275264

মিরাজ-আফিফের অবিশ্বাস্য জুটিতে দুর্দান্ত জয়

চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচে আফগানিস্তানকে ৪ উইকেটে হারিয়েছে বাংলাদেশ।  আফগানিস্তানের দেওয়া ২১৬ রানের জবাবে ৬ উইকেট হারিয়ে ২১৯ রান করে বাংলাদেশ। ৭ বল হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় টাইগাররা।

ম্যাচটিতে মাত্র ৪৬ রানে ৬টি উইকেটের পতন হলেও মেহেদি হাসান মিরাজ ও আফিফ হোসেনের দুর্দান্ত পার্টনারশিপে বাংলাদেশ শেষ পর্যন্ত জয় নিয়ে মাঠ ছাড়তে সমর্থ হয়েছে।  তারা দুইজন মিলে ১৭৪ রানের পার্টনারশিপ গড়ে তোলেন। 

মেহেদি হাসান মিরাজ ১২০ বল খেলে ৮১ রান করেন।  অন্যদিকে আফিফ হোসেন ১১৫ বল খেলে ৯৩ রান করেন। 

ওয়ানডে ক্যারিয়ারে দুইজনেরই যা সর্বোচ্চ রানের ইনিংস। 

ম্যাচটিতে মাত্র অষ্টম ওভারে ৫ম উইকেটের পতন হয় বাংলাদেশের।  দলীয় স্কোর ২৮ রানে বিদায় নেন অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান।  সাকিব ১৫ বলে ১০ রান করতে সক্ষম হন।

এরপর ৪৬ রানের সময় ষষ্ঠ উইকেটের পতন ঘটে।  ওই সময় মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ৮ রান করে সাজঘরে ফিরেন।

 তখন মনে হচ্ছিল ম্যাচটি হেরেই যাবে টাইগাররা।  কিন্তু তখনই পার্টনারশিপ গড়ে তোলেন মেহেদি হাসান মিরাজ ও আফিফ হোসেন।

এর আগে দুই ওপেনারের পর ফিরে যান মুশফিকুর রহিম।  বাঁহাতি পেসার ফারুকির মিডল স্টাম্পে পড়ে প্রায় সোজা যাওয়া বলের লাইনে যেতে পারেননি মুশফিক।  আরেকটু বেশি সুইং আশা করা মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান এলবিডব্লিউ হওয়ার পর নেন রিভিউ। কাজ হয়নি, রিপ্লেতে দেখা গেছে বল লাগতো অফ-মিডল স্টাম্পে।

অভিষেকে কঠিন সময়ে নেমে রানের খাতাই খুলতে পারেননি ইয়াসির আলি চৌধুরী। দীর্ঘ অপেক্ষার পর নিজের প্রথম ওয়ানডে খেলতে নেমে তিনি ফারুকির বলের লাইন মিস করে বোল্ড হয়ে যান শূন্য রানে।  ছোট রানা তাড়ায় শুরুতেই বাংলাদেশের ইনিংস যেন ধ্বংসস্তুপ। 

তিন বলের ব্যবধানে আউট হয়ে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন ওপেনার তামিম ইকবাল ও লিটন দাস।

দুটি সফল রিভিউ নিয়ে তৃতীয় ওভারে দুই ওপেনারকে ফিরিয়ে দিল আফগানিস্তান।  লিটন দাস ক্যাচ আউট হওয়ার পর এলবিডব্লিউ হয়ে ফিরে গেলেন তামিম ইকবাল।

ফজল হক ফারুকির মিডল স্টাম্পে থাকা বল ডিফেন্স করতে চেয়েছিলেন ওপেনার লিটন।  ঠিকমতো পারেননি ডানহাতি এ ওপেনার। ব্যাটের কানা ছুঁয়ে জমা পড়ে কিপারের গ্লাভসে।

