231922

এবারের ঈদে ঢাকার গার্মেন্টগুলো বেতন দিতে পিছিয়ে

ডেস্ক রিপোর্ট : বিগত বছরগুলোর যেকোনো সময়ের চেয়ে এবারের ঈদে তৈরি পোশাকশিল্প খাতের শ্রমিকদের বেতন-বোনাস উল্লেখযোগ্যভাবে দেয়া হয়েছে। বেতন দিতে কিছু গার্মেন্ট অপারগ হলেও বেশিরভাগই বোনাস দিয়েছে। তবে এক্ষেত্রে ঢাকা শহরের বাইরের গার্মেন্টগুলোর চেয়ে ঢাকা শহরের গার্মেন্ট মালিকরা পিছিয়ে আছে। বিজিএমইএ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

জানা গেছে, এবার ঈদের আগে সারা দেশের গার্মেন্টগুলোতে বেতন-বোনাসের জন্য কোথাও তেমন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। সরকার ও বিজিএমইএর ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় এবার ঈদের আগেই শ্রমিকদের বেতন-বোনাস পরিশোধ করার জন্য মালিকদের জরুরিভাবে তাগাদা দেওয়া হয়। এর ফলে পাল্টে গেছে পোশাকশিল্প খাতের চিরাচরিত দৃশ্য।

গত ২৩ মে সরকার ও গার্মেন্ট মালিকরা বসে সিদ্ধান্ত নেন যে, ৩০ মের মধ্যে বিজিএমএর সদস্য সব কারখানার শ্রমিকদের বোনাস দেওয়া হবে। কিন্তু ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশের তথ্য মতে, গত ৩০ মে পর্যন্ত ৫৪ দশমিক ৪৯ শতাংশ কারখানা মালিক তাদের শ্রমিকদের বোনাস দিয়েছেন।

এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বোনাস ও বেতন দিয়েছে আশুলিয়া এলাকার কারখানাগুলো। আর সবচেয়ে কম দিয়েছে রাজধানী ঢাকার ভেতরের মহাখালী, মালিবাগ ও মৌচাক এলাকার কারখানাগুলো। তবে গত শনি ও রোববার আরও প্রায় ৪০ শতাংশ গার্মেন্ট মালিক বোনাস পরিশোধ করেছে বলে বিজিএমইএ জানিয়েছে।

এবার প্রায় ৯৫ শতাংশ গার্মেন্ট ঈদের আগেই শ্রমিকদের বোনাস দিয়েছে। তবে বেশকিছু গার্মেন্ট মালিক বেতন পরিশোধ করতে পারেননি। ঈদের ছুটির পর কারখানা খোলামাত্রই সবার বেতন দেয়া হবে বলে জানা গেছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ রেডিমেড গার্মেন্ট ওয়ার্কার্স ফেডারেশনের সভাপতি লাভলী ইয়াসমিন বলেন, এটা ঠিক যে, এবার অধিকাংশ শ্রমিক ঈদের বোনাস পেয়েছে। কিন্তু বিজিএমইএর বাইরের অনেক গার্মেন্ট মালিক বেতন-বোনাস দেয়নি।

আর বিজিএমইএর সদস্য অনেক মালিকও বেতন দিতে পারেনি। অনেকে আবার ৩০ মে নির্ধারিত দিনের মধ্যে না দেয়ায় শ্রমিকদের বাড়ি যেতে ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে। ভবিষ্যতে যেন এ অসঙ্গতিগুলো দূর করা যায়, সরকারকে সে বিষয়ে আরও বেশি আন্তরিক হতে হবে।

শ্রমিকদের সংগঠন বাংলাদেশ পোশাকশিল্প শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি তৌহিদুর রহমান বলেন, ঈদ উপলক্ষে রোববার থেকে সব গার্মেন্ট বন্ধ হয়ে যাওয়ার কথা। অথচ এখনো ৩০ শতাংশ কারখানায় শ্রমিকদের বেতন দেওয়া হয়নি।

এসব কারখানার মালিকদের কেউ কেউ অর্ধেক বেতন দেওয়ার কৌশল গ্রহণ করেছেন। আবার কেউ কেউ বলছেন, ঈদের ছুটি কাটিয়ে আসার পরপরই বেতন দিয়ে দেওয়া হবে। তবে বেশিরভাগ মালিক বোনাস দিয়েছেন বলে জানান তিনি।

এ বিষয়ে বিজিএমইএর সহ-সভাপতি এসএম মান্নান কচি বলেন, বিজিএমইএর সদস্যভুক্ত ৯০ শতাংশ কারখানায় বোনাস দেওয়া হয়েছে। তবে সেই অনুসারে বেতন দেওয়া হয়নি। রোববারের মধ্যেই অধিকাংশ মালিক বেতন দিয়ে দেবে বলে জানান তিনি।

বিজিএমইর সভাপতি রুবানা হক জানান, রোববারের মধ্যেই সব কারখানার মালিকরা শ্রমিকদের বেতন ও বোনাস পরিশোধ করবে। তার জন্য সব ধরনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। যেসব কারখানার মালিকের বেতন পরিশোধ করার সক্ষমতা নেই, তারা মেশিনারিজ বিক্রি করে শ্রমিকদের বেতন দিচ্ছেন। বেতন-বোনাসের বাইরে কেউ থাকবে না।

পাঠকের মতামত

Comments are closed.