262676

করোনা সন্দেহে ঢাকায় ৫ জন আইসোলেশনে!

ডেস্ক রিপোর্ট : করোনাভাইরাস আক্রান্ত সন্দেহে রাজধানীর একটি হাসপাতালে ভর্তি পাঁচজনকে আইসোলেশনে রাখা হয়েছে। তবে তাদের সবারই শারীরিক অবস্থা ভালো বলে জানিয়েছে সরকারের জাতীয় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর)।

মঙ্গলবার করোনাভাইরাস নিয়ে নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে আইইডিসিআর পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদি সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, অতিরিক্ত সতর্কতার অংশ হিসেবে পাঁচজনকেই আইসোলেশনে রাখা হয়েছে। করোনা উপসর্গ আছে, সন্দেহভাজন এমন কাউকে পাওয়া গেলে তাকে সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে পাঠানো হয়। হাসপাতালে আইসোলেশন আগে থেকেই প্রস্তুত থাকে। সেই আইসোলেশনে রেখেই ওই ব্যক্তির নমুনা সংগ্রহ করে তা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। করোনা আক্রান্ত নন, তা নিশ্চিত হওয়ার পরই তাকে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়। তবে ওই পাঁচজন কোন হাসপাতালে ভর্তি তা জানায়নি আইইডিসিআর।

করোনাভাইরাস আক্রান্তদের চিকিৎসা নিশ্চিত করতে বেসরকারি হাসপাতালেও আইসোলেশন ইউনিট চালুর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানান ডা. ফ্লোরা। তিনি বলেন, সরকারি সব হাসপাতালে ইতোমধ্যে পাঁচ শয্যার আইসোলেশন ইউনিট প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এখন বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে আইসোলেশন শয্যা প্রস্তুত রাখতে বলা হয়েছে।

করোনাভাইরাসের উপসর্গগুলো বিস্তারিত তুলে ধরে তিনি বলেন, করোনার লক্ষণ-উপসর্গ নিউমোনিয়ার মতো। জ্বর দিয়ে শুরু হয়, সঙ্গে সর্দি, শুকনো কাশি, মাথাব্যথা, গলাব্যথা ও শরীর ব্যথা থাকতে পারে। এক সপ্তাহের মধ্যে শ্বাসকষ্ট অনুভূত হতে পারে। এই ভাইরাস প্রতিরোধের কোনো টিকা কিংবা বিশেষায়িত ওষুধ এখনও আবিস্কার হয়নি। তবে চিকিৎসকরা বলেছেন, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভালো থাকলে, আক্রান্ত ব্যক্তি কিছুদিনের মধ্যেই সুস্থ হয়ে যাবেন। তবে ডায়াবেটিস, কিডনি, হৎযন্ত্র বা ফুসফুসের পুরোনো রোগীদের ক্ষেত্রে ভয়াবহ জটিলতা দেখা দিতে পারে। মানুষের দেহে এই ভাইরাসটি প্রবেশের এক থেকে ১৪ দিনের মধ্যে লক্ষণ দেখা দিতে পারে।

বিদেশফেরতদের হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার পরামর্শ দিয়ে পরিচালক বলেন, করোনার সংক্রমণ ঘটেছে, এমন দেশ থেকে কেউ বাংলাদেশে এলে তাদের ন্যূনতম ১৪ দিন বাসা-বাড়িতে অর্থাৎ হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকতে বলা হয়েছে। দেশে এখন পর্যন্ত ৯৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। তারা কেউ করোনা আক্রান্ত নন।

করোনাভাইরাস দ্রুত ছড়িয়ে পড়ায় প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধেই সরকার বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে জানিয়ে ডা. ফ্লোরা বলেন, ঢাকায় আসা অতিথিদের সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দিতে আবাসিক হোটেলগুলোকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আক্রান্ত দেশ থেকে কেউ এলে তা অবহিত করতে বলা হয়েছে।

তবে বিদেশফেরতদের হেনস্তা না করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, বিদেশ থেকে যারা আসছেন, তারা করোনাভাইরাস আক্রান্ত এমনটি ভাবা সঠিক নয়। সুতরাং তাদের সঙ্গে যেন এমন আচরণ না করা হয়, যাতে তারা হেনস্তার শিকার হন।

জাপান, কোরিয়া ও ইরানে করোনা ছড়িয়ে পড়ার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে আইইডিসিআর পরিচালক বলেন, এই তিনটি দেশে রোগটি ছড়িয়ে পড়া বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত উদ্বেগের। কারণ, তিনটি দেশের সঙ্গেই বাংলাদেশের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। শিক্ষার্থীরা সেখানে লেখাপড়া করেন, কর্মীরা কাজ করেন। এছাড়া বাণিজ্যিক সংযোগও রয়েছে।

পাঠকের মতামত

Comments are closed.