কোঁকড়ানো, দোমড়ানো কাদা মাখা এই জিনস-এর দাম ২৭০০০ টাকা! কিন্তু কেন
জিনস-এর ফ্যাশন ট্রেন্ডকে যদি কেউ ফলো করেন তো তাঁর মাথা খারাপ হতে বাধ্য। বিশ্বের জনপ্রিয়তম এই পোশাকটি যে সব বিবর্তনের মধ্যে দিয়ে গিয়েছে, তাতে ফ্যশন সচেতন মানুষের অন্য পরিচয় উন্মাদ ছাড়া অন্য কিছু হওয়া সম্ভবই না। মোটামুটি ১৯৬০-এর দশক থেকে পপুলার হয়ে ওঠা এই পোশাকটি সেই সময়ে হিপি ও বিটনিক সংস্কৃতির সিম্পটম ছিল। মনে করুন এই ভারতবর্ষেই ‘হরে রাম হরে কৃষ্ণ’ (১৯৭১) ছবিতে জিনাত আমনের কস্টিউমকে। হিপি হওয়া বা কার্যত বখে যাওয়া মেয়েটিকে আদ্যপান্ত জিনস পরিয়ে রেখেছিলেন পরিচালক দেব আনন্দ। ময়লা, একটু ঘষা, খানিকটা খসটে পেন্টুল আর জ্যাকেট সেই সময়ে ‘ব্যতিক্রম’-এর পরিচায়ক।
কিন্তু ক্রমে ব্যতিক্রমটাই ট্রেন্ড হয়ে দাঁড়ায়। ১৯৮০-র দশকে জিনস ফেডেড অবস্থাতেই বিক্রি হতে শুরু করে। ১৯৮০-র দশকের শেষ দিকে আসে অ্যাসিড ওয়াশড জিনস। তার পরে ক্রমে স্নো ওয়াশড, শটগান ওয়াশ্ড ইত্যদিও মুখ বাড়ায়। গত পনেরো-বিশ বছরে ওর্ন আউট ডায়গা করে নিয়েছে ব্যাপক ভাবে। টোটাল ছেঁড়া খোঁড়া এই জিনস-এর ছৈরত দেখে সাবেকিরা ‘ভিখিরির পোশাক’ বলে কটাক্ষও হেনেছেন। কিন্তু তাতে থেমে থাকেনি জিনস-কে আরও গোলমেলে করে তোলার উদ্যোগ।
সম্প্রতি ডেনিম ফ্যাশনের ট্রেন্ডকে নতুন করে সেট করল মার্কিন ফ্যাশন চেন ‘নর্ডস্টর্ম’। কোঁচকানো, দোমড়ানো এই জিনস-এর মূল বিশেষত্ব এটি কাদা মাখা। ‘মাডি জিনস’ নামের এই প্রোডাক্টটিকে নর্ডস্টর্ম বাজারে ছেড়েছে সম্প্রতি। নর্ডস্টর্ম তার নিজস্ব ওয়েবসাইটে এই দিনস-কে বলেছে ‘রাগেড আমেরিকানা ওয়ার্কওয়্যার’। ফলে এটি ‘নোংরা’ হওয়া অনিবার্য। কিন্তু নোংরা জিনস তো নতুন কিছু নয়। ডার্টি জিনস-এর ফ্যাশন ১৯৭০ দশক থকেই চালু। তা হলে?
নর্ডস্টর্ম তাদের এই নতুন জিনস-এ পার্মানেন্ট কাদা মাখিয়ে বাজারে ছাড়ছে। বুজুর্গরা বলতেই পারেন— ‘অঙ্গার শতধৌতেন’। এর ময়লা শত ধোলাইতেও উঠবে না। কিন্তু কত দাম পড়ছে এই নয়া পেন্টুলুনের? দাম শুনলে আঁতকে উঠতেই হবে। ভারতীয় মুদ্রায় মাডি জিনস-এর দাম পড়ছে ২৭০০০ টাকার কিছু বেশি।
ফ্যাশনবাজরা একবার ট্রাই নেবেন নাকি?