261344

প্রসাধনীর মূল উপাদান গোবর ও গোমূত্র, খুব অল্প দিনেই কোটিপতি!

ডেস্ক রিপোর্ট : শিরোনাম পড়ে নিশ্চয় অবাক হয়েছেন! হ্যাঁ এটিই সত্যি! রূপসজ্জা, ময়লা পরিষ্কারক ও জীবাণুনাশক এই প্রসাধনীগুলো তৈরি হচ্ছে গোবর এবং গোমূত্র থেকে। শুধু তাই নয়, এসব প্রসাধনী বিক্রি করেই কোটিপতি হয়েছেন এক ব্যক্তি।

ভারতের তামিলনাড়ুর দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রদেশ তামিলনাড়ুন মাদুরাই শহরের একজন বাসিন্দা গণেশ পালস্বামী। তার রয়েছে দুই কক্ষের একটি বাসা। যার দেয়ালে বছরজুড়ে হাতে তৈরি নানা ধরনের কারুকার্য শোভা পাচ্ছে। এতে রয়েছে বৌদ্ধর মুখের প্রতিকৃতীও। এছাড়াও তিনি নিজ হাতে তৈরি করেছেন বিভিন্ন দেবদেবীর মূর্তি। এসবই শোভা পাচ্ছে তার এই বাসায়।

তবে অবাক করা তথ্য হচ্ছে, এসব কারুকার্যের সবকিছুই তিনি তৈরি করেছেন তার পালিত দুটি গরুর গোবর এবং মূত্র মিশ্রিত করে। পালস্বামী বলেন, ‘আমি অন্য গরুর গোবর এবং মূত্র স্পর্শ করতে পারি না। আমার গরুগুলো দেশি জাতের এবং এদের ঘাষ এবং প্রাকৃতিক খাবার দেয়া হয়। আমার মতে এ কারণে গরু দুটির গোবর এবং মূত্র অন্য গরুর চেয়ে ভিন্ন মানের।’

তিনি বলেন, গরুর মলমূত্রে অ্যান্টিসেপটিক রয়েছে। এছাড়া কোনো ধরনের ছাঁচ ব্যবহার না করেই গো মলমূত্র যেকোনো কাঠামো দেয়া সম্ভব।

তবে পালস্বামীর রাজনৈতিক কোনো দলের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা নেই। তবে দেশজুড়ে বাড়তে থাকা জৈব উপাদান নির্ভর কৃষকরা সরকার থেকেও বিভিন্ন ধরনের ব্যবসায়িক সুযোগ-সুবিধা পান। গো-মলমূত্র ব্যবহার করে ব্যবসা করলে সেখানে ৬০ শতাংশ ভর্তুকি পান সরকার। তাছাড়া ভারতে গরুকে দেবতা হিসেবে পূজাও করা হয়।
ভারতে এখন ত্বকের ব্যবহারযোগ্য নানা প্রসাধনী সামগ্রী তৈরি করে বাজারজাত করছে অ্যামাজন, ফ্লিপকার্ট ও ইবের মতো শীর্ষস্থানীয় ই-কমার্স জায়ান্ট প্রতিষ্ঠান। এগুলোর মধ্যে সাবান, শ্যাম্পু, টুথপেস্ট এবং ফেসওয়াসও রয়েছে।

মুম্বাইভিত্তিক গো মলমূত্র ব্যবহার করে প্রসাধনী সামগ্রী প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান কাউপ্যাথির প্রতিষ্ঠাতা উমেশ সোনি। তিনি গোবর দিয়ে সাবান তৈরি করে বাজারজাত করতে শুরু করেন ২০১২ সালে। দেশি গরুর মলমূত্র ব্যবহার করে তিনিই প্রথম ভারতে প্রসাধনী সামগ্রী তৈরি শুরু করেন। দেশটিতে দিনে দিনে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে গোবর থেকে তৈরি সাবান, ফেসওয়াশ, শ্যাম্পু, শাওয়ার জেল, আই জেল, টুথপেস্ট ও শেভিং ক্রিম। এর সবই তৈরি করে উমেশ সোনির প্রতিষ্ঠান কাউপ্যাথি।

সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টকে উমেশ সোনি বলেন, বিশ্বের দেশের চার শতাধিক হোলসেল দোকান এবং বিশ্বের ১৪টি দেশে তিনি গরুর গোবর এবং মূত্র থেকে তৈরি নিত্য পণ্যসামগ্রী সরবরাহ করেন। তার কোম্পানি কাউপ্যাথির বার্ষিক আয় আড়াই কোটি রুপি ছাড়িয়ে গেছে।

তবে তার প্রতিষ্ঠানের পণ্যগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় এবং বিক্রিত পণ্য হলো গো-সাবান। এই সাবান তিনি গরুর দুধ, গোবর, মূত্র, ঘি ও দইয়ের মিশ্রণে তৈরি করেন। উমেশ সোনি বলেন, ব্যবসা শুরুর প্রথম দিকে তিনি কাউপ্যাথির তৈরি অর্ধেকের বেশি পণ্য উপহার দিতেন। সূত্র : ডেইলি বাংলাদেশ

পাঠকের মতামত

Comments are closed.