264414

ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের সেরা অ্যাপ কোনটি?

করোনাভাইরাস মহামারি আধার ধারণ করলে বিশ্বব্যাপী চলছে লকডাউনে। সরকারি-বেসরকারি অফিস বন্ধ। মানুষ হোম কোয়ারেন্টেনে থেকেই অফিস-আদালতের কাজ সারছেন। এই পরিস্থিতিতে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের প্রয়োজনীয়তা দেখা হয়েছে। ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের জন্য বিভিন্ন ধরনের অ্যাপ রয়েছে। এর মধ্যে কোনটা সেরা সেটা বলা কঠিন। কারণ এক একটা অ্যাপের এক এক ফিচার। ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের কয়েকটি অ্যাপ সম্পর্কে জেনে নিন। তারপর আপনিই ঠিক করুন কোনটা ব্যবহার করবেন।

জুম

ভিডিও কনফারেন্সিং অ্যাপের মধ্যে জনপ্রিয়তার শীর্ষে আছে জুম। প্রতিদিন বিশ্বব্যাপী অন্তত ২০ কোটি এই অ্যাপ ব্যবহার করে ভিডিও কনফারেন্স করছেন। যদিও জুম অ্যাপের মধ্যে সুরক্ষায় একাধিক গাফিলতি রয়েছে। যার জন্য অনেকেই এই ব্যবহার সুরক্ষিত মনে করছেন না।

জুম ব্যবহার করে বিনামূল্যে একটি কনফারেন্স কলে ১০০ জন অংশ নিতে পারেন পেইড প্ল্যানে একটি কনফারেন্সে যোগ দিতে পারেন ৫০০ জন। প্রায় সব অপারেটিং সিস্টেমে এই অ্যাপ কাজ করার কারণে সুরক্ষায় গাফিলতি থাকলেও এখনও অনেকেই জুম ব্যবহার চালিয়ে যাচ্ছেন।

স্কাইপ মিট নাউ জুমের বিকল্প হিসাবে সম্প্রতি মাইক্রোসফট বাজারে এনেছে স্কাইপ মিট নাউ। এই ভিডিও কনফারেন্স অ্যাপে একসঙ্গে ৫০ জন কথা বলতে পারবেন। বিনামূল্যে এই পরিষেবা ব্যবহার করা যাবে। এই অ্যাপে কল রেকর্ড করা যাবে। থাকছে স্ক্রিন শেয়ারিংয়ের সুবিধা। কোম্পানির ওয়েবসাইট থেকে স্কাইপ মিট নাউ ব্যবহার শুরু করতে পারবেন।

গুগল হ্যাংআউটস প্রায় সবার কাছেই একটি গুগল অ্যাকাউন্ট রয়েছে। তাই গুগল হ্যাংআউটস ব্যবহার করে সহজেই ভিডিও কনফারেন্স করা সম্ভব। যদিও একসঙ্গে ১০ জনের বেশি কনফারেন্সে যোগ দিতে পারবেন না।

ডিসকর্ড জুমের মতো জনপ্রিয়তা না পেলেও ইতিমধ্যেই ভিডিও কনফারেন্স করতে অনেকেই ডিসকর্ড ব্যবহার শুরু করেছেন। এই অ্যাপ ব্যবহার করে একসঙ্গে ৫০ জন ভিডিও কনফারেন্সে যোগ দিতে পারবেন। গেমারদের মধ্যে বিশেষভাবে জনপ্রিয় এই প্ল্যাটফর্ম। Discord ওয়েবসাইটে গিয়ে অথবা অ্যাপ ডাউনলোড করে সাইন আপ করে এই ভিডিও কনফারেন্স অ্যাপ ব্যবহার শুরু করা যাবে।

মাইক্রোসফট টিমস জুমের বিকল্প হিসেবে মাইক্রোসফট টিমস ব্যবহার করে দেখতে পারেন। ইতিমধ্যে অফিস ৩৬৫ সাবস্ক্রিপশন থাকলে ওয়ার্ড, এক্সেল ও পাওয়ার পয়েন্টের সঙ্গে এই অ্যাপ ব্যবহার করা যাবে। যদিও করোনা ভাইরাস লকডাউনের কারণে সব গ্রাহককে বিনামূল্যে এই পরিষেবা ব্যবহারের সুযোগ করে দিয়েছে মাইক্রোসফট।

গুগল মিটস এই অ্যাপ দিয়ে ভিডিও কনফারেন্স করার সময় কল রেকর্ড করে রাখা যায়। গুগল জানিয়েছে, গত কয়েক সপ্তাহে তাদের ভিডিও কনফারেন্সিং অ্যাপ গুগল মিটের ব্যবহার বেড়েছে ৬০ শতাংশ। এজন্য তারা অ্যাপটিকে আপডেটও করেছে। এনেছে নানা ফিচার। এরই একটি অন্যতম ফিচার হলো কল রেকর্ডিং সুবিধা।

হোয়াটসঅ্যাপ লকডাউনের কারণে গ্রুপ ভিডিও কল বা ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের জনপ্রিয়তা বেড়েছে। এই অবস্থায় গ্রুপ ভিডিও কলে অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা বাড়াচ্ছে হোয়াটসঅ্যাপ। এই মুহূর্তে হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার করে একসঙ্গে সর্বোচ্চ চারজন গ্রুপ ভিডিও কল করতে পারেন। শিগগিরই আটজন মিলে গ্রুপ ভিডিও কল করা যাবে।

ফেসবুক মেসেঞ্জার রুমস ফেসবুক মেসেঞ্জারের রুমস অ্যাপ ব্যবহার করে এক সঙ্গে ৫০ জনকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত করা যাবে। এজন্য ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থাকা বাধ্যতামূলক নয়।

অ্যাপটি নিয়ে ফেসবুক প্রধান মার্ক জাকারবার্গ বলেন, অফিসের কাজে জুম ব্যবহার হলেও মেসেঞ্জার রুমসে থাকছে বিভিন্ন সোশ্যাল ফিচার। অনেক স্বতঃস্ফূর্তভাবে ডিজাইন হয়েছে এই অ্যাপ।

ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ছাড়াই মেসেঞ্জার রুমস ব্যবহার করা যাবে। অ্যাপ ডাউনলোড না করেই আমন্ত্রণের সঙ্গে পাঠানো লিঙ্কে ক্লিক করে যে কোন ব্যক্তি এই ভিডিও কনফারেন্স পরিষেবা ব্যবহার করতে পারবেন।

গুগল ডুয়ো এই অ্যাপ থেকেই করতে পারেন ভিডিও কল। যাকে কল করছেন সে যদি অ্যানড্রয়েড ফোন ব্যবহার না-ও করে তাও কলিং করা যাবে। এই অ্যাপটি ইনস্টল করতে গেলে প্রথমে লিখতে হবে দেশের নাম ও ফোন নম্বর। এর পর মোবাইলে আসবে ভেরিফিকেশন কোড। ভেরিফিকেশন হয়ে গেলে শুরু করতে পারবেন ভিডিও কলিং।

ডুয়োতে রয়েছে একটি ফিচার— ‘নক নক’। কেউ যদি এই অ্যাপ মারফত আপনাকে কল করে, তবে কে কল করছে তার প্রিভিউ দেখাবে এই নক নক ফিচার।

এই অ্যাপের মাধ্যমে প্রয়োজন পড়লে কাউকে ব্লকও করা যায় যাতে সে আর ফোন করতে না পারে। সবচেয়ে মজার কথা, যে ব্লকড হবে সে বিষয়টি জানতেও পারবে না।

ইচ্ছে করলে ডিজএবল করেও রাখা যাবে ডুয়ো তবে সেটা কোনও একটি বা দু’টি বিশেষ কনট্যাক্টের ক্ষেত্রে করা সম্ভব নয়। ডিজএবল হলে অ্যাপের মাধ্যমে আর ভিডিও কলিং হবে না।

ডুয়োর সবচেয়ে বড় বিশেষত্ব হল, এখানে এইচডি রেজলিউশনে ভিডিও কলিং সম্ভব।

পাঠকের মতামত

Comments are closed.