতা বলে ইরানের বিরুদ্ধে মার্কিন বাহিনীকে ব্যবহার করা যাবে না। প্রস্তাবে আরও বলা হয়, শুধু আক্রমণ আসন্ন হলেই পাল্টা আক্রমণ করা যাবে। বিবিসি জানিয়েছে, মার্কিন কংগ্রেস অনুমোদন করলেও প্রস্তাবটি খোদ মার্কিন প্রেসিডেন্টের সায় থাকবে না অর্থাৎ তিনি তাতে স্বাক্ষর করবেন না।
প্রস্তাবে ভোটাভুটির আগে ডেমোক্র্যাট স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি বলেন, গত সপ্তাহে ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে ড্রোন হামলায় ইরানি জেনারেল কাসেম সোলেইমানি নিহত হওয়ার আমি মনে করি না যুক্তরাষ্ট্র আর নিরাপদ নেই।
অন্যদিকে ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জঁ-যুব লে দ্রিয়ান বলেছেন, ইরান আগামী এক-দুই বছরের মধ্যে পারমাণবিক অস্ত্রধারী দেশে পরিণত হবে। তেহরান পরমাণু চুক্তি থেকে সরে যাওয়ার পর তিনি এমন আশঙ্কা করছেন। মন্ত্রী বলেন, যদি তারা ভিয়েনায় হওয়া চুক্তির শর্ত ধারাবাহিকভাবে লঙ্ঘন করতে থাকে, তা হলে অবশ্যই, অতি অল্প সময়ের মধ্যে-সেই সময় হয়তো ১ থেকে ২ বছরের মধ্যেই তারা পারমাণবিক অস্ত্রের সক্ষমতা অর্জন করবে।
মার্কিন প্রেসিডেন্টের নির্দেশে সোলেইমানি হত্যার বিষয়টি মার্কিন মিত্ররা মেনে নিতে পারেননি। তারা সোলেইমানিকে হুমকি মনে করলেও হত্যাকা-কে সমর্থন করেনি। আর ট্রাম্প সোলেইমানিকে হত্যার নির্দেশ দিয়ে তিনি বলেছিলেন ‘যুদ্ধ শুরু নয়, শেষ করছি’। যদিও বিশ্লেষকরা বলছেন, ইরান-মার্কিন দ্বন্দ্ব দ্রুত শেষ হওয়ার সম্ভাবনা কম। দুটি দেশই মধ্যপ্রাচ্যে তাদের প্রভাব বিস্তারের জন্য নানা কৌশল নেবে।