মেয়ে সন্তান কালো হয়েছে বলে আছড়ে মারলো পিতা!
ডেস্ক রিপোর্ট : ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের উত্তর চব্বিশ পরগণার স্বরূপনগরের খাঁপাড়ায় গায়ের রং কালো হওয়ায় সাড়ে তিন মাসের মেয়েকে মাটিতে আছড়ে মেরে ফেলেছে এক পাষণ্ড পিতা। ২৮ সেপ্টেম্বর শনিবার এ ঘটনার এর পরপরই পালিয়ে যায় ঘাতক পিতা। সূত্র : বাংলা
নিহত শিশুটির নাম ঝিকড়া। তার মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য পাঠিয়েছে স্থানীয় পুলিশ। ঘাতক মনিরুলকে গ্রেপ্তারেও তৎপর হয়েছেন তারা।
জানা গেছে, তিন বছর আগে এবাদুল খাঁর ছেলে মনিরুল খাঁর সাথে ইসমাইল ঘরামির মেয়ে সোনিয়ার বিয়ে হয়। কয়েকমাস আগেই তাদের মেয়ে ঝিকড়া খাতুনের জন্ম হয়। একে তো সে মেয়ে। তার উপর গায়ের রং কালো। শুরু থেকেই তাকে মেনে নিতে পারছিল না মনিরুল। এ নিয়ে সোনিয়াকে প্রতিনিয়ত কটুকথা শোনাতে থাকে সে। শেষমেশ সাড়ে ৩ মাসের মেয়েকে আছড়ে মেরেই ফেললো সে।
সোনিয়ার বাবা ইসমাইল ঘরামি জানান, কলেজ থেকে ছাড়িয়ে মেয়েকে বিয়ে দেন তিনি। বিয়েতে জামাই পক্ষের চাহিদা মতো গয়না-টাকাও দেন তারা। তবুও আরো টাকা দাবি করে সোনিয়ার উপরে নির্যাতন চালাত জামাই। মেয়েসন্তান জন্ম দেয়ার পর অত্যাচারের মাত্রা আরো বেড়ে যায়।
শিশুটির মা সোনিয়া বলেন, ‘কেনো মেয়ে হলো, এজন্য আমাকেই শুধু দায়ী করত স্বামী।’
শ্বশুর-শাশুড়িও এসব ঝগড়ায় ইন্ধন যোগাতো উল্লেখ করে তিনি জানান, শনিবার এসব নিয়েই ঝগড়াঝাটি চলছিল। তাকে চড়-থাপ্পড় মারছিলো মনিরুল। এমনকি সোনিয়াকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়ারও হুমকি দিচ্ছিলো সে বলে শাসায়। কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে আচমকাই ঝিকড়াকে তুলে আছাড় মারে মাটিতে।‘শব্দটুকুও বেরোয়নি ঝিকড়ার মুখ থেকে। এর আগেই সব শেষ। মেয়েটা দুনিয়া থেকে চিরতরে বিদায় নিলো।’ বলতে বলতেই কান্নায় ভেঙে পড়েন সদ্য সন্তানহারা এই মা।
পুলিশ জানিয়েছে, এ ঘটনাটি ধামাচাপা দেয়ারও চেষ্টা করে মনিরুল। নিকটস্থ হাসপাতালে গিয়ে সে মেয়েটি কোল থেকে পড়ে গিয়ে মারা গেছে বলে জানায়। তবে ততক্ষণে আসল ঘটনা চতুর্দিকে ছড়িয়ে পড়ে।
গ্রামবাসীর দেয়া সংবাদে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। কিন্তু তাদের যাওয়ার আগেই শিশুর মরদেহটি ফেলে পালায় ঘাতক মনিরুল। সেই সঙ্গে তার বাবা-মাও পালিয়েছে।