182458

রাজ্জাককে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য বদিউলের

ঢাকাই চলচ্চিত্রের সূতিকাগারখ্যাত এফডিসিতে চলছে নৈরাজ্য। বয়কট, নিষিদ্ধ, শোকজ নিয়েই মেতে উঠেছে চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির বর্তমান কার্যকরী কমিটি।

শীর্ষ চিত্রনায়ক শাকিব খান, বাপ্পারাজ, নির্মাতা শামিম আহমেদ রনি নাটকের পর শেষ পর্যন্ত এ কমিটির মহাসচিব বদিউল আলম খোকন নায়করাজ রাজ্জাককে নিয়েও কটু মন্তব্য করতে ছাড়েননি।

শনিবার (২১ মে) দুপুরে এফডিসিতে সমিতির এক আড্ডায় নায়করাজ রাজ্জাককে অকথ্য ভাষায় গালি দিয়ে কথা বলেছেন সমিতির মহাসচিব বাদিউল আলম খোকন। এমন অভিযোগই কাছে করেছেন সমিতির কার্যনির্বাহী সদস্য চিত্রপরিচালক গাজী মাহবুব।

দুপুরে সমিতির অভ্যন্তরে আড্ডা দিচ্ছিলেন বদিউল আলম খোকন, নির্মাতা গাজী মাহবুব, শাহীন সুমন, শাহ আলম কিরন, সায়মন তারিক, সাফিউদ্দিন সাফি, নৃত্যপরিচালক কবিরুল ইসলাম রতন, ফাইট ডিরেক্টর আরমানসহ আরও কয়েকজন।

এ সময় সদ্য ঘটে যাওয়া বিভিন্ন রকম ঘটন-অঘটন নিয়ে আনঅফিসিয়ালি কথা হচ্ছিল নিজেদের মধ্যে। প্রসঙ্গক্রমে উঠে আসে রাজ্জাকের নাম। সাম্প্রতিক সময়ে পরিচালক সমিতি প্রসঙ্গে রাজ্জাক তনয় বাপ্পারাজ বিভিন্ন মন্তব্য করেন। এ নিয়ে পরিচালক সমিতি তাকে শোকজ নোটিশ পাঠায়।

জবাবে বাপ্পারাজও সমিতির অনিয়ম সম্পর্কে মুখ খুলবেন বলে হুমকি দেন।

এ প্রসঙ্গে শেষ পর্যন্ত রাজ্জাকও মুখ খুলেছেন। তিনি গণমাধ্যমকে বলেছেন, ’বিষয়টি আমি পর্যবেক্ষণ করছি। সময় হলেই সবকিছু খোলাসা করব’। রাজ্জাকের এ মন্তব্যে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন পরিচালক সমিতির মহাসচিব বদিউল আলম খোকন। তিনি রাজ্জাকের মন্তব্যের বিরোধিতা করে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

খোকন বলেন, ’রাজ্জাক কী (….) করেছেন ইন্ডাস্ট্রিতে। তিনি একটা দুই নাম্বার লোক। উত্তরায় রাজলক্ষ্মী কমপ্লেক্স উনি কীভাবে করেছেন তা সবই জানি। আমি মুখ খুললে তিনি (…..)হয়ে যাবেন।’

বদিউল আলম খোকনের এ মন্তব্যের সঙ্গে সঙ্গে প্রতিবাদ করেন পরিচালক গাজী মাহবুব। তিনি বলেন, ’খোকন ভাই, আপনি এসব কী বলছেন? নায়করাজ একটা ইন্সটিটিউট। বাপ্পারাজের ঘটনায় আপনি কেন রাজ্জাক সাহেবকে টানছেন? উনি চলচ্চিত্রে আমাদের আইডল।’

তখন খোকন ক্ষেপে গিয়ে বলেন, ’তুমি (পরিচালক গাজী মাহবুব) তো এখন রাজ্জাকের দালাল। কয়দিন আগে শাকিবের ছিলে, এখন রাজ্জাকের দালালি করছো। আমি তোমাকে ব্যান (নিষিদ্ধ) করে দেব।’

খোকনের এসব কথার প্রতিবাদে গাজী মাহবুব জানতে চান, ’আমাকে ব্যান করার কারণ কী? আপনি শাকিবকে ব্যান করেন, বাপ্পারাজকে ব্যান করেন। এখন রাজ্জাক সাহেবকে গালি দিচ্ছেন। কয়দিন পর আলমগীর সাহেব, ফারুক সাহেব যারাই প্রতিবাদ করুক না কেন তাদের ব্যান করবেন! আপনি এসব কী পেয়েছেন?’

এরপর খোকন রেগে গিয়ে বলেন, ’মাহবুব তুমি বেয়াদব হয়ে গেছ। রাজ্জাক ইন্ডাস্ট্রিতে কী বাল ছিঁড়েছে? তোমার বেয়াদবির জন্য আমি তোমাকে ব্যান করব। তোমাকে থাপ্পড় দিয়ে বের করে দেব।’

গাজী মাহবুবও এ সময় উত্তেজিত হয়ে যান।

তিনি খোকনের উদ্দেশে বলেন, ’আপনি মহাসচিব, তাই এখানে (সমিতির অভ্যন্তরে) কিছু করতে পারব না। সমিতির বাইরে আসেন। আপনি অশ্লীল ছবির পরিচালক ছিলেন। আপনাকে নিষিদ্ধ করেছিল সমিতি। অশ্লীলতার দায়ে আপনার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছিল। বাইরে আসেন, একজন অশ্লীল পরিচালককে আমি জুতা দিয়ে পেঠাব।’ এরপর আরও বাক-বিতণ্ডা হয়।

ঝগড়ার এক পর্যায়ে গাজী মাহবুবকে মারার জন্য বদিউল আলম খোকন সমিতির রান্নাঘর থেকে ছুরি দিয়ে আসেন বলেও অভিযোগ করেন গাজী মাহবুব। ছুরির খোঁচায় তিনি আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছেন বলেও জানিয়েছেন।

এসময় সমিতিতে উপস্থিত অন্যরা নায়করাজকে অপমান করে কথা বলার কোনো প্রতিবাদ করেননি বলে জানা গেছে।

পরে গাজী মাহবুব ও খোকনের মধ্যকার মারামারি থামিয়ে সমিতি থেকে গাজী মাহবুবকে বের করে নিয়ে যান শাহআলম কিরন।

গাজী মাহবুব জানান, তিনি বিষয়টি চলচ্চিত্র পরিচালক দেলোয়ার জাহান ঝন্টু ও প্রযোজক খোরশেদ আলম খসরুকে জানিয়েছেন। এছাড়াও আইনি ব্যবস্থা নেয়ারও প্রস্তুতি নিচ্ছেন তিনি।

এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বদিউল আলম খোকনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তার ব্যবহৃত দুটি মোবাইলফোনই বন্ধ পাওয়া যায়।

পাঠকের মতামত

Comments are closed.