এক বল পর পা বাড়িয়ে খেলতে যান তামিম।  ব্যাট-বলে করতে পারেননি বাঁহাতি এ ওপেনার।  আবার রিভিউ নেন আফগান অধিনায়ক হাশমতউল্লাহ শাহিদি।   দুই চারে ৮ বলে ৮ রান করে বিদায় নিতে হয় তামিম।

এর আগে ৫৬ রানে ২ উইকেট হারিয়ে ফেলা আফগানিস্তানের রানের চাকা সচল রাখার কাজ চালিয়ে যাচ্ছিলেন রহমত শাহ। কিন্তু তিনে নামা এই ব্যাটার ৬৯ বল খেলে ৩৪ রান করে তাসকিনের বলে আউট হন।

আফগান শিবিরে চতুর্থ ধাক্কা দেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।  আফগান ওপেনারন হাশমতুল্লাহ শহীদির উইকেট তুলে নেন তিনি। হাশমতুল্লাহ ৪৩ বলে করেছেন ২৮ রান করে।  এরপর নবি ও নজিবুল্লাহ মিলে গড়েন ৬৩ বলে ৬৩ রানের জুটি।  ৩৯তম ওভারে নবিকে ২০ রানে বিদায় করে জুটি ভাঙেন তাসকিন।

নবি গেলেও বাংলাদেশের পথের কাঁটা হয়ে ছিলেন নজিবুল্লাহ।  মাটি কামড়ে পড়ে থেকে ফিফটিও তুলে নেন এই আফগান ব্যাটার।  তবে অন্যপ্রান্তে ছিল আসা-যাওয়ার মিছিল।  এর মধ্যে সাকিবের এক ওভারে পড়ে ২ উইকেট।  ইনিংসের ৪৫তম ও সাকিবের নবম ওভারের তৃতীয় বলে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়েন গুলবাদিন নাইব (১৭)।  ওভারের শেষ বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন রশিদ খান (০)।  

৪৬তম ওভারে মোস্তাফিজের বলে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফেরেন মুজিব উর রহমান (০)।  ৪৯তম ওভারে বোলিংয়ে এসে চতুর্থ বলে জাদরানকে বিদায় করেন শরিফুল।  জাদরান ৮৪ বলে ৬৭ রান করেন।  শেষ ওভারে ফের মোস্তাফিজের আঘাত। এবার ইয়ামিন আহমাদজাইকে (৫) লং অনে রিয়াদের ক্যাচে পরিণত করে আফগানদের অলআউট করে দেন ফিজ।

বল হাতে ৩টি উইকেট নিয়েছেন মোস্তাফিজ। ২টি করে উইকেট গেছে শরিফুল, তাসকিন ও সাকিবের দখলে। বাকি মাহমুদউল্লাহর।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

আফগানিস্তান: ৪৯.১ ওভারে ২১৫ (গুরবাজ ৭, ইব্রাহিম ১৯, রহমত ৩৪, শাহিদি ২৮, নাজিবউল্লাহ , নবি ১৭, রশিদ ০, মুজিব ০, ইয়ামিন ৫, ফারুকি ০*; মোস্তাফিজ ৯.১-০-৩৫-৩, তাসকিন ১০-০-৫৫-২, সাকিব ৯-১-৫০-২, শরিফুল ১০-১-৩৮-২, মিরাজ ১০-৩-২৮-০, মাহমুদউল্লাহ ১-০-৪-১)

বাংলাদেশ: ৪৮.৫ ওভারে ২১৯/৬ (তামিম ৮, লিটন ১, সাকিব ১০, মুশফিকুর ৩, ইয়াসির আলি ০, মাহমুদউল্লাহ ৮, আফিফ ৯৩, মিরাজ ৮১; ফজলহক ফারুকি ১০-১-৫৪-৪, মুজিব উর রহমান ১০-০-৩২-১, রশিদ খান ১০-১-৩-১)

 

 

পাঠকের মতামত

Comments are closed.