206065

অজানা রোগে দুসপ্তাহে একই পরিবারে ৫ জনের মৃত্যু, গ্রামজুড়ে আতঙ্ক

ডেস্ক রিপোর্ট : ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার ভান্ডারদহ মরিচপাড়া গ্রামে অজ্ঞাত রোগে গত ১৫ দিনে এক পরিবারের পাঁচ সদস্যের মৃত্যু হয়েছে। এতে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। চিকিৎসকেরা বলছেন, কোন কারণে ওই পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে, তা সঠিকভাবে নিরূপণ করা যায়নি।

ঠাকুরগাঁওয়ের ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন শাহজাহান নেওয়াজের নেতৃত্বে একটি চিকিৎসা দল গতকাল সোমবার ওই গ্রাম পরিদর্শন করে। এ সময় তাঁরা গ্রামবাসীকে আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দেন।

জেলা সিভিল সার্জনের কার্যালয়, পরিবার ও স্থানীয় সূত্র বলেছে, প্রায় দুই সপ্তাহ আগে ভান্ডারদহ মরিচপাড়া গ্রামের ফজর আলীর ছেলে আবু তাহের (৫৫) হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। জ্বর, মাথাব্যথা, গলা বসে যাওয়াসহ নানা লক্ষণ দেখা দেয় তাঁর মধ্যে। ৯ ফেব্রুয়ারি তিনি মারা যান। একই উপসর্গ নিয়ে ২০ ফেব্রুয়ারি মারা যান আবু তাহেরের জামাতা হাবিবুর রহমান (৩৫)। পরদিন মারা যান তাহেরের স্ত্রী হোসনে আরা (৪৫)। এর দুই দিন পর রোববার অসুস্থ হয়ে পড়েন তাহেরের দুই ছেলে ইউসুফ আলী (৩০) ও মেহেদী হাসান (২৭)। স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে ইউসুফ মারা যান। আর রংপুর মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রোববার রাতে মৃত্যু হয় মেহেদীর। শেষ তিনজনেরও আবু তাহেরের মতোই উপসর্গ দেখা দিয়েছিল।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্র বলেছে, একই ধরনের লক্ষণ নিয়ে গতকাল ইউসুফ আলীর স্ত্রী কোহিনুর বেগম, তাঁর শিশুসন্তান (২) ও কোহিনুরের বাবা রবিউল ইসলাম হাসপাতালে ভর্তি হন। পরে তাঁদের রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

ভান্ডারদহ নয়াবাড়ির বাসিন্দা জয়নাল আবেদিন (৭৮) বলেন, তিনি এর আগে এভাবে এত কম সময়ে এক পরিবারের পাঁচজনের মৃত্যুর ঘটনা দেখেননি। এলাকার আরেক বাসিন্দা হাফেজ আলী বলেন, এ নিয়ে এলাকার সবাই আতঙ্কে আছে। কেউ কেউ ভয়ে গ্রাম ছেড়ে অন্যত্র আত্মীয়ের বাড়ি চলে গেছেন।

ধনতলা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান সমর চ্যাটার্জি বলেন, দুই সপ্তাহ আগে এলাকায় অজ্ঞাত এই রোগ দেখা দেয়। এ রোগে এ পর্যন্ত পাঁচজন মারা গেছেন। তাঁরা সবাই একই পরিবারের সদস্য। কিন্তু চিকিৎসকেরা রোগটি সম্পর্কে তেমন কিছু বলতে পারছেন না। মানুষের মধ্যে যাতে আতঙ্ক না ছড়ায়, সে ব্যাপারে কাজ করছেন তিনি।

গতকাল ভান্ডারদহ মরিচাপাড়া পরিদর্শন শেষে ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন শাহজাহান নেওয়াজ বলেন, ‘কোন কারণে ওই পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে, তা সঠিকভাবে বলা যাচ্ছে না। এ রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের প্রথমে প্রচণ্ড জ্বর হয়। একই সঙ্গে মাথাব্যথা ও গলা বসে যায়। এটাকে আমরা অজ্ঞাত রোগ বলছি। পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও রোগটির কারণ নির্ণয়ের জন্য ঢাকা থেকে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) থেকে বিশেষজ্ঞ দল আসবে। দু-এক দিনের মধ্যে প্রকৃত কারণ জানা যাবে।’ সূত্র : প্রথমআলো

পাঠকের মতামত

Comments are closed.