276161

ভূমিকম্প মানুষের জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে সতর্কবার্তা !

ইসলাম ডেস্ক: পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে বিভিন্ন সময়ে কোথাও তীব্রতা বেশি, কোথাও কম ভূমিকম্প হয়। তবে যেমনই হোক, ভূমিকম্প হলো মানুষের জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে সতর্কবার্তা। যেন মানুষ তাওবা করে মহান আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পণ করে। নিজেদের আচার-আচরণ শুধরে নেয়। সার্বিক নিরাপত্তার জন্য দোয়া করে। আল্লাহকে অনেক বেশি স্মরণ করে এবং তার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে। সূত্র: বাংলানিউজ

১৯৬০ খ্রিস্টাব্দের পর থেকে ভূমিকম্পের হার বেড়ে গেছে। ঘন ঘন ভূমিকম্প হচ্ছে। কেবল তাই নয়, গবেষকরা জানিয়েছেন, যেকোনো সময় বাংলাদেশে রিখটার স্কেলে ৮ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানতে পারে বলেও বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

ভূমিকম্প হওয়ার কারণ: প্রাকৃতিক নানা বিপর্যয়ের অন্যতম কারণ মানুষের অপকর্ম। এগুলোর পথ ধরেই মানুষ কিয়ামতের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এ প্রসঙ্গে সতর্ক করে প্রিয়নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) বলেন, ‘যখন অবৈধ উপায়ে সম্পদ অর্জিত হবে। কাউকে বিশ্বাস করে সম্পদ গচ্ছিত রাখা হবে কিন্তু তা আত্মসাত করা হবে (অর্থাৎ যার সম্পদ সে আর ফেরত পাবে না)। জাকাতকে দেখা হবে জরিমানা হিসেবে। ধর্মীয় শিক্ষা ছাড়া বিদ্যা অর্জন করা হবে, একজন পুরুষ তার স্ত্রীর বাধ্যগত হয়ে মায়ের সঙ্গে বিরূপ আচরণ করবে। বন্ধুকে কাছে টেনে নেবে আর পিতাকে দূরে সরিয়ে দেবে। মসজিদে উচ্চস্বরে শোরগোল (কথাবার্ত) হবে। যখন সবচেয়ে দুর্বল ব্যক্তিটি সমাজের শাসক রূপে আবির্ভূত হবে। সে সময় তোমরা অপেক্ষা করো— রক্তিম বর্ণের ঝড়ের (এসিড বৃষ্টি), ভূকম্পনের, ভূমিধসের, রূপ বিকৃতির (লিঙ্গ পরিবর্তন), পাথর বৃষ্টির এবং সুতো ছেঁড়া (তাসবিহ) দানার ন্যায় একটির পর একটি নিদর্শনগুলোর জন্য। ’ (তিরমিজি, হাদিস নং : ১৪৪৭)

আল্লামা ইবনু কাইয়িম (রহ.) বলেন, মহান আল্লাহ মাঝে মাঝে পৃথিবীকে জীবন্ত হয়ে ওঠার অনুমতি দেন। ফলে বড় ধরনের ভূমিকম্প অনুভূত হয়। তখন এই ভূমিকম্প মানুষকে ভীত করে। তারা মহান আল্লাহর নিকট তাওবা করে, পাপ কর্ম ছেড়ে দেয়, আল্লাহর প্রতি ধাবিত হয় এবং তাদের কৃত পাপ কর্মের জন্য অনুতপ্ত হয়ে মোনাজাত করে। আগেকার যুগে যখন ভূমিকম্প হতো, তখন সঠিক পথে পরিচালিত সৎকর্মশীল লোকেরা বলতো, ‘মহান আল্লাহ আমাদেরকে সতর্ক করেছেন। ’

ভূমিকম্প বিষয়ে পবিত্র কোরআনের ‘যিলযাল’ নামে স্বতন্ত্র একটি সুরা নাযিল করা হয়েছে। মানুষ শুধু কোনো ঘটনার কারণ সম্পর্কে জানতে আগ্রহী হয় এবং ভূতত্ত্ববিজ্ঞানও এই কার্যকারণ সম্পর্কেই আলোচনা করে থাকে।

ভূতত্ত্ববিজ্ঞান বলে, ভূ-অভ্যন্তরে শিলায় পীড়নের জন্য যে শক্তির সঞ্চয় ঘটে, সেই শক্তির হঠাৎ মুক্তি ঘটলে ভূপৃষ্ঠ ক্ষণিকের জন্য কেঁপে ওঠে এবং ভূত্বকের কিছু অংশ আন্দোলিত হয়। এমন আকস্মিক ও ক্ষণস্থায়ী কম্পনকে ভূমিকম্প (Earthquake) বলে। সাধারণত তিনটি কারণে ভূমিকম্পের উত্পত্তি হয়ে থাকে—ভূপৃষ্ঠজনিত, আগ্নেয়গিরিজনিত ও শিলাচ্যুতিজনিত কারণে ভূমিকম্প হয়।

মহান আল্লাহ বলেন, ‘আমি ভয় দেখানোর জন্যই (তাদের কাছে আজাবের) নিদর্শনগুলো পাঠাই। ’ (সুরা বনি ইসরাইল, আয়াত নং : ৫৯)। আল্লাহ তায়ালা আরও বলেন, “বলে দাও, ‘আল্লাহ তোমাদের ওপর থেকে অথবা তোমাদের পায়ের নিচ থেকে আজাব পাঠাতে সক্ষম। ’ (সুরা আনআম, আয়াত নং : ৬৫)

বুখারি শরিফে আছে, জাবির ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘যখন তোমাদের পায়ের নিচ থেকে আজাব পাঠাতে সক্ষম’ আয়াতটি নাজিল হলো, তখন রাসুল (সা.) বললেন, ‘হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করছি। ’ ”(বুখারি)

শায়খ ইস্পাহানি (রহ.) এই আয়াতের তাফসির করে বলেন, ‘এর ব্যাখ্যা হলো, ভূমিকম্প ও ভূমিধসের মাধ্যমে পৃথিবীর অভ্যন্তরে ঢুকে যাওয়া (পৃথিবীতে ভূমিকম্প হওয়া)। ’

পাঠকের মতামত

Comments are closed